দেশ

কৃত্রিম উপগ্রহ প্রেরণে অকৃত্রিম আত্মপ্রচার


চিন্তন নিউজ, কল্পনা গুপ্ত, ১৭ ই ফেব্রুয়ারি – বিজ্ঞান ও ধর্মকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ব্যবহার না করার কথা বলে গেছেন বিশ্ববরেণ্য অনেক মনীষী। তার বহু উদাহরণ ইতিহাসের পাতায় পাওয়া যায়। কারণ দুটির বাস্তব প্রয়োগের ক্ষেত্র ভিন্ন। অবশ্যই এই ভাবনা উন্নত ও প্রগতিশীল। ভারতের কেন্দ্রীয় রাজনীতি থেকে সাধারণ জনগণের মধ্যে যে সার্বজনীন,পরমতসহিষ্ণুতার সংস্কৃতি ছিলো আজকের রাজনীতিতে তা বিপন্ন। নরেন্দ্র মোদী সরকার দেশবাসীকে চমকে দিচ্ছে নতুন নতুন গিমিক দিয়ে।

আগামী ২৮ শে ফেব্রুয়ারি মহাকাশে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেলের সাহায্যে সতীশ ধাওয়ান গবেষণাকেন্দ্র থেকে এস- ডি স্যাট উপগ্রহ পাঠাচ্ছে ইসরো। এই উপগ্রহে থাকতে চলেছে ভাগবত গীতা, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি ও ২৫ হাজার জনের নাম। হিন্দুস্থান টাইমসের সূত্রে পাওয়া খবর থেকে জানা গিয়েছে সতীশ ধাওয়ানের নামে এই এস ডি স্যাট উপগ্রহটি ‘ স্পেসকিডজ ইন্ডিয়া’ নামে একটি সংস্থা ভারতীয় পড়ুয়াদের সাহায্যে তৈরি হয়েছে।

ইসরো সূত্রে খবর, বিভিন্ন দেশ নিজেদের মহাকাশযানে বাইবেল রাখে। অর্থাৎ এই পদাঙ্ক অনুসরণ করেই মোদী- গীতা রসায়নটি তৈরি হয়েছে। প্রশ্ন উঠতেই পারে এর মধ্যে দিয়ে এক ধর্মীয় জাত্যাভিমান প্রকাশের পদক্ষেপ যা অবশ্যই বাইবেল রাখার মতই অনুদার। অপরদিকে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণার অতীতের বহুকীর্তিকলাপে এহেন আত্মপ্রচারমূলক চিন্তা ভাবনার প্রকাশ কখনই ঘটেনি একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসাবে ভারতে। আর ২৫ হাজার মানুষের নামের বিষয়ে স্পেসকিডজ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও ডা. শ্রীমাথি কিষান বলেন, সাধারণ মানুষও তাদের নাম যাতে মহাকাশে পাঠাতে পারেন সেই চেষ্টা করা হয়েছে। এখানেও প্রশ্ন উঠছে মহাকাশ বিজ্ঞানীদের সকলের সম্মিলিত সম্মতি জ্ঞাপনে কি এই পদক্ষেপ? বিষয়টিতে যদি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি থাকতো তাহলে নিশ্চয়ই সারাভারতের সকল অংশে তা সারা ফেলতো। কিন্তু তা হয়নি।

বিজ্ঞানের সাথে ধর্ম জুরেই কি এক ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রকাশ ঘটছে না!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।