বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

টেলিস্কোপ দ্বারা তোলা মহাকাশের বিশেষ কিছু ছবিতে মুগ্ধ সমগ্র বিশ্ব


সন্দীপন দত্ত: চিন্তন নিউজ:/০৪/০৮/২০২২:– বিগত কয়েক দিনে নাসা কর্তৃক প্রকাশিত কয়েকটি মহাকাশ সংক্রান্ত ছবি সমগ্র বিশ্বের বিজ্ঞানীদের ও বিজ্ঞানপ্রেমীদের কাছে বিশেষ আকর্ষনীয়।

আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়ে তৈরি জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ নাসার হাজারো বিজ্ঞানী ও ইঞ্জিনিয়ারদের প্রায় ত্রিশ বছরের পরিশ্রমের ও প্রায় দশ বিলিয়ন ডলারের খরচের ফল।বিগত কয়েক দিনে এই টেলিস্কোপ দ্বারা তোলা বিশেষ কিছু ছবি মুগ্ধ করে দিয়েছে সমগ্র বিশ্বকে।

এই টেলিস্কোপে দুটি ইনফ্রারেড ক্যামেরা লাগানো হয়েছে যেগুলি হল – NIRICAM,MIRICAM। ইনফ্রারেড রশ্মি ব্যাবহারের ফলে এই টেলিস্কোপ থেকে তোলা ছবি হাবেল টেলিস্কোপ থেকে অনেক বেশি স্পষ্ট কারণ এই আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনেক বেশি ফলে আশেপাশের ধুলোর মেঘ পেরিয়ে এই টেলিস্কোপ স্পষ্ট ছবি দিতে পেরেছে।যদিও এই টেলিস্কোপের ওপর একটা মিটিওরয়েট এসে ধাক্কা দিয়েছিল তবে তাতে বিশেষ কিছু ক্ষতি হয়নি বলে জানিয়েছে নাসা।

এই টেলিস্কোপ মূলত মহাবিশ্বের সৃষ্টি সংক্রান্ত রহস্য উদঘাটন করবার জন্য বানানো হয়েছিল এবং সে কাজে কিছুটা সফল ও হয়েছে নাসা।নাসা দ্বারা প্রকাশিত প্রথম ছবি ছিল DEEP FIELD SMACS 0723 যেটি ছিল আজ থেকে প্রায় তেরো বিলিয়ন বছর আগের ছবি।এই ছবি তে বিগ ব্যাং এর পর সৃষ্টি হওয়া অসংখ্য গ্যালাক্সির ছবি পাওয়া যায়।

এরপর পাওয়া যায় তারার জন্ম ও মৃত্যুর ছবি। তারার জন্ম ও মৃত্যুর সময়ের দুরকমের নেবুলার ছবি নিয়েছে টেলিস্কোপটি।নেবুলা মানে ধুলো ও মেঘ দিয়ে সৃষ্ট একটা উজ্জ্বল অঞ্চল।একটি তারার জীবন চক্রতেও মানুষের মত জন্ম ও মৃত্যু আছে। তারার জন্মের যে ছবি টেলিস্কোপ নিয়েছে তার নাম CARINA NEBULA।আরেকটি ছবি তে দুটো তারা যারা একে অপরের চারিদেকে ঘুরছে।যাদের মধ্যে একটি তারা নিজের জীবনের শুরুর দশায় আছে আরেকটি তারা মৃত্যুর সম্মুখীন। তারাটি নিজের মৃত্যুর হাজার বছর আগে থেকে ধীরে ধীরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে চারিদেকে ধুলো ও গ্যাসের মেঘ সৃষ্টি করেছে।যাকে বলা হচ্ছে PLANETARY. NEBULA।

কিন্তু এদের মধ্যে সব থেকে আশ্চর্যজনক হ’ল যে এই টেলিস্কোপ WASP -96B এর।টেলিস্কোপটি এই গ্রহ থেকে আগত আলো স্টাডি করে দেখেছে যে এই গ্রহতে জল থাকার সম্ভাবনা থাকতে পারে। যদিও কোন ছবি তুলতে পারেনি তবে যদি বাস্তবে এই গ্রহে জল থাকে তবে এই গ্রহে প্রাণের অস্তিত্বের কোন সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছে নাসা। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছে এই গ্রহের উষ্ণতা প্রায় সাড়ে পাঁচশো ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কাছাকাছি যা কোন জীবের পক্ষে বাসযোগ্য নয়। তা যদি নাও হয় তবুও এই গ্রহে জল পাওয়া যাওয়া বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আবিস্কারের অন্যতম হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।