রাজ্য

দেশবরেণ্য নেতাজিকে নিয়ে শাসকের সংকীর্ণ রাজনীতি


গৌতম প্রামাণিক ,নিজস্ব প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:২৩শে জানুয়ারি:– আজ ২৩শে জানুয়ারি ২১,  নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৫ তম জন্মদিন।  সারা দেশে যথাযথ মর্যাদায় শ্রদ্ধেয় নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু-কে সেলাম জানাচ্ছে দেশবাসী।

কিন্তু, – আমরা সবাই লক্ষ্য করছি দেশের সরকার ও রাজ্যের সরকার আমাদের অতি প্রিয় দেশপ্রেমিক-কে আজ রাজনৈতিক পন্যে পরিনত করে চলেছে। নেতাজির উপর কোনো আলোচনা নয়, বর্তমান পরিস্থিতিতে নেতাজির  জীবন ও দেশপ্রেমকে তুলে ধরা, এসবই আজকের যথাযথ মূল্যায়ন হবে। তা না হয়ে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তার নাম পরিবর্তন করে নেতাজির নামে হবে এটাই দেশের সরকারের আজ কাজ? ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল তার নামের একটা প্রেক্ষাপট আছে, সেটাকে কেনো আঘাত? তাহলে খিদিরপুর ডকের নেতাজির নামে পরিবর্তন হলো কেনো?

লক্ষনীয়- যেখানে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর নাম যুক্ত সেখানে আঘাত করো, আর যেখানে ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট সেখানে নাম পরিবর্তন করে নেতাজির নামকরণ করা, এটাই দেশের সরকারের আজ ভুমিকা। সেক্ষেত্রে আমাদের রাজ্যের সরকারের কোনো প্রতিবাদী ভুমিকা নেই, নিছক বেসরকারি লোক দেখানো প্রতিবাদ, জনগণের চোখ ধোঁয়া। সেই দৃষ্টিভঙ্গির নেতাজির ওপর সঠিক মূল্যায়ন ও আলোচনা বামপন্থীরাই করে আসছে।

ধর্মতলার আকাশবাণী ভবনের সামনে নেতাজির আবক্ষমূর্তি যে প্রতিষ্ঠিত আছে বামপন্থীদের মাল্যদান হয়, ফরোয়ার্ড ব্লক সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি পালন করে। কিন্তু, আজ তা হলোনা, কারণ, যে দল বা যে দলের কার্যকলাপকে নেতাজি সমর্থন করতেন না, সেই দলই আজ দেশের সরকারে। নেতাজি বলেছিলেন- ধর্ম আর রাজনীতি মিশে গেলে দেশের গণতন্ত্রের ও সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে বিশাল আঘাত হবেই হবে। খুব স্বাভাবিকভাবেই কৌশলে নেতাজির প্রতি অবমাননা ও অসম্মান হয় এমন কাজ দেশের সরকার করে চলেছে। ১২৫ বছর জন্মদিনে আজ সব দল ঐ চিরাচরিত মূর্তিতে মাল্যদান করা থেকে বঞ্চিত হলো কারণ আজ দেশের প্রধান আসছেন ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল-র নাম পরিবর্তন করতে সাথে যাবেন নেতাজি ভবন, যাবেন জাতীয় গ্ৰন্থাগারে এবং প্রটোকল অজুহাতে ঐ যথাযথ সম্মাননা জ্ঞাপনে বিধিনিষেধ!
এর পিছনে দুরভিসন্ধি হলো দুই সরকারের সামনে বিধানসভা নির্বাচন! ভুত দেখছেন বামেদের, দুই সরকারের শত্রু বামেরাই! আর নেতাজির মূল্যায়ন বামেদের কাজ, প্রকৃত আলোচনার মাধ্যমে তাঁকে ব্যাখ্যা ও বাস্তবায়ন বামপন্থী বা কমিউনিস্টদের কাজ।

আজ বামেরা মহাজাতি সদন থেকে নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন জানিয়ে মিছিল বের করে সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে আসেন। আগামী ২৬ জানুয়ারি সর্বনাশা কৃষি আইন বাতিলের দাবিকে সংহতি জানানোই ছিল দেশপ্রেমিক নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু’র প্রতি সন্মাননা।
পাশাপাশি সারা রাজ্য জুড়ে নেতাজিকে নিয়ে কিছু গঠনমূলক কর্মসূচি পালন করে, বিভিন্ন গণসংগঠন। আজ মধ্য কলকাতার ৫১ নম্বর ওয়ার্ডের  এস‌এফ‌আই ও ডিওয়াইএফ‌আই শিয়ালদহ বৌবাজার আঞ্চলিক কমিটির অন্তর্গত টেরিটোরিয়াল ইউনিটের উদ্যোগে প্রাইমারি ও আপার প্রাইমারি ছাত্র ছাত্রীদের ৭০ জনকে স্কুল সরঞ্জাম ও ব্যাগ তুলে দেওয়া হয় সাথে সাথে আরো ১০ টা স্কুল ব্যাগ ও সরঞ্জাম বাগবাজারে অগ্নি বিধ্বস্ত অঞ্চলে সর্বশান্ত পড়ুয়াদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।