রণদীপ মিত্র: চিন্তন নিউজ:২০শে জানুয়ারি:২০২১:— অর্থনীতি বিভাগের সোমনাথ সৌ,ফাল্গনী পান, এরপর সঙ্গীত ভবনের ছাত্রী রূপা চক্রবর্তীকে সাসপেন্ড করা হ’ল। উপাচার্যর কোপে এবার এই ছাত্রীও। অপরাধ সেই প্রতিবাদ। উপাচার্যর স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে পথে নামায় রূপা চক্রবর্তী নামে স্নাতকোত্তর স্তরের ওই ছাত্রী তথা বিশ্বভারতীর এসএফআই কর্মীকে।
রূপা চক্রবর্তী’র সাসপেনশনের নির্দেশ এদিন প্রকাশ্যে এনেছে বিশ্বভারতী। যদিও সেই নির্দেশে তারিখ উল্লেখ রয়েছে ১৪ জানুয়ারির। যেদিন বাকি দুই ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছিল। এদিন ছাত্রীর বাড়িতে বিশ্বভারতীর তরফে সাসপেনশনের নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। বিশ্বভারতীর উপাচার্যের গা জোয়ারীর বিরুদ্ধে প্রথম থেকেই সরব ছিলেন এই পড়ুয়াও। ফি বৃদ্ধি থেকে শুরু করে হস্টেল থেকে পড়ুয়া তাড়ানো, বাইক বাহিনী দিয়ে ওষুধ দেওয়ার নিদান থেকে বিজেপি সাংসদ স্বপন দাশগুপ্তকে দিয়ে সিএএ’র স্বপক্ষে ভাষণ দেওয়ানোর বিরোধীতায় আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন এসএফআই করা ছাত্রী রূপা চক্রবর্তী ।
সর্বশেষ, অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের সাসপেন্ডও মেনে নিতে পারেন নি পড়ুয়ারা। অর্থনীতি বিভাগের এই অধ্যাপকের ডিপার্টমেন্টের ‘সিল’ করে দেওয়া ঘর খোলার জন্য বিক্ষোভ দেখান পড়ুয়ারা। গত ৯জানুয়ারি মমতা ব্যানার্জীর কেড়ে নেওয়া শান্তিনিকেতনের অভ্যন্তরের রাস্তা ফেরত পেতে ছাতিমতলায় মৌন অবস্থানে বসেছিলেন উপাচার্য। অবস্থানে বসার আগে আবার মমতা ব্যানার্জীকে চিঠি পাঠিয়ে রাস্তা ফেরতের আর্জিও জানিয়েছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। সেই মৌন অবস্থানের সময় ছাতিমতলার বাইরে চরম ধিক্কার ব্যক্ত করেন পড়ুয়ারা। তাতে সামিল ছিলেন রূপা। তাই এবার টার্গেট সে। প্রোক্টরের জারি করা নির্দেশে অপর দুই ছাত্রের মত এই ছাত্রীর ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ আনা হয়েছে।
সাসপেনশন লেটারে উল্লেখ করা হয়েছে, গত ৯ তারিখ বিশ্বভারতীর অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক সুদীপ্ত ভট্টাচার্যের ঘরটির সিল খুলে দেওয়া হয়। এই কাজে যুক্ত থাকার কারণে তাদের সাসপেন্ড করা হয়েছে। কারন ঐ সিল খোলার ফলে ব্যাহত হচ্ছে তদন্তের কাজ। এছাড়াও অভিযোগ করা হয়েছে, ঐ সিল খোলার ফলে কর্তৃপক্ষের নির্দেশ অমান্য করা হয়েছে। এছাড়াও ঐ সিল ভাঙ্গার মাধ্যমে জনগণের সম্মতি নষ্ট করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য এই একই অভিযোগে আগে দুই ছাত্রকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। নির্দেশে পরিস্কার বলা হয়েছে, তদন্ত শেষ হওয়া বা তিনমাস যেটা আগে সম্পুর্ন হবে তার আগে বিভাগ, ভবন, ল্যাবোরেটরী, গ্রন্থাগারে বরখাস্ত ছাত্ররা প্রয়োজনীয় অনুমতি ছাড়া প্রবেশ করতে পারবে না।
রবি ঠাকুরের বিশ্বভারতী কি আজ অচলায়তনে পরিণত হয়েছে? যেখানে অন্যায়ের প্রতিবাদ করা গর্হিত অপরাধ! প্রশ্ন উঠছে শিক্ষামহলে।