রাজ্য

লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধিতে ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি বাংলার কৃষকের।


কল্পনা গুপ্ত, চিন্তন নিউজ১৯শে এপ্রিল – করোনাতে না হ’লেও এমনিতেই অনাহারে মারা যাবে বেশ কিছু মানুষ। এমনি আশঙ্কা বাসা বাঁধছে মানুষের মনে। প্রতিদিন আতঙ্কের ছায়ায় বাস করছে সেইসব মানুষেরা যারা প্রতিদিনের বাজারের চাহিদা পূরণের সাথে যুক্ত। এমনি কিছু চাষির কথায় তাদের হতাশার কথা জানা গেলো। লকডাউনের কারণে বাজার হাট ঠিকমত বসছে না। বন্ধ থাকছে আড়ত। অনিয়মিতভাবে সব্জি ইত্যাদি পাঠানো হচ্ছে শহরের বাজারে। যানবাহনের অভাবে কলকাতায় পাঠানো হচ্ছেনা মালপত্র। মাথায় হাত পড়েছে নদীয়ার শান্তিপুর ব্লকের গয়েশপুর গ্রামপঞ্চায়েতের হিজুলি গ্রামের প্রায় সব কুমড়ো চাষির। লকডাউনের সময়সীমা বৃদ্ধি পাওয়ায় মিস্টি কুমড়ো বিক্রির সম্ভাবণা একদম ক্ষীণ। ফলে মাঠেই পচে নষ্ট হচ্ছে কুমড়ো।

চলতি বছরে ৫০০র বেশি কৃষক ধারদেনা করে মিস্টি কুমড়োর চাষ করেছেন। অনেকে ব্যাংক থেকেও ধার নিয়েছেন। এই চাষে সময় লাগে ৬ মাস। তাদের কথায়, ‘ লকডাউনের ফলে গাড়ি চলাচল বন্ধ হওয়ায় তারা মিস্টি কুমড়ো পাঠাতে পারছেন না, বেড়োলেই পুলিশ বাধা দিচ্ছে। মাঠের ফসল যেভাবে নষ্ট হচ্ছে আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তা একেবারেই শেষ হয়ে যাবে। কিভাবে সংসার চালাবেন জানেননা। মিস্টি কুমড়ো চাষ করেই আমাদের সংসার চলে। রোগ সংক্রমণ হলে হয়তো এমনিতেই মরবে, কিন্তু সব কুমড়ো পচে গেলে পরিবার নিয়ে না খেতে পেয়ে মরতে হবে। এই প্রসঙ্গে কৃষক আলোক মন্ডল জানালেন যে তারা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছে আবেদনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কুমড়ো চাষের মতন ব্যাপক ক্ষতির মুখে পান চাষিরা। দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা, পাথরপ্রতিমা, কাকদ্বীপ, সাগরদ্বীপ সহ মগরাহাট ১ নম্বর ব্লকের শেরপুর এলাকার পানচাষিদের মাথায় হাত। এইসব এলাকার এক বিরাট অংশের মানুষের জীবিকা পানচাষ।

এছাড়াও নদীয়ার শিমুরালির পানের এক বিশাল বাজার ও চাহিদা ছিলো। অনেকেই নিজের জমিতে বা জমি লিজ নিয়ে পান চাষ করে। জলসেচের অভাবে এখন অনেকটাই পান চাষ সমস্যার মুখে। যেটুকু বরোজ বেঁচে আছে করোনা ভাইরাসের কারণে লকডাউনে দিন মজুরেরা ভয়েতে মাঠে কাজে আসছেন না। ফলে বরোজের ভিতরে আগাছা জমে পানের পিলি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানের চাহিদা থাকা সত্ত্বেও বরোজের পান সরবরাহ করা যাচ্ছে না। তা ওখানেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।