চৈতালি নন্দী: বিশেষ প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:১৭/০৯/২০২২:— ভারতের হরিয়ানার রাখিগড়ি গ্রামে গড়ে উঠছে প্রাচীন সিন্ধু সভ্যতার তথ্যসমৃদ্ধ সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালাটি। দিল্লি থেকে যার দূরত্ব মাত্র ১৫০কিমি। সিন্ধু সভ্যতার সময় থেকেই এই গ্রামটি এক বিশেষ ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহন করে আসছে।
সিন্ধু সভ্যতা প্রথম পাঞ্জাব অঞ্চলে বিকাশ লাভ করলেও পরে তা ছড়িয়ে পরে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। ভারতের হরপ্পা সভ্যতার নিদর্শন গুলির মধ্যে রাখিগড়ি সবচেয়ে বিস্তৃত। ১৯৬৩ সালে প্রথম খননের সময়ই বোঝা যায় যে রাখিগড়ি নগর অত্যন্ত পরিকল্পনা মাফিক তৈরি হয়েছিল। এখানকার সড়কপথের নকশা, নিকাশি ব্যাবস্থা অবাক করেছিল প্রত্নতত্ত্ববিদদের। এখানে মিলেছে পোড়ামাটির মূর্তি, ব্রোঞ্জের খেলনা, মাটির পাত্রসহ আরও বহু সামগ্রী। এই সভ্যতা প্রস্তর যুগে বিকাশ লাভ করলেও সিন্ধু সভ্যতা মূলত ব্রোঞ্জযুগীয় সভ্যতা। খ্রিষ্টপূর্ব ২৬০০ অব্দ থেকে ১৯০০ অব্দ পর্যন্ত সিন্ধু উপত্যকার ঐ গ্রামে জনবসতির অস্তিত্ব ছিল। সভ্যতার প্রথমপর্বে বিভিন্ন জনবসতি গড়ে উঠতো নদীকে কেন্দ্র করে। ঐতিহাসিকদের কাছে এই গ্রামটির বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ সংগ্রহশালাটি গড়ে তুলতে দ্রুত খননকাজ চালাচ্ছে আর্কিওলজিকাল সার্ভে অব ইন্ডিয়া। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মনোহরলাল খট্টরের তত্ত্বাবধানে কাজ এগিয়ে চলেছে। খননকাজ এখনো প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে, এগিয়েছে মাত্র ৫% কাজ। এর মধ্যেই সংগ্রহ করা হয়েছে বিভিন্ন প্রত্নসামগ্রী। ইতিমধ্যেই যে প্রত্নসামগ্রী হাতে এসেছে তার মধ্যে রয়েছে ১৫৬ টি নরকঙ্কাল, যা ৭০০০বছরের ও বেশি পুরোনো বলে অনুমান করা হচ্ছে। এর মধ্যে দুটি মহিলার । ঐ নারী কঙ্কালের শরীরে রয়েছে তামা ও মূল্যবান পাথরের গহনা। এইসব প্রত্নসামগ্রী ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মেকে নতুন দিশা দেখাবে এবং মানবসভ্যতার বিকাশের চর্চায় নতুন আলোকপাত করবে।