কলমের খোঁচা

প্রবাদপ্রতিম কমিউনিস্ট নেতা কম. বিজয় মোদক এর মৃত্যুদিন উপলক্ষে স্মৃতিচারণ— করলেন হুগলী জেলার প্রবীণ সিপিআই(এম) নেতা , রূপচাঁদ পাল।


চিন্তন নিউজ:৯ই মে :– আজ ৯ই মে।আজ থেকে ২৬ বছর আগে ১৯৯৪ সালের এই দিনে বরেণ্য স্বাধীনতা সংগ্রামী ও হুগলি জেলা তথা যুক্ত বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ কমরেড বিজয় মোদকের জীবনাবসান হয়।তখন তাঁর বয়স ৮৮ বছর।
বিজয় মোদকের জন্ম ১৯০৬ এর ২৭ জুন।তাঁর বাবা বিনয়কৃষ্ণ মোদক ছিলেন পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। স্বাধীনতা সংগ্রামীও।
১৯২১ সালে গান্ধীজির ডাকে অসহযোগ আন্দোলনে সাড়া দিয়ে হুগলির যে সকল ছাত্র সরকারী বিদ্যালয় ছেড়ে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দেন তাদের মধ্যে ছিলেন বিজয় মোদক ও তাঁর ভাই হৃদয় মোদক।
পরে এই সকল বিদ্যালয় ত্যাগী ছাত্রদের পড়াশুনার লক্ষে প্রতিষ্ঠিত হয় ‘হুগলি বিদ্যামন্দির’।দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতা এই বিদ্যামন্দিরে এসেছেন। থেকেছেন।বা যুক্ত ছিলেন।
প্রকৃতপক্ষে হুগলি বিদ্যামন্দির ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামের অহিংস,সশস্ত্র জাতীয়তাবাদী ও সমাজতন্ত্রী ধারার সহাবস্থানের এক অপূর্ব মিলন ক্ষেত্র।
যুব বয়সে বিজয় মোদক যুগান্তর’ দলের বিপ্লবীদের
সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। পরে হুগলি ও বর্ধমান জেলার বিপ্লবী যুব গোষ্ঠীদের নিয়ে ১৯৩১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়-‘ইন্ডিয়ান প্রলেটারিয়ান রেভ্যুলেশনারী পার্টি'(আইপিআরপি)। বিজয় মোদক ছিলেন এর অন্যতম সংগঠক।
জেল থেকে মুক্ত হবার পর ১৯৩৯এ তিনি ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টির সদস্য পদ লাভ করেন।
হুগলি জেলায় কমিউনিস্ট পার্টি গঠনে ও কৃষক আন্দোলন গড়ে তোলায় বিজয় মোদকের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।তিনি প্রায় বার বৎসরাধিক কাল বৃটিশ ও কংগ্রসী শাসনকালে কারারূদ্ধ ছিলেন।
১৯৫৬ সালে যুক্ত কমিউনিস্ট পার্টির হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক ছিলেন।
১৯৬৪ সালে সংশোধন বাদীদের থেকে আলাদা হয়ে নতুন কর্মসূচীর ভিত্তিতে গঠিত হয়-ভারতের কমিউনিস্ট পার্টি (মার্ক্সবাদী)। বিজয় মোদক হুগলি জেলা কমিটির সম্পাদক নির্বাচিত হ’ন।আমৃত্যু তিনি ঐ পদে থেকে দায়িত্ব পালন করেছেন।সুদীর্ঘ সময় তিনি পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য কমিটির সদস্য ও রাজ্য কৃষক সভায় নেতৃত্বে ছিলেন।
১৯৬৭ থেকে ১৯৮৪ দীর্ঘ ১৭ বছর তিনি লোকসভার সদস্য ছিলেন।তিনি ইন্জিনিয়ারিং এর কৃতী ছাত্র ছিলেন।
আজকের বিশ্বজোড়া ও দেশ জোড়া সংকটে অবশ্য স্মরণীয় ১৯৪৩ এর ভয়াবহ দুর্ভিক্ষের দিন গুলিতে তাঁর সুযোগ্য সহযোগীদের নিয়ে ত্রাণ কার্য সংগঠিত করায় তাঁর নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা।
আজকের এই দিনটিতে সেই প্রবাদ প্রতিম সংগঠক ও নেতার জীবনাবসান হয়। আসুন আমরা স্মরণ করি সেই নিবেদিত প্রাণ স্বাধীনতা সংগ্রামী ও কমিউনিস্ট নেতাকে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।