বিদেশ

আমেরিকা, ইরান ও বিশ্বকূটনীতি


রঘুনাথ ভট্টাচার্য, চিন্তন নিউজ, ১৯ জুন: গত ১৩ই জুন, ২০১৯, পশ্চিম এশিয়ায় হরমুজা প্রণালীতে দুটি তৈলবাহী জাহাজের অগ্নিকাণ্ডের দায় ইরান অস্বীকার করেছে। মে মাসের পরে জুনের এই ঘটনা আমেরিকা ও ইরানের সম্পর্কের তিক্ততা বাড়িয়ে দিল। গত বৎসর মে মাসে আমেরিকা ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে সরে আসে। ফলে ইরানের উপর নিষেধাজ্ঞা (sanction) উঠে যায়। নতুন সমস্যার ফলে তা আবার বলবৎ করলো আমেরিকা। ফলে, সারা বিশ্বের দেশগুলো ইরানের তেল কেনা থেকে বিরত থাকবে, অন্যথায় তাদের উপরও আমেরিকার নিষেধাজ্ঞা জারি হবে।

আইনসভার রিপাবলিকান সদস্যরা সামরিক বাহিনীর হস্তক্ষেপের দাবি তুলেছিলেন, কিন্তু টাইম ম্যাগাজিনের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেন যে, ব্যাপারটা এত গর্হিত নয় যে সামরিক পদক্ষেপ নিতে হবে।

ইরান এক বিবৃতিতে বলে যে, ২০১৫ এর পরমাণু চুক্তিতে শোধিত ইউরেনিয়াম মজুদ করার ইরানের জন্য নির্দিষ্ট সীমা শীঘ্রই ইরানকে লঙ্ঘন করতে হবে তার নিজের প্রতিরক্ষার স্বার্থে। কিন্তু তার ফলে ঐ চুক্তির অন্যান্য স্বাক্ষরকারী দেশ, যেমন চীন, রাশিয়া ও ইউরোপীয় শক্তিবর্গ ইরানের প্রতিবন্ধকতা করতে পারে।

সারা বিশ্ব এই অবস্থায় সন্ত্রস্ত। রাশিয়া আমেরিকাকে কোনো সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে অনুরোধ করেছে। রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী সার্জেই রেভকভ তাঁর দেশের সংবাদ মাধ্যমকে জানান যে, ‘আমেরিকা ক্রমাগত চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যাতে ইরানকে যুদ্ধে প্ররোচিত করতে পারে। সেই উদ্দেশ্যে সে রাজনৈতিক, মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক এবং অবশ্যই সামরিক চাপ বাড়িয়ে যাচ্ছে ইরানের উপর।” আমেরিকার এই সক্রিয়তা পৃথিবীতে যুদ্ধের আবহজনিত অশান্তি নামিয়ে আনছে।

এতদসত্বেও আমেরিকার ভারপ্রাপ্ত প্রতিরক্ষা সচিব, প্যাট্রিক শানাহান সোমবার জানিয়েছেন, গতমাসের ১৫০০এর অতিরিক্ত আরও ১০০০ সৈন্য পশ্চিম এশিয়ায় পাঠান হবে ইরানের হুমকির মোকাবিলায়।

ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, ”ইরান কখনোই যুদ্ধ চায় না। বিশ্বের অন্যান্য শক্তি গুলির থেকে ইরানকে ছিন্ন করার জন্য আমেরিকার সব প্রচেষ্টাই এ যাবৎ ব্যর্থ হয়েছে।”

সব দিক থেকেই আমেরিকার উস্কানিতে পশ্চিম এশিয়ায় পরিস্থিতি ক্রমশঃ ঘোরালো হয়ে উঠছে যা বিশ্ব-শান্তির পক্ষে অত্যন্ত বিপজ্জনক।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।