জেলা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

অক্সিজেন জোগান, মৃতদেহ দাহ করা,বাড়ি স্যানিটাইজ সবকিছুতেই রেড ভলান্টিয়ার


সঞ্জিত দে : ধূপগুড়ি: চিন্তন নিউজ:১৩ মেঃ- গত বছর কেন্দ্র রাজ্য  দুই সরকারের  শাষক দলের জনপ্রতিনিধিরা  ছিলেন লুকিয়ে এবারেও তাই। এবার রাজ্য সরকার  আংশিক  লকডাউন করে দায় সেরেছে। সদ্য নির্বাচন  শেষ করে দুই দল প্রতিনিধি  বৃদ্ধি  করলেও মানুষের  বিপদে দুই দলের প্রতিনিধিরা মুখ লুকিয়েই রয়েছেন।

করোনা ভাইরাসের  শৃঙ্খল  ভাঙতে গত বছর দেশজুড়ে  লকডাউন  পর্বের গোটা  সময় ধরে শহর থেকে গ্রামীণ  কৃষি  এলাকা চা বাগান থেকে বনবস্তির অসহায় ভুখা মানুষকে খাদ্য জোগান দেওয়া ওষুধ  কিনে দেওয়া ১০০ কিলোমিটার  দূরে হাসপাতালে  গিয়ে মূমুর্ষূ রোগীকে রক্তদান করা সহ অনান্য প্রয়োজনীয়  সাহায্য  সহযোগিতা  করে দেওয়া হাট বাজার স্কুল কলেজ জনবসতি  এলাকা স্যানিটাইজ করে দেবার সব ধরনের  কাজ করে দিয়েছে সি পি আই এম  সহ বামপন্থী  সমর্থক  ছাত্র যুবরা। এই সব কাজ করার জন্য দলের কোনো নেতা বা কমিটি  নির্দেশ  দেয়নি। সব কিছুই হয়েছে নিজেদের মতাদর্শ গত শিক্ষার তাগিদে থেকে।নিজেরবাড়িতে বাবার খেয়ে ফুটো পকেটে  সবাই ঝাঁপিয়ে  পড়েছে।এবার করোনা পরিস্থিতি  এ রাজ্যেও  ভয়াল ভয়ঙ্কর  চেহারা নিয়েছে সব  গ্রামশহর আক্রান্ত। মৃত্যুর  সংখ্যা  উত্তরোত্তর  বেড়ে চলছে।

রাস্তায় পাড়ায় মানুষের  দূয়ারে হাজির  শূন্য পাওয়া দলের সমর্থক রেড ভলান্টিয়ার এর সদস্যরা। এই সদস্যদের  দ্বায়িত্ব  এবার অনেক বেশি। অক্সিজেন  জোগাড় করে দেওয়া হাসপাতালে  নিয়ে যাওয়া খাবার দেওয়া এসব করতে হচ্ছে সেই সাথে এবার মৃতদেহ  বাড়ি থেকে  নিয়ে অন্ত্যেষ্টি  করে দিতে হচ্ছে।এই অভিজ্ঞতা জানালেন রেড ভলান্টিয়ার এর সদস্য ডি ওয়াই এফ আইয়ের  ধূপগুড়ি সদর লোকাল কমিটির  সম্পাদক নির্মাল্য ভট্টাচার্য। বৃহস্পতিবার  সকালে  রেড ভলান্টিয়ারের সদস্য কৌশিক দাম ও মনোজ ঘোষের কাছে খবর আসে ১০ নম্বর ওয়ার্ডের  ঘোষ পাড়ায় পঞ্চা ঘোষ নামে এক ব্যাক্তির  বাড়িতেই মৃত্যু  হয়েছে দীর্ঘ  অসুস্থতা জনিত কারনে কিন্তু বাড়িতে তার বড় ছেলে  কোভিড  পজিটিভ  সে কারনে আত্মীয় স্বজন পাড়া প্রতিবেশী  কেউ এগিয়ে আসছে না। মৃত ব্যক্তির ছোট  ছেলে পীযূষ জানিয়েছে ১০ ওয়ার্ডের বর্তমান  কাউন্সিলর  প্রাক্তন  ভাইস চেয়ারম্যানকে এবং বর্তমান  ভাইস চেয়ারম্যানকে ফোন করা হয়েছিল সাহায্যে  করার আবেদন  নিয়ে কিন্ত তাদের থেকে সাড়া মেলেনি। পীযূষ জানায় বর্তমান  ভাইস চেয়ারম্যান  শুধু জানিয়েছেন  সমস্ত ঘটনা  জানিয়ে তাকে হোয়্যাটস অ্যাপ করতে।

এরকম মানষিক  অবস্থা  নিয়ে কিছু করা সম্ভব না দেখে চুপ করে থাকতে হয়।রেড ভলান্টিয়ার এর সদস্যরা  নিজেরাই খবর পেয়ে ছুটে আসে নির্মাল্য ভট্টাচার্য,  সৈকত চক্রবর্তী,  শান্তনুপাল  বলরাম বসাক, দীপাঞ্জন রাহা প্রমুখ। এই রেড ভলান্টিয়ার শববাহী গাড়ি জোগাড়  করে মৃত ব্যক্তির ছোট  ছেলে পীযূষকে সাথে নিয়ে শ্মশানে  যায় এই সময় পাড়ার এক টোটো চালক যুবক ও অন্য আরেক যুবক এগিয়ে এসে যোগ দেয়। মৃতদেহ দাহ করে শ্মশান  থেকে ফিরে রেড ভলান্টিয়ার এর সদস্যরা  ফের মৃতের বাড়িতে গিয়ে সমস্ত বাড়ি স্যানিটাইজ করে দিয়ে নিজেদের বাড়ি ফিরে যায় বিকালে।

দুদিন আগেও স্থানীয়  এক হরিমন্দিরের প্রধান সেবাইত করোনা আক্রান্ত হয়ে মন্দিরেই পড়ে ছিলেন কেউ এগিয়ে আসেনি।খবর পেয়ে রেড ভলান্টিয়ার  মন্দিরে গিয়ে সেবাইতকে উদ্ধার করে হাসপাতালে  নিয়ে যায়। এই সব ঘটনা  দেখেই অনেক মানুষ  বলতে শুরু করেছেন বামপন্থী  এই ছেলেরা না থাকলে এই কঠিন মহামারির বিরুদ্ধে  লড়াই করার সাহস শক্তি যোগাবার আর কেউ নেই পাশে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।