নিউজ ডেস্ক:চিন্তন নিউজ:১২ই অক্টোবর:–মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে দশমীর দুপুরে খুন হন প্রাথমিক শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল। খুন হন তাঁর অন্তঃসত্বা স্ত্রী এবং বছর পাঁচেকের ছেলেও। নিজেদের বাড়িতেই খুন হন তাঁরা। হাঁসুয়ার এলোপাথাড়ি কোপে তাঁদের হত্যা করা হয় বলে প্রাথমিক তদন্তের পরে জানায় পুলিশ। কালো গেঞ্জি ও প্যান্ট পরা এক আততায়ীকে বাড়ির পিছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে পাঁচিল টপকে পালিয়ে যেতেও দেখেছিলেন এক ব্যক্তি, খবর স্থানীয় সূত্রের। তবে খুনের কারণ সম্পর্কে পুলিশ এখনও নিশ্চিত নয়। ফলে কেউ গ্রেফতারও হয়নি।
পারিবারিক বিবাদ, সম্পত্তি সংক্রান্ত জটিলতা, সম্পর্কের টানাপড়েন— এমন নানা তত্ত্ব উঠে এসেছে ইতিমধ্যেই। কিন্তু বন্ধুপ্রকাশ পাল ছিলেন আরএসএস সদস্য। ফলে গোটা পরিবারের এই হত্যা নিয়ে হইচই শুরু করেছে বিজেপি। দ্রুত বাড়তে শুরু করেছে রাজনৈতিক উত্তাপ।
মুর্শিদাবাদ জেলার জিয়াগঞ্জে শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পালের খুনের তদন্তে নূতন মোড়।পুলিশ সুত্রে প্রকাশ তদন্ত করতে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে মৃত বন্ধুপ্রকাশ পালের আদি বাড়ি সাগরদিঘী থানার বারলা সাহাপুরে।জিয়াগঞ্জে বাড়ি তৈরি করার সময় তিনি সাহাপুরের কয়েকজন প্রতিবেশীর কাছে টাকা ধার করে।সেই টাকা ফেরত নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে গন্ডগোল কিনা পুলিশ তদন্ত করছে।বন্ধুপ্রকাশ পালের বাড়ি থেকে তার স্ত্রী বিউটি পালের লেখা নোট উদ্ধার করেছে যাতে স্বামী-স্ত্রী ‘র সম্পর্ক নিয়ে সন্দেহ করছে তদন্তকারী সংস্থা।এখন ঐ নোট বিউটি পালের লেখা কিনা সেটাই পুলিশ খতিয়ে দেখছে।
সপরিবারে বন্ধুপ্রকাশ পাল হত্যার তদন্তের ভার নিল সিআইডি। সিআইডির স্পেশাল সুপার ইন্দ্র চক্রবর্তীর নেতৃত্বে একটি দল জিয়াগঞ্জে মৃত বন্ধুপ্রকাশের বাড়ি যান। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেন।নমুনা সংগ্রহ করেন।
সিআইডির স্পেশাল সুপার ইন্দ্র চক্রবর্তী বলেন আজই সিআইডি এই খুনের তদন্তভার হাতে পেয়েছে, আশা করা হচ্ছে খুব শীঘ্রই খুনী ধরা পড়বে।সৌভিক বণিক নামে একজনের খোঁজে মুর্শিদাবাদ পুলিশের একটি দল বীরভূমের রামপুরহাটে গেছিল বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে দু’জন সন্দেহভাজনকে ধরেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একজন বন্ধুপ্রকাশের আত্মীয়। দু’জনকেই জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে বলে সুত্রের খবর।
খুনের সঠিক তদন্ত, প্রকৃত দোষীর শাস্তি সবাই চায়। পেশায় প্রাথমিক শিক্ষক বুদ্ধিপ্রকাশ খুন হওয়ায় রাজ্যপাল থেকে বুদ্ধিজীবী সবাই নিজেদের উৎকণ্ঠা প্রকাশ করেছেন। এরকম উৎকণ্ঠা সব অন্যায়ের বিরুদ্ধেই থাকা অবশ্যই বাঞ্ছনীয় বলে মত বিশিষ্ট মহলের।
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান পারিবারিক সম্পর্ক, অর্থনৈতিক দ্বন্দ্ব খুনের কারণ হ’তে পারে। এই খুনে রাজনৈতিক রঙ লাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এটা কি তাহলে বিশেষ কোনো উদ্দেশ্যে?এখন শেষপর্যন্ত এই খুনের তদন্তে খুনের মোটিভ কোনদিকে মোড় নেয় সেটা কিছু সময়ের অপেক্ষায়।