দেশ

মতৈক‍্যের অভাবে শবরীমালার রায় পাঠানো হোলো বৃহত্তর বেঞ্চে।।


চৈতালী নন্দী: চিন্তন নিউজ:১৬ই নভেম্বর:–মতৈক‍্যের অভাবে শবরীমালার রায় পাঠানো হোলো বৃহত্তর বেঞ্চে।।
দশম ও একাদশ শতেকের পূর্বে প্রতিষ্ঠিত শবরীমালা মন্দিরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়সী কোনো মহিলার প্রবেশাধিকার ছিল না। শুধুমাত্র লোকাচার এবং সংস্কারের অজুহাতে। তাদের অভিমত ছিল ঐ সময়কালেই মেয়েরা প্রজননক্ষম থাকে। মন্দিরের বিগ্রহ লর্ড আয়াপ্পা  ব্রক্ষচারী।এই যুক্তি দেখিয়ে পুরুষানুক্রমে মহিলাদের মন্দিরে প্রবেশ থেকে বঞ্চিত করা হয়ে আসছিল। কিন্তু এই প্রথাকে ‘বেআইনী ‘ও ‘অসাংবিধানিক’ রায় দিয়ে ২০১৮ সালে  সুপ্রীম কোর্ট মহিলাদের জন‍্যে শবরীমালা উন্মুক্ত বলে রায় দেয়।

এই রায়ের বলে বলীয়ান হয়ে দুজন মহিলা বহু বাধা অতিক্রম করে সরকারি সুরক্ষাবলয় সঙ্গে নিয়ে ঐ মন্দিরে প্রবেশ করে।বামপন্থী সরকারের সহযোগিতা তেই তা সম্ভব হয়েছিল। শবরীমালা মন্দির নিয়ে গতবছরের এই রায়ের  বিরুদ্ধে ৬৫ টি  রিভিউ পিটিশন জমা পড়ে সুপ্রিম কোর্টে।এই রিভিউ পিটিশন গুলো সুপ্রীম কোর্ট খারিজ না করে বিষয়টি ফের বিবেচনার জন‍্যে পাঠিয়ে দেয় বৃহত্তর বেঞ্চে। যে পাঁচ সদস‍্যের বেঞ্চে এতোদিন এই মামলাটি চলছিল, তাতে দুজন বিচারপতির ভিন্ন মত থাকার কারণে সংখ‍্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তি তে তা বৃহত্তর বেঞ্চেই পাঠানো হয়। কিন্তু আগের রায়ে সুপ্রীম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের রায়ের উপর কোন স্থগিতাদেশ জারি হয়নি।অর্থাৎ শবরীমালা মন্দিরে মহিলাদের প্রবেশের উপর কোনো স্থগিতাদেশ এখনো পর্যন্ত নেই।

এই মামলা টা দ্বিতীয়বার বিবেচনার জন‍্যে পাঠানো হওয়াতে খুবই খুশী বিজেপি এবং কংগ্রেস। সবচেয়ে দুঃখ জনক বিষয় হোলো এই প্রবেশাধিকারে সবচেয়ে আপত্তি ছিল মহিলাদেরই। যেসব মহিলাদের আপত্তিতে মহিলারা প্রবেশে বাধা পাচ্ছিলেন তারা বিশেষ একটা রাজনৈতিক দলের মদতপুষ্ট। তাই এই রায় আবার পুনর্বিবেচনার জন‍্যে যাওয়ায় বিজেপি খুব খুশি।

সিপিআইএম এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি বলেন  যে সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তের বাস্তব প্রয়োগ ঘটাবে কেরালার সরকার।প্রকাশ কারাটের বক্তব্য যতোদিন বিষয়টি বিচারাধীন থাকবে ততোদিন অপেক্ষা করতেই হবে।কেরালার মুখ‍্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন যে সুপ্রিম কোর্ট তো স্থগিতাদেশ দেয়নি। তবে পরিস্থিতি বিভ্রান্তিকর।
আমাদের সংবিধানের ২৫/২৬ অনুচ্ছেদে  ধর্ম ,জাতি,লিঙ্গ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকার রয়েছে। আজকের পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে মহিলাদের সঙ্গে এই আচরন অত‍্যন্ত হীন দৃষ্টিভঙ্গির প্রকাশ। যেখানে মহিলাদের অর্ধেক আকাশ বলা হয় সেখানে এই বিপরীত আচরন নক্কারজনক।

প্রকৃতপক্ষে দেশ উল্টোদিকে হাঁটছে।মনুবাদে বিশ্বাসী বিজেপি সরকার মহিলাদের সমানাধিকার মেনে নিতে অস্বীকার করে। তাই এই রায়ের বিরুদ্ধাচারণ হতেই থাকবে, হয় শবরীমালায় ,না হলে অন‍্য কোথাও!


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।