দেশ

দেশ আত্মনির্ভর নয়,অতিপ্রাকৃত শক্তির ওপর নির্ভর করতে বাধ্য করার পাঠশালা


কাকলি চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:৩০শে মে:-কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে করোনা তাড়ানোর চেষ্টা নাকি যথোপযুক্ত সুরক্ষার ব্যবস্থা না করে ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের সম্মান দেখানোর নামে ভন্ডামি সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকতেই পারে। মোমবাতি জ্বেলে মহাশক্তির আরাধনা করে সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে করোনা মোকাবিলার হাস্যকর প্রয়াস, না কোভিড১৯ এ মৃতদের প্রতি সম্মান জানিয়ে পাপস্খালনের চেষ্টা সেই বিতর্কে না গিয়েও বলব শুরুটা কিন্তু উনিই করেছিলেন যার মাশুল গোনা শুরু হয়েছে, শেষ কোথায় অজানা।

পরপর দু’দিন দুটো খবর চেতনার জগতে ঢিল মারলো। ঊড়িষ্যার কটকের নরসিংহপুরের এক মন্দিরের পূজারী নৃশংসভাবে গলা কেটে হত্যা করল এক যুবককে। ঐ পূজারী নাকি স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন মন্দিরে মানুষ বলি দিলেই করোনা চলে যাবে। মুন্ডুটা গড়াগড়ি খাচ্ছে মন্দিরের ভেতর আর বাইরে পড়ে আছে ধড় ও বাকী শরীর। ঘটনাস্থলেই উদ্ধার হয়েছে কুঠার। নিজের মুখে থানায় হাজির হয়ে জানিয়েছেন নিজের কুকীর্তির কথা। ভাবা যায়! কতখানি নৃশংস হলে, ঈশ্বর ভক্তি কোন পর্যায়ে গেলে হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে যায়!

দ্বিতীয় ঘটনাস্থল উত্তরপ্রদেশের বুন্দেলখন্ড। গ্ৰামের মন্দিরের আরাধ্য দেবতা শিব। করোনার হাত থেকে গ্ৰামকে মুক্ত করতে এক অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রীর জিভ কেটে দেবতার কাছে নিবেদিত হল। পাশবিকতার চরম নিদর্শন!

কর্তার ইচ্ছেয় কর্ম। রাষ্ট্রনায়ক যেমনটা ভাবতে বাধ্য করবেন, হাতের পুতুলকে যেমন নাচাবেন সে তেমনি নাচবে। দেওয়ার কিছু নেই যখন নিজেদের কৃতকর্মের ওপর, ভাগ্যের ওপর বিশ্বাস করতে, আস্থা রাখতে মগজধোলাই করানো চলছে নিপুণভাবে। এক গভীর অন্ধকার নেমে আসছে সমাজের বুকে। আত্মনির্ভর নয়, ভগবানের ওপর, অতিপ্রাকৃত কোনো শক্তির ওপর নির্ভর করতে বাধ্য করার পাঠশালা খুলেছে শাসক গোষ্ঠী। লড়াইটা এই মূহুর্তে খুব কঠিন হ’লেও পতঙ্গের মত আগুনে ঝাঁপ দেওয়া থেকে বিরত করে আলোর পথযাত্রী হওয়ার লক্ষ্যে সাধারণ মানুষের চিন্তা চেতনায় শান দিতে হবে, পাল্টাতেই হবে ঘুণধরা এই সমাজটাকে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।