বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ব্যাপারটা ভাইরাস, আতঙ্কটা ভাইরাল (পর্ব ৫)


শ্যামল চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:৩০শে মে:- মহামারী আতঙ্কটা নতুন নয়। কিন্তু ভাইরাস জনিত মহামারী যদি আগাম বলা যায় তাহলে জ্যোতিষশাস্ত্রও সত্যি। এই ভ্যাকসিন ব্যবসায়ী তথা আমেরিকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ এলার্জি এন্ড ইনফেকশাস ডিজিজ এর ডিরেক্টর ডঃ অ্যান্টনি ফাউসিই আতঙ্ক ছড়িয়ে ওষুধ বাজার দখলের কৌশল বার করেন। এডইস ভাইরাসজনিত রোগ জানা যায় ১৯৮৪ সালে। কিন্তু তিন বছর আগে ১৯৮১ সালে যখন এডইস ভাইরাসজনিত রোগ প্রতিষ্ঠিতই হয়নি, তখন কীভাবে ডঃ অ্যান্টনি ফাউসি এইডস-কে একটি ভয়ঙ্কর রোগ হিসাবে বর্ণনা করে তার ওষুধ তৈরির জন্য বিনিয়োগ শুরু করেন। কোভিড-১৯ এর ক্ষেত্রেও তাই উনি ২০১৭ সালে কীভাবে জানলেন আগামীতে ফ্লু মহামারীর আকার নেবে। একই ভাবে তার দোসর বিল গেটসেও ২০১৫ সালের ১৮ মার্চ, ‘TED TALK’ কনফারেন্সে বিশ্বের অন্যতম ধনী ব্যাবসায়ী বিল গেটস “The Next Outbreak” শিরোনামে এক ভিডিও প্রেজেন্টেশনে একই কথা বলেন। গেটস বলেন, তিনি বলেন যে “পরবর্তী কয়েক দশকে যদি কোনও কিছু 1 কোটিরও বেশি মানুষের মৃত্যু ঘটায়, তবে সেটা হবে উচ্চ সংক্রামক ভাইরাসের দ্বারা, যুদ্ধের দ্বারা নয়। আমরা পরমানবিক অস্ত্র-গুলির পিছনে অনেক বিনিয়োগ করেছি কিন্তু মহামারী বন্ধ করার জন্য কোনও সিস্টেমে আমরা খুব কমই বিনিয়োগ করেছি”। এই বক্তব্য থেকে ব্যবসায়িক ব্যাপারটা খুবই পরিষ্কার। এইবার মহামারীর জন্য বিনিয়োগ কর। না, কোন নেট ঘাটাঘাটির দরকার নেই। আমরা নিজেরাই একটু স্মৃতির পাতা ওলটাই। হ্যাঁ, আমি আপনি, আমরাই পাড়ায় পাড়ায় হেপাটাইটিস ভ্যাকসিনের ক্যাম্প করেছিলাম। বিনে খরচে ক্যাম্প। এখন এই ভ্যাকসিন ব্যাধতামূলক। এক্ষেত্রেও অল্পবিস্তর আতঙ্ক ছড়ানো হয়েছিল। তারমানে এই ভ্যাকসিনের প্রয়োজন নেই একথা বলছি না। কিন্তু যেভাবে করা হয়েছে তার বিরোধিতা করছি।
বিল গেটস ডাক্তার বা গবেষক নন। তাকে আমরা চিনি একজন সফটওয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে। কিন্তু হঠাৎ তিনি মহামারী নিয়ে মাতলেন কেন? ২০১৫ সালের ২৩ জুলাই বিল গেটস ও কিছু এনজিওর ফান্ডে প্রতিষ্ঠিত “THE PIRBRIGHT INSTITUTE” এর পক্ষ থেকে করোনা ভাইরাস এর উপর পেটেন্ট নেওয়ার জন্য আবেদন করা হয় যা ২০১৮ সালের ২০ নভেম্বর অনুমোদন প্রাপ্ত হয়। এই পেটেন্টে পরিষ্কার উল্লেখ আছে যে করোনা ভাইরাস সংক্রান্ত গবেষণা, করোনা ভাইরাস তৈরি, তার জেনেটিক মিউটেশন, এবং করোনা ভাইরাসের ভ্যাকসিন তৈরির একচ্ছত্র অধিকার তাদেরই থাকবে। তিনি ID2020 নামক প্রজেক্টের মাধ্যমে মানুষের শরীরে মাইক্রোচিপ প্রবেশ করিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহীতাদের নজরদারিতে রাখতে চাইছেন। যে সমস্ত মানুষ ভ্যাকসিন নেবেন তাদের চিহ্নিত করার জন্য কোয়ান্টম ডট টেকনোলজির উপর ভিত্তি করে শরীরের ভিতরে মাইক্রোচিপ প্রবেশ করিয়ে এক বিশেষ ধরনের ট্যাটু দেওয়া হবে যা তার ডিজিটাল সার্টিফিকেট হিসেবে গণ্য হবে!!! আপনি ‘আরোগ্য সেতু’-র বিজ্ঞাপন দেখুন, যা বাধ্যতামূলক করে দেওয়া হচ্ছে। বিল গেটসের মতলবের সাথে আমাদের মতলববাজদের কোন তফাৎ নেই।
আমেরিকার সেন্টারস ফর অ্যাডভান্সড মেডিসিনের মেডিকেল ডিরেক্টর ডাঃ রশিদ এ. বাট্টার বলেন- কোভিডি-১৯ কে ভয়ঙ্কর ভাইরাসের রূপ দিয়ে সুপরিকল্পিত প্রচারের মাধ্যমে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু ভয়ের আবহ তৈরি করা হচ্ছে। তিনি বলেন প্রকৃতপক্ষে ভাইরাসের কারণেই মৃত্যু হয়েছে এমন একটিও প্রতিষ্ঠিত গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নেই। কারণ হিসেবে ডাঃ রশিদ বলেছেন যে পুরোটাই অনির্ভরযোগ্য RT-PCR (Reverse Transcription Polymerase Chain Reaction) টেস্ট করা হচ্ছে। এই টেস্টের উপর ভিত্তি করে আক্রান্ত মৃত্যু R0 সব বলা হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন PCR টেস্ট রোগ নির্ণয়ের জন্য বৈধ না হওয়া সত্ত্বেও কোভিড-১৯ টেস্ট অনুমোদন করার কারণ কী? এরপরেও মৃত্যুর হার সাধারণ ফ্লুর চেয়েও কম।
আতঙ্ক এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে মানুষ সাধারণ চিন্তাভাবনা করতেই ভুলে গেছে। সব সময় মৃত্যুভয়ে তাড়িত। কখনই সধারণ হিসেব কষে দেখছেন না। একটা উদাহরণ দিয়ে দেখা যাক। কোন ওভার নির্দিষ্ট ক্রিকেট খেলায় কোন দল ১০ ওভারে ২০ রান করেছে। ওভারের নিরিখে দ্বিগুণ। এবার যদি বলের নিরিখে দেখি। প্রতি ওভারে ৬টি বল। তাহলে ১০ ওভারে ৬০ বল। তাহলে দাঁড়াচ্ছে ৩ বলে ১ রান। অর্থাৎ বল পিছু খুবই কম। প্রচারটা ওভার পিছুর কায়দায় করে ভয়টাকে চরম মাত্রায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আশা করি পরের পর্বে শেষ হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।