বিদেশ রাজনৈতিক

আবার অশান্ত বলিভিয়া


রঘুনাথ ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ: ১২ই নভেম্বর:২০শে অক্টোবর ,২০১৯ বামপন্থী ইভো মোরালেস পুনরায় নির্বাচিত হন রাষ্ট্রপতি হিসাবে বলিভিয়ায়। তিন সপ্তাহ না যেতেই তাঁকে পদত্যাগ করতে হল দক্ষিণ পন্থী প্রতিক্রিয়াশীল কার্লোস মেসা, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর একাংশের ষড়যন্ত্রে। পদত্যাগ করে মোরালেস বলেন এটা বিদেশি শক্তির সমর্থনে একটি ক্যুপ। মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, নিকারাগুয়া,কিউবা, ভেনেজুয়েলার মত দেশ মোরালেসের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে।

দক্ষিণপন্থী দল পরাজিত প্রার্থী মেসার কথা সমর্থন ক’রে দাবী করে যে ইভো নির্বাচন জিততে দুর্নীতির আশ্রয় নেয় এবং এই ছলনায় তারা বোঝাবার চেষ্টা করছে
মোরালেসের বিরুদ্ধে এটা জনগণের স্বাভাবিক বিক্ষোভ। তাঁরা রাস্তায় নেমে আসে। পুলিশ বা সেনাবাহিনীর কোনো রকম প্রতিরোধ সম্পূর্ণ অনুপস্থিত ছিল। মোরালেসের ভবন ধ্বংস করা হয়। মোরালেস ও তার বোন ২০০ মাইল দূরে
তাঁদের গ্রামের বাড়িতে আশ্রয় নেন।কিন্তু, এই ক্যুপ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মহলের মতে এটা একটা নিহিত স্বার্থ সংক্রান্ত চক্রান্ত। সংবাদ সংস্থা জানাচ্ছে যে, ২০১৮র ডিসেম্বরে জার্মানির একটি বহুজাতিক কোম্পানির সাথেএক চুক্তি বাতিল করে দেয় মোরালেস সরকার। মোরালেস বলেন যে, ‘ লিথিয়াম বলিভিয়ার জনগণের সম্পদ, তা এখন বলিভিয়ায় শিল্প উন্ননয়নে ব্যবহৃত হবে। দেশের লোকের কর্মসংস্থান অগ্রাধিকার পেতে হবে।

তিনি আরও বলেন , কোনোমতেই দেশের অমূল্য সম্পদ বহুজাতিক বিদেশি কর্পোরেট দের হাতে তুলে দেওয়া যায় না।এর ফলে আমেরিকা সহ বিভিন্ন দেশের পূঁজিপতি শিল্প ও ব্যবসার মালিকদের স্বার্থে প্রবল আঘাত লাগে। কারণ, সারা বিশ্বের লিথিয়াম (যা ব্যাটারি,কার ব্যাটারি, ইত্যাদি তৈরীর জন্য ব্যবহৃত হয়) উৎপাদনের ৭০% বলিভিয়ায় পাওয়া যায়। সেই কারণেই মোরালেসের বিরুদ্ধে নিহিত স্বার্থের প্ররোচনায় এই অভ্যূত্থান।

রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব নিতে চলেছেন সেনেটের সহ সভাপতি মোরালেস বিরোধী স্যোস্যাল ডেমোক্র্যাট দলের নেত্রী জিয়ানিন আ্যনেজ স্যাভেজ। তিনি বলেন নূতন ক’রে নির্বাচন করার জন্যই তিনি এই দায়িত্ব নিতে চলেছেন।

আশা করা যায় , বিগত ১৪ বছর রাষ্ট্রপতি থাকাকালীন মোরালেস যেসব জনহিতকর কাজ করেছেন,যেমন, দারিদ্র্য
দূরীকরনে প্রকল্প, স্বনির্ভর শিল্পনীতি, কর্মসংস্থান প্রকল্প, ইত্যাদি, সেগুলো তাঁকে পুনর্নির্বাচিত হতে সাহায্য করবে।ভারতের সিপিএম পার্টির পলিটব্যুরো মোরালেসের সমর্থনে বক্তব্য রেখে বলেছে যে, বাস্তবিক ভাবেই নির্বাচিত রাষ্ট্রপতির অপসারণের জন্য স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর এই অভ্যূত্থান।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।