কলমের খোঁচা রাজনৈতিক

বর্তমান পরিস্থিতিতে রেড ভলান্টিয়ার্সের ভূমিকা——


গৌতম প্রামানিক: চিন্তন নিউজ:১২ই মে:–বর্তমান পরিস্থিতিতে “রেড ভলান্টিয়ার্স” নামে একটা সংগঠিত প্রয়াস এই অতি মহামারী সংকটকালে সংক্রমণ আক্রান্ত মানুষের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে রাস্তায় আছে। এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও ইতিবাচক বার্তা বহন করে, কারণ, ছাত্র ও যুব সমাজ সামগ্রিক কর্মকাণ্ড ও উদ্যোগের অধিনায়কত্বে। সেকারণেই সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেছিলেন–
“এদেশের বুকে আঠারো আসুক নেমে”…..!!
যে কোনো দুঃসাহসী কাজে ছাত্র ও যুবসমাজের ভুমিকা অনস্বীকার্য– স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাসে লক্ষ্য করা গেছে!!

আবার ভারতের ইতিহাসে সবচাইতে নিকৃষ্টতম ঘটনা (পাঁচশো বছরের প্রাচীন সৌধ বাবরি মসজিদ ধংসের ঘটনা) ঘটাতেও দেখা গেছে যুবসমাজের একাংশের ভুমিকা!! এখানে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে কোন কাজের জন্য ঐ ছাত্র ও যুবসমাজকে সংগঠিত করে উদ্ভুদ্ধ করছে কোন মতাদর্শ!

যখন জানতে পারলাম ” রেড ভলান্টিয়ার্স ” বাম মতাদর্শের ভিত্তিতে মানুষের সেবায় এই ছাত্র ও যুবসমাজের উদ্যোগ! তখন সদ্য সমাপ্ত রাজ্যের নির্বাচনে একটাও আসন না পাওয়া সিপিআইএম নেতৃত্বাধীন বামফ্রন্ট দলটার ছাত্র ও যুবসমাজের ভুমিকার জন্য ভীষণ গর্ববোধ হচ্ছে!!
সারা বাংলা জুড়ে বামপন্থী ছাত্র ও যুবসমাজের উদ্যোগে এই অতিমারী করোনা সংক্রমিত আক্রান্ত মানুষের জন্য জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমাজসেবায় মগ্ন “রেড ভলান্টিয়ার্স “!
কলকাতার সর্বত্রই অক্সিজেন সিলিন্ডার, ওষুধ, এমনকি কোনো কোনো বাড়িতে সকলেই সংক্রমিত তাদের ওষুধ, আনুষাঙ্গিক জিনিস পত্র, বাজার, খাবার‌ও পৌঁছে দিচ্ছে এই এস‌এফ‌আই ডিওয়াইএফ‌আই কমরেডরা! গতকাল রাতে উত্তর কলকাতা একটা জায়গায় এমনও হয়েছে করোনা আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে, বাড়ির বাকিরাও সংক্রমিত, সেই শবদেহ ঐ সমাজ বন্ধুদল “রেড ভলান্টিয়ার্স” রা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে সেই শবদেহ সৎকারের ব্যবস্থা করে। সাথে উল্লেখযোগ্য আরো একটা উদ্যোগের কথা আপনাদের জানাই, তা হলো–
গত সপ্তাহে সিআইটিইউ – র উদ্যোগে “উবার” কোম্পানির মটরগাড়ি নির্দিষ্ট কিছু নম্বরে কল করলে করোনা সংক্রমিত রোগীকে সেবার জন্য পাওয়া যাবে!! যেখানে এম্বুলেন্স যেতে চায়না বা বিশাল অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে সেখানে আয়ত্তের মধ্যে সিআইটিইউ- র এই ভুমিকা সিপিআইএম- প্রতি দায়বদ্ধতার নজির স্থাপন করে।

দেখুন পঃ বাংলার মানুষের সদ্য সমাপ্ত নির্বাচনের রায়কে পূর্ণ সম্মান জানিয়েই বলছি, যে দল বিপুল জনসমর্থন নিয়ে সরকারে বসল এবং যে দল বিরোধী হলো বিধানসভায় আজ দেশের বা রাজ্যের মানুষের জন্য তাদের কি অবস্থান ভাবতে লজ্জাবোধ করছি, কারণ, আমিও এই নির্বাচনে নির্বাচকমণ্ডলীর একজন!! তবে “রেড ভলান্টিয়ার্স ” সদস্যদের উদ্দেশ্যে একটা কথা বলতে চাই, একাজের মধ্যেও রাজনীতি রাখতে হবে!!
যারা রাজনৈতিক দল নয় এধরনের সেবামূলক কাজে যুক্ত সারা বছর, তারাও তাদের সংগঠন বা সংস্থার প্রচার করে। সুতরাং রাজনীতি ব্যাতিরেকে কিছু নেই। যে কাজ করছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেকাজ অবশ্যই মতাদর্শগতভাবে। তাই এই কাজের উপর কিছু সিপিআইএম-র পার্টির চিঠিতে উল্লেখ করা হয় ১৯৪৩ সালে যখন সারা বাংলা ব্যাপী কলেরা ও ম্যালেরিয়া মহামারী রূপ ধারণ করে। হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। তৎকালীন পার্টি চিঠিতে বিস্তারিত উপদেশ দেয় তা আজও অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
ন্যাশনাল বুক এজেন্সি-তে ৫খন্ডে প্রকাশিত ” বাংলার কমিউনিস্ট আন্দোলন : দলিল ও প্রাসঙ্গিক তথ্য ” এইটে পড়া থাকলে ভীষণ ভাবে কাজের ক্ষেত্রে কাজে লাগবে।

শেষ করার সময় সকল “রেড ভলান্টিয়ার্স” সদস্য, তাদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে, এবং বিভিন্ন ভাবে এই কাজের দ্রব্যাদি দিয়ে যারা সহযোগিতা করছেন পরোক্ষভাবে তাঁরাও এই কর্মকাণ্ডের অংশীদার।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।