বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

কোভিড/১৯ বনাম বিশ্ব খাদ্য সংস্থা


কাকলি চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:২৩শে এপ্রিল:- শ্রমজীবী মানুষ সৃষ্টির প্রতীক। সৃষ্টি কোনোদিন থেমে থাকে না। এ বিশ্বের যা কিছু মানুষের ব্যবহার উপযোগী তার সঙ্গে যুক্ত শ্রমশক্তি। শ্রমিকের ঘাম , রক্ত ঝরানো শ্রমে পুঁজির পাহাড় তৈরী করে উদারনৈতিক বাজারি অর্থনীতির প্রভুরা। পুঁজির অবাধ বিচরণ। সে কোনো নির্দিষ্ট দেশের পরিসরে আটকে থাকে না। বিশ্বব্যাপী তার করাল থাবা গ্ৰাস করে শ্রমিকের শ্রমশক্তিকে, কাজে লাগায় অধিকতর মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে।

কালের অমোঘ বিচারে প্রকৃতির রুদ্র রোষ গ্ৰাস করেছে এ বিশ্ব চরাচর কোভিড১৯ এর হাত ধরে। উদার অর্থনৈতিক যুগে পুঁজিবাদের দ্রুততম গতিতে স্থায়ী শ্রমিক শব্দটিই আজ বিলুপ্তপ্রায়, সবাই অস্থায়ী। কোভিড১৯ শ্রমিকের জীবনে নামিয়ে এনেছে ভয়াবহ বিপর্যয়। শ্রম বিক্রি করে প্রতিদিনের গ্ৰাসাচ্ছদন বন্ধ লকডাউনের কারণে। আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকারেরই উচিত তাদের ব্যয়ভার বহন করা।
রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এক ভয়ংকর বার্তা দিয়েছে, খাদ্যে নিরাপত্তাহীনতা যে হারে বাড়ছে তাতে পরিষ্কার খাদ্যসংকটের মুখোমুখি হওয়া মানুষের সংখ্যা দ্বিগুণ হতে চলেছে। ২০১৯ এ যা ছিল ১৩ কোটি তা বেড়ে হবে প্রায় ২৬ কোটি।

বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে আমার দেশ ভারতবর্ষ বিশ্বের ১১৭ টি দেশের মধ্যে ১০২ নম্বরে অবস্থান করছে, ক্ষুধার মাত্রায় গুরুতর ভয়াবহ জায়গায় স্বাধীনতার ৭৩ বছর পরেও। চাইল্ড ওয়েস্টিং ও সবচেয়ে বেশি ভারতে। এক্ষেত্রে প্রথম স্থানে উঠে এসেছে মোদির নিজের রাজ্য গুজরাট। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপুল জনসংখ্যার কারণে দেশের অর্থনীতিতে গভীর প্রভাব ফেলবে কোভিড১৯। জিডিপি বৃদ্ধির হার এমনিতেই নিম্নগামী এখন তো প্রায় অচলাবস্থা। ছাঁটাই শুরু হয়েছে বিভিন্ন সেক্টরে, ভবিষ্যতে আরও বাড়বে। এফ সি আই গোডাউনে মজুত ৫ কোটি ৪২ লক্ষ মেট্রিক টন খাদ্যশস্য রেশনের মাধ্যমে গরীব মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দাবি ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে বিভিন্ন বাম দলগুলোর মধ্যে থেকে‌। মোদি যতই বলুন না কেন করোনা সঙ্কটের পর এক স্বাস্থ্যকর, সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে, নতুন দিগন্ত খুলে যাবে কর্মজগতের, তৈরি হবে নতুন সংস্কৃতি; বাস্তব কিন্তু অন্য কথাই বলবে। বিদেশি কালো টাকা উদ্ধারের আন্তরিক প্রয়াস, কর্পোরেট ঋণ পুনরুদ্ধার এবং নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদ, জনসম্পদ, দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে নীতির অভিমুখ পরিবর্তন করে সঠিক পরিকল্পনা রূপায়ণ ই পারে আগামী দিনে ভঙ্গুর অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।