প্রতিবেদনে সুপর্ণা রায়:চিন্তন নিউজ:১৬ই আগস্ট:– পূর্ব ভারতের প্রায় ৪২০০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে সুন্দরবন এলাকা। ম্যানগ্রোভে ভরা এই অঞ্চলের প্রায় এগারোটি অঞ্চল ” বিধবা গ্রাম” নামে পরিচিত। ঐ অঞ্চলে গিয়ে খোঁজ করলে যে কেউ দেখিয়ে দেবে এই গ্রামগুলির রাস্তা। কিন্তু প্রশ্ন ,গ্রাম গুলোর এই রকম নাম,কোন দূর্ভাগ্যের শিকার এই অঞ্চলের বাসিন্দারা?
সুন্দরবন এমন একটি অঞ্চল যেখানে বিপদ প্রতি পদে। হয় বন্যা, নয় নৌকাডুবি আর সবথেকে বড়ো বিপদ বাঘ ও কুমীর মানুষকে টেনে নিয়ে গিয়ে মেরে ফেলে। বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকলে তবু মিডিয়ার আনাগোনা বা পশ্চিমবঙ্গ সরকার থেকে কিছু সাহায্য পাওয়া যায় কিন্তু অন্যসময় এদের খবর কেউ রাখে না।
এই বিধবা গ্রাম গুলোতে খোঁজ নিলেই পাওয়া যাবে প্রচুর বিধবা মহিলা। যাদের জীবন সংগ্রাম অত্যন্ত কঠিন। কেউ মাছ ধরেন,আবার কেউ বনের ভিতরে যায় মধু সংগ্রহ করতে। দু’ বেলার খাবার জোটাতে এই মহিলারা হিমশিম খেয়ে যান। এই গ্রাম গুলোতে যারা বাস করেন তাদের প্রত্যেকে বিধবা এবং এদের স্বামীরা কেউ রোগভোগে মারা যাননি —- মারা গেছেন বাঘের থাবায় বা গভীর সমুদ্রে মাছ ধরতে গিয়ে নৌকাডুবিতে।
বাসন্তী,গোসাবা,পাথরপ্রতিমা,কুলতলি প্রভৃতি এলাকায় এই অসহায় মহিলাদের বাস। এমনিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিয়মানুযায়ী এই অঞ্চলের কেউ বাঘের থাবায় মারা গেলে ক্ষতিপুরণ দেওয়ার কথা। কিন্তু সরকার এমন সমস্ত বনদফতর এর প্রমানপত্র দেখতে চায় সরকার যা তাদের কাছে নেই। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে তাদের কাজ পাওয়ার কথা কিন্তু দুর্ভাগ্য যাদের জীবনসাথী তাদের কোন অনুদান বা প্রকল্প কোন কাজে আসে না। তারা পেট চালানোর জন্য বনের ভিতর যায় মধু সংগ্রহ করতে তাদের কেউ ফেরে আবার কেউ বাঘের থাবায় প্রান হারায়। কত প্রান এভাবে চলে যায় তার খবর সরকারও রাখে না আর মিডিয়াতেও দেখায় না। কোন সাহায্য ছাড়াই এদের জীবনসংগ্রাম চলে।