নিউজডেস্ক, চিন্তন নিউজ, ৯ সেপ্টেম্বর: ইসরোর বিজ্ঞানীরা দিন-রাত এক করে চন্দ্রযান-২ এর প্রকল্পের সফলতা সুনিশ্চিত করলেন, গোটা দেশ যখন ইসরোকে নিয়ে গর্বিত, ঠিক তার কিছুদিন আগেই কেন্দ্রের এনডিএ-২ সরকার এক ধাক্কায় ইসরোর বিজ্ঞানীদের বেতন ১০০০০ টাকা কমিয়ে দিলেন। ইসরোর বিজ্ঞানীরা সরকারের এই সিদ্ধান্তে হতবাক। এই বেতনক্রম কার্যকরী হয়েছে ১লা জুলাই ২০১৯ থেকে।
মোদী সরকারের এহেন সিদ্ধান্তে ইসরো-র বিজ্ঞানীরা ক্ষুব্ধ। ইসরো-র বিজ্ঞানীদের সংগঠন স্পেস ইঞ্জিনিয়ারর্স অ্যাসোসিয়েশন ঐ সংস্থার চেয়ারম্যান কে শিবনকে একটি চিঠি দিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাঁরা আরও বলেছেন সরকারি সিদ্ধান্ত অবিলম্বে পাল্টাতে হবে। বিজ্ঞানীরা সংস্থার চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন জানান যে, তিনি যেন সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন।
ভারতীয় বিজ্ঞানীদের কর্মকুশলতা, তাঁদের চেষ্টা নিয়ে যখন গোটা দেশ গর্বিত, এমনকি বিশ্বেও সাড়া ফেলে দিয়েছে ভারতীয় বিজ্ঞানীদের প্রযুক্তি, তখন তাঁদের প্রতি সরকারের বঞ্চনার কথা দেশের মানুষ মেনে নিতে পারছেন না।
চন্দ্রযান-২ এর শেষ মুহূর্তে সফল না হওয়ায় ইসরো-র চেয়ারম্যান কে শিবনের পিঠে হাত দিয়ে সান্ত্বনা দিতে দেখা গেছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। এই ছবি ভাইরালও হয়েছে। তারমধ্যে গোপনে ইসরো-র বিজ্ঞানীদের এক ধাক্কায় বেতন কমিয়ে দেওয়ার সরকারি সিদ্ধান্তের কথা জানাজানি হওয়ায় মানুষের মনে ক্ষোভ সঞ্চয় হয়েছে।
সূত্রের খবর ২২শে জুলাই ২০১৯এ চন্দ্রযান-২ এর সফল উৎক্ষেপণের আগেই ১২ই জুন ২০১৯ কেন্দ্র সরকার ইসরো-র বিজ্ঞানীদের বেতন কমানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। চন্দ্রযান-২ এর অভিযান সফল করার লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেননি বিজ্ঞানীরা।
প্রসঙ্গত মহাকাশ বিজ্ঞানীদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে এবং নতুন নতুন মেধাকে আকর্ষিত করার লক্ষ্যে ১৯৯৬ সালে ইসরো-র বিজ্ঞানীদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়। মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের রায়েও নির্ধারিত হয় এই উচ্চ বেতনক্রম। সুপ্রীম কোর্টের রায়ে বলা হয়-এই বর্ধিত বেতন বিজ্ঞানীদের ভাতা হিসাবে ধরা হবে না, মাসিক বেতন হিসাবেই নির্ধারিত হবে। সেই মতো তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইসরো-য় দু’বার বেতন বৃদ্ধির অনুমোদন দেন। বর্তমান মোদী সরকার তা নস্যাৎ করে বেনজির সিদ্ধান্তে বিজ্ঞানীদের বেতন কমিয়ে দেন।
এতদিন দেশের সাফল্যের স্বার্থে চুপ থাকলেও এখন বিজ্ঞানীদের ক্ষোভ ফেটে পড়ছে। স্পেস ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোশিয়েশনের প্রধান মণিরামনের সংস্থার চেয়ারম্যানকে দেওয়া চিঠিতে তা উল্লিখিত। চিঠিতে তিনি বলেছেন, “বেতন ছাড়া বিজ্ঞানীদের উপার্জনের অন্য পথ নেই। এই বেতন বিজ্ঞানীদের হতাশ করবে। এতে কাজে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশি। তাই অবিলম্বে সরকারের এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বলুন।” সরকারের এই সিদ্ধান্তে বিজ্ঞানীরা সহ সারা দেশের মানুষ বিস্মিত।