কলমের খোঁচা

নারী শহীদ দিবস



কাকলি চ্যাটার্জি:-চিন্তন নিউজ:-২৭শে এপ্রিল:-ভারতের কমিউনিস্ট নেতাদের মুক্তি ও তাদের তৃতীয়শ্রেণির বন্দি থেকে রাজবন্দীর মর্যাদার দাবিতে ১৯৪৯ সালের ২৭ এ এপ্রিল কলকাতায় ভারতসভা হলে মায়েদের সমিতি ও মহিলা আত্মরক্ষা সমিতি যৌথভাবে এক সভার আয়োজন করে। সভাশেষে ১৪৪ ধারা অমান্য করে এক প্রতিবাদ মিছিল বের হয়। মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন লতিকা সেন, প্রতিভা গাঙ্গুলি, অমিয়া দত্ত, গীতা সরকার প্রমুখ নেত্রীবৃন্দ। মিছিল বৌবাজার স্ট্রীট এ আসতেই শুরু হয় পুলিশের গুলিবর্ষণ। মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ঐ চার বীরাঙ্গনা এবং এক যুবক বিমান ব্যানার্জি।
বিধান রায়ের পুলিশের গুলিতে রক্তাক্ত রাজপথ, জখম হন অনেকে, কাঁদানে গ্যাসে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় মিছিল। গ্ৰাম ও শহর থেকে আসা মহিলাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন স্থানীয় দোকানের মালিক ও কর্মচারীরা। পি আর সির কর্মী ও চিকিৎসকরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন।
এরপর “রাজবন্দীদের মায়েদের কমিটি” গঠিত হয় উমা সেনকে সম্পাদিকা ও বিমলা দেকে সভানেত্রী করে। এরপর ১৯৫০ সালের ২৭ এ এপ্রিল লতিকা-প্রতিভা-অমিয়া- গীতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নারী শহীদ দিবস হিসাবে পালন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

১৯৬৯ সালের ১১ ই জুলাই যুক্তফ্রন্ট সরকারের সময়কালে কলকাতা পৌরসভার অধিবেশনে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুসারে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রীট ও কলেজ স্ট্রীটের সংযোগস্থলে একটি শহীদস্তম্ভ নির্মিত হয়।

পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে শাসকদলের গুন্ডা ও পুলিশের হাতে মহিলাদের ওপর অত্যাচার, শ্লীলতাহানি, খুনের ঘটনা ঘটে চলেছে ধারাবাহিকভাবে। শিশু ও বৃদ্ধারাও আজ নিরাপদ নয়। আজ আরও বেশি করে মহিলা সমিতির পতাকা তলে একত্রিত হতে হবে শোষিত, লাঞ্ছিত, নিপীড়িত মহিলাদের। ঐ বীরাঙ্গনাদের লড়াই থেকে রসদ খুঁজে নিয়ে মহিলা আন্দোলনকে দুর্বার গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার শপথ গ্ৰহণের দিন আজ। ঐক্যবদ্ধ লড়াই পারে অধিকার ছিনিয়ে জয়ের পথ সুগম করতে। ২৭ এ এপ্রিল চিরজাগরুক থাকুক আমাদের হৃদয়ে, আমাদের চেতনায়, আমাদের বিশ্বাসে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।