রাজ্য

সঙ্কটে শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী হস্ত চালিত তাঁত শিল্প ।


সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:০২/০৫/২০২৩:- সঙ্কটে শান্তিপুরের ঐতিহ্যবাহী হস্ত চালিত তাঁত শিল্প । আরামদায়ক নরম সুতির শাড়ি রং এর সাথে রং মিলিয়ে বছরের পর বছর বুনে চলেছেন এই তাঁতশিল্প রা। কিন্তু বর্তমান দ্রব্য মূল্যের বাজারে তো ঐতিহ্য দিয়ে সংসার চলে না । সুত্র মারফত জানা যায় যে একখানা শান্তিপুরি তাঁতের শাড়ি বুনলে মুজুরী পাওয়া যায় মাত্র দু’ শো টাকা । এই বাজারে দু’শো টাকাতে আর যাই হোক সংসার চালানো যায় না ।

মে দিবসে এই আক্ষেপের সুর ঝরে পড়লো এই তাঁত শিল্পীদের গলা থেকে। তাঁদের বক্তব্য সরকার যদি পাশে থাকতো তবে এভাবে হারিয়ে যেতে বসতো না এই হস্তচালিত তাঁত শিল্প । এই শিল্পীদের না আছে কোন সন্মানজনক মজুরী, না পাশে সরকার আছে। তারপর গোদের উপর বিষফোঁড়া র মতো বর্তমান প্রজন্ম এই সুতির শাড়ি র দিক থেকে একেবারেই মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে । এরকম অবস্থা চলতে থাকলে এই শিল্প একেবারে হারিয়ে যাওয়া শুধুমাত্র সময়ের অপেক্ষা ।

একটা সময়ে নদীয়া জেলার শান্তিপুর এলাকায় প্রায় প্রতিটি ঘরেই তৈরি হতো হাতে বোনা তাঁতের শাড়ি । তাঁতীদের ঘরে তাঁত যন্ত্রের ঘটাং ঘটাং শব্দে মুখরিত থাকতো এলাকা । তারপর গঙ্গা দিয়ে বয়ে গেছে অনেক জল । এখন মাত্র কয়েক ঘর আছে যাঁরা এই শিল্পের উপর ভরসা করে সংসার চালান । এভাবে চললে কিছুদিন বাদে হারিয়ে যাবে শান্তিপুরি তাঁতের শাড়ি । শ্রমিকদের দাবি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উদাসীনতার কারণে ই এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে । এক তাঁত শিল্পী জানিয়েছেন যে তিনি প্রায় চল্লিশ বছর ধরে শাড়ী বুনছেন। তাঁর দাবি মজুরী কমতে কমতে প্রায় তলানি তে এসে ঠেকেছে । তিনি আরও বলেন যে একশ্রেণীর মুনাফা লোভী মহাজন বেশি মুনাফার লোভে তাঁতী দের থেকে শাড়ী নিয়ে সেই শাড়ী বাজারে বেশী দামে বিক্রি করে দিচ্ছে । তার উপর বাইরের রাজ্য থেকে মনভোলানো রকমারি শাড়ি আসছে সেই জন্য এই শাড়ীর চাহিদা কমছে । এভাবে চললে কিছুদিনের মধ্যেই চিরতরে হারিয়ে যাবে শান্তিপুরি তাঁত । তাঁত শিল্পীদের এই দুরাবস্থার কথা এলাকার বিধায়ককে জানালে তিনি দায়সারা গোছের জবাব দিয়ে বলেন এই বিষয় টা কেন্দ্র সরকার দেখে । তাই এ ব্যাপারে তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।