দেশ রাজ্য

এনপিআর, সিএএ নিয়ে একের পর এক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী।


সূপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:২১শে জানুয়ারি:–বিভ্রান্তিকর কথাএকের পর এক বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি।।। সাংবাদিকরা এসময়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জানতে চান মমতা ব্যানার্জির কাছে আর তাতে তিনি বলেন “”আমরা সংশোধিত নাগরিক আইন প্রত্যাহার চেয়ে প্রস্তাব আনবো”” তারপর তিনি পৌঁছলেন শিলিগুড়ি ব্যাস বেমালুম ভুলে গেলেন কিছুক্ষণ বলা আগের কথা।।

প্রথম এনপিআর বিরোধী বিল পেশ করেন কেরালার সিপিআইএম মুখ্যমন্ত্রী ।

এমন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে কোন কথাই বললেন না ।উল্টে এনপি আরকে এককথায় সমর্থন করে বললেন “””এনপি আর থেকে আগে বাদ দিতে হবে বাবা মাএর জন্মের তারিখ তারপর দেখা যাবে”””_ সুজন চক্রবর্তী এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বললেন “””মমতা ব্যানার্জি সকালে এক কথা বলেন আর বিকেলে আর এক কথা বলেন””।”

সুত্রের খবর অনুযায়ী গত ৯ ই জানুয়ারি বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস পরিষদীয় দল সিএএ ‘র বিরোধীতা করে বিধানসভায় বিল আনতে চেয়েছিল কিন্তু তৃনমুল পরিচালিত সরকার সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেয়।। মমতা ব্যানার্জি বলেছেন তাঁরা এন আর সির বিরোধিতা করে প্রস্তাব এনেছিলেন ।।ওই সময় ওটা বিল ছিল এখন এটা আইন।।। আরও বলেন তাঁরা এই আইনের প্রত্যাহার চেয়ে প্রস্তাব আনবেন।।এন আর সি বিরোধী যে প্রস্তাব এর কথা মমতা ব্যানার্জি বলেছেন সেটা ৬ ই সেপ্টেম্বর রাজ্য বিধানসভায় গৃহীত হয় এবং সেটি উত্থাপন করেন বামফ্রন্ট ও কংগ্রেস পরিষদীয় দল।।

কোন প্রস্তাব ৭ দিনের বেশি ফেলে রাখা যায় না ফলে উপায়ান্তর না দেখে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয় রাজ্য বিধানসভায়।। তখন ঐ প্রস্তাব এ সুজন চক্রবর্তী, আব্দুল মান্নান বাবু সাথে মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও স্বাক্ষর করেছিলেন। তখন ঐ নাগরিক সংশোধীত বিল আইনে পরিনত হয়নিলোকসভাতেও তা পেশ হয়নি।।

ঠিক এই ডামাডোলের সন্ধিক্ষণে মমতা ব্যানার্জি দিল্লি যান আর প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন পরে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন এখন আর সি নিয়ে কোন কথা হয়নি ওটা আসামের ব্যাপার বাংলার সাথে এর কোনো রকম যোগাযোগ নেই।। এরপর প্রায় আড়াই মাস ধরে এনআরপিকে জনগননা বলে লাগাতার প্রচার করানো হয় সংবাদমাধ্যমে।। এদিন শিলিগুড়িতে আরও একটি অদ্ভুত কথা মমতা ব্যানার্জি বলেন ___তিনি ভেবেছিলেন এন আর পি জনগগনা কিন্তু পরে তিনি বুঝতে পারেন যে এখানে বাবামা এর জন্মতারিখ জানতে চাওয়া হয়েছে আর তখনই নাকি তিনি এন আর পি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেন।।

বামপন্থীরা যখন পুরো এন আর পি বাতিল এর কথা বলছে তখন মমতা ব্যানার্জি বাবা মার জন্মতারিখ এর কলাম টা বাদ দেওয়ার পক্ষে স ওয়াল করছেন। এটাতে কি এটা বোঝা যাচ্ছে না যে জন্মতারিখ এর কলাম টা বাদ দিয়ে দিলে মমতা ব্যানার্জির কাছে এন‌আরপি আর অচ্ছ্যূত নয়। ডিসেম্বর এ যখন নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পাশ হয় তখন তৃণমূল কংগ্রেস এর ৮ জন সাংসদ লোকসভা যে ভোট দেন নি।।। সোজা কথায় তাঁরা এই ভোট দান পর্ব এড়িয়ে গিয়েছেন।। এরপর এই বিল আইনে পরিনত হয়েছে আর সারা দেশে এর বিরোধীতা করে আন্দোলন শুরু হয়ে যায়।।

গত ৮ ই জানুয়ারি দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট পালিত হয় এই আইনের বিরোধিতা করে।। কিন্তু এই ধর্মঘটের বিরোধিতা করে এই রাজ্যের সরকার।। কেরালা ও পাঞ্জাব এর পর এরাজ্যেও সিএএ বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার জোরালো দাবি উঠেছে।। ইতিমধ্যে ১৭ টি বামপন্থী ও তাদের সহযোগী দলের পক্ষে এই দাবি জানানো হয়েছে।। এন আর সি প্রতিবাদীরা মমতা ব্যানার্জির ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান হয়ে পড়েছে।। মোদী যেমন “গো ব্যাক”” শুনেছেন তেমন মমতা ব্যানার্জি কেও ছাত্র-ছাত্রীদের কাছ থেকে “”গো ব্যাক”” শুনতে হয়েছে।। ১১ দিন পর মমতা ব্যানার্জির মুখে সংশোধিত নাগরিক সংশোধনী আইন এর বিরুদ্ধে প্রস্তাব আনার কথা শোনা যাচ্ছে।।

এই শুনে সুজন চক্রবর্তী বলেছেন মমতা ব্যানার্জি মনে হচ্ছে ঘাবড়ে গেছেন কারন কেরালা, পাঞ্জাব তো এনেছেই অন্যান্য অনেক রাজ্য আনতে চলেছে।।। হয়ত এইসব দেখেশুনে ঘাবড়ে গিয়ে লাষ্ট বেঞ্চ থেকে হঠাৎ সজোরে সামনে লাফিয়ে পড়তে চাইছেন।।১৮০ ডিগ্রি ঘুরে তিনি এখন বলছেন আগামী দিনে এই আইনের বিপক্ষে যারা সেই সব মুখ্যমন্ত্রী দের নিয়ে কলকাতায় সভা করতে চান।।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।