শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

করোনার বিষয় আশয়- পর্ব ছয়


রঘুনাথ ভট্টাচার্য: চিন্তন নিউজ:১৭ই মে:- নানা মাধ‍্যমের সংবাদে ইতিমধ‍্যে জানা গেছে যে পৃথিবীর অন্ততঃ ১০০ টি ল‍্যাবে এই মারণ রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক ওষুধ আবিষ্কারের জন্য স্বনামখ্যাত বৈজ্ঞানিকরা দিবারাত্র সাধনায় মগ্ন।ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা বেশ এগিয়ে গেছেন। বাঁদরের ওপর তাদের আবিস্কৃত ওষুধ প্রয়োগে​ তাঁরা পর্যবেক্ষণ করে সাফল‍্য সম্পর্কে উৎসাহিত।

কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র ‘ গ্রানমা ‘ জানাচ্ছে,সে দেশে ১১ই মার্চে করোনার প্রথম প্রকাশ থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায়  ‘ রিকমবিনান্ট অফ্ হিউম‍্যান ইন্টারফেরন  আলফা ২বি ‘ প্রয়োগ করে অত‍্যন্ত আশাব‍্যঞ্জক ফল পাওয়া গেছে। একথা বলেছে কিউবার জনস্বাস্থ্য দপ্তরের (মিনসাপের) প্রতিবেদনে। এই আবিস্কারের বিস্তৃত বিবরণ রেখেছেন কিউবার
কেন্দ্রীয় সংস্থা ‘ বায়োকিউবা ফার্মা এন্টারপ্রাইজের অন্তর্ভুক্ত ‘সেন্টার ফর জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড বায়োটেকনোলজি’ (সিআইজিবি) – এর ডিরেক্টর ডঃ ইউলোজিও পিমেন্টাল।

ডঃ ইউলোজিও পিমেন্টাল আরও বলেন যে, কিউবার সামাজিক আবহের সঙ্গে সমতা রেখে , সমাজতান্ত্রিক চিন্তায় স্বাস্থ‍্যে জনগনের প্রয়োজনকে সম‍্যক অগ্রাধিকার দিয়ে যে কোন ওষুধই মিনেসাপ তৈরী করুক জনগনের প্রয়োজন সর্বপ্রথম অধিকার পায় ও সহজে​ উপলব্ধ হয়। এই ওষুধের ক্ষেত্রেও তার অন‍্যথা হয়নি। তাই, কোভিড ১৯ এর জন‍্য এই ওষুধটি , অর্থাৎ যাকে সংক্ষেপে নাম দেওয়া হয়েছে’ হেবেরন ‘(Heberon), সেটিই প্রয়োগ করা হবে – এই সিদ্ধান্ত হবার সঙ্গে সঙ্গে ওষুধটি সংশ্লিষ্ট সকলের কাছেই উপলব্ধ ছিল। এ ওষুধটির কার্যকারিতা সম্পর্কে পরীক্ষিত ইতিবাচক তথ‍্যের উপর ভিত্তি করেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

১৪ ই এপ্রিল যে তথ‍্য প্রকাশ করা হয়েছে, তাতে দেখা যায় সার্স-কোভিড-২ আক্রান্ত রোগীদের ৯৩.৪%কে হেবেরন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়েছে। ৫.৫% রোগীর অবস্থা ক্রমশঃ বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। কিন্তু ২.৭% মৃত‍্যুহার এই ওষুধের ব‍্যবহারের পর কমে ০.৯% এ পৌঁছে। উল্লেখযোগ্য, এই একই সময়ে আন্তর্জাতিক স্তরে গুরুতর অবস্থায় ছিল ১৫ থেকে ২০%। মৃত‍্যুর হার ছিল ৬%।

অন‍্য দেশেও এই ওষুধের সাফল‍্যের তথ‍্য পাওয়া গেছে। সালে একটি প্রবন্ধে জানা যায় যে, চীনের উহানে চিকিৎসা কর্মী ও চিকিৎসকদের মধ‍্যে এই ওষুধটি প্রয়োগ করে দেখা গেছে যে, ২৯৪৪ জন যারা ওষুধ নিয়েছে তাদের একজনো আক্রান্ত হয় নি। অথচ, ৩৩৮৭ জন যারা ওষুধ নেয়নি তাদের অন্যূন ৫০ শতাংশ পরবর্তীতে আক্রান্ত হয়েছে।

ইতিমধ্যে বিশ্বের অন্ততঃ ৮০ টি দেশ এই ওষুধের আস্থা প্রকাশ করে এই অতিমারী নিয়ন্ত্রনের উদ্দেশ্যে এই ওষুধের জন‍্য তাদের চাহিদা জানিয়েছে। সমাজতান্ত্রিক কিউবার এই পদক্ষেপের সাফল‍্যের দিকে সবাই তাকিয়ে আছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।