দেশ

বন্ধ থাকছে পূরীর সুবিখ্যাত রথযাত্রা উৎসব


কাকলি চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:২০শে জুন:- ওড়িশা কোভিড১৯ মহল্লা সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে কি সেটা নিয়ে বিতর্ক থাকলেও বিশ্বখ্যাত রথযাত্রা যে এ বছরের মত স্থগিত থাকছে সেটা নিয়ে আর কোনো সংশয় নেই গতকাল সুপ্রীমকোর্টের মাননীয় বিচারপতি এস এ বোবদের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে। ৯০০ বছরের প্রাচীন এই রথযাত্রা এর আগেও সামাজিক, রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বন্ধ ছিল ৩২ বার। বিগত প্রায় ৩০০ বছর পরে আবারও মহামারীর কারণে বন্ধ থাকছে আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়ায় পুরীর জগন্নাথদেবের সুবিখ্যাত রথযাত্রা।

যেদিন প্রথম শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু রথের রশিতে টান দিয়েছিলেন সেদিন থেকেই বাঙালির মননে স্থায়ী জায়গা করে নিয়েছে এই রথযাত্রা। দেশ বিদেশের লক্ষ লক্ষ ভক্তের জনজোয়ারে প্লাবিত হয় পুরীর রাজপথ। রথযাত্রার অনেক আগে থেকেই সাজো সাজো রব আর দুদিন আগে থেকে উল্টোরথ পর্যন্ত পর্যটকদের আনাগোনায় পা ফেলার জায়গা থাকে না রাজপথে। হোটেল, হলিডেহোমগুলোতে উপচে পড়া ভীড়! দক্ষিণ পূর্ব রেল একাধিক স্পেশাল ট্রেন চালিয়েও সামাল দিতে পারে না এই জনারণ্য।

দুঃখ প্রকাশ করেছেন পুরীর মহারাজা দিব্যসিংহ দেব। আদালতের নির্দেশ মেনে কীভাবে রথের পূজো করা সম্ভব সে বিষয়ে পুরীর শঙ্করাচার্যের সঙ্গে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন।

যাঁরা অশুভ পূর্বলক্ষণের তত্ত্বে বিশ্বাসী তাঁরা অনেক দিন আগে থেকেই আলোচনা করছিলেন কিছু ইঙ্গিতের কথা। ২১ শে মার্চ মন্দিরের নীলধ্বজ ধ্বজায় আগুন লেগে যাওয়া কিংবা বিধ্বংসী আমফান ঝড়ে উড়ে গিয়েছে পতিতপাবন ধ্বজা। বিজ্ঞানের সঙ্গে কোনো যোগসূত্র না থাকলেও তাঁদের আশঙ্কায় শিলমোহর পড়ল।

মারণ ক্ষমতায় পিছিয়ে থাকলেও সংক্রমণের হারে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে কোভিড১৯ ভাইরাসের প্রকোপ। অসংখ্য দোকানদার, হোটেল ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত হলেও রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে সকলেই স্বাগত জানিয়েছেন সুপ্রীমকোর্টের আদেশকে।

ভক্তদের সাময়িক কষ্ট দিলেও এই সিদ্ধান্ত অত্যন্ত সঠিক। লক্ষ লক্ষ মানুষের আনাগোনা, আদানপ্রদান যে উৎসবে, কোনোভাবেই আটকানো সম্ভব হতো না মহামারীর সংক্রমণের ব্যাপ্তিকে। এখন অপেক্ষা আগামী বছরের।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।