রাজ্য

প্রচারের আড়ালে লোকসঙ্গীত শিল্পী রতন কাহার



রাহুল চ্যাটার্জি: চিন্তন নিউজ:৩০শে মার্চ:-লোকসঙ্গীতের সাথে যুক্ত মানুষজনের কাছে পরিচিত নাম রতন কাহার। বরাবরই বামপন্থী মনের মানুষ রতন কাহার, লাল ঝান্ডা কাঁধে নিয়েই তাঁর গানের মাধ্যমে সমাজতন্ত্রের বার্তা ছড়িয়ে দিয়ে চলেছেন।৮৫ বছরের এই বৃদ্ধ লোকশিল্পী বাংলা লোক সঙ্গীতের জগতে চেনা অনেক গানেরই স্রষ্টা। বীরভূমের সিউড়ির সোনতোর পাড়ার এক চিলতে ঘরেই পরিবার নিয়ে বাস তাঁর। ভাদু গানে তার অবাধ বিচরণ।

ঝুমুর হোক বা প্রভাতী কীর্তন বা লোকগান, রতন কাহারের জুড়ি মেলা ভার। বারো শ’য়ের অধিক লোক গানের রচয়িতা তিনি । কিন্তু নিজে রয়ে গিয়েছেন প্রচারের আড়ালে। অভাবের সংসার। করোনার থাবায় যা আরও জোরালো হয়েছে। লক ডাউনে দুই ছেলেরও কাজও বন্ধ। এখন নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর দশা এই শিল্পীর পরিবারের। এর মাঝেই বাজারে নতুন মোড়কে এসেছে একটি হিন্দী গান, নাম দেওয়া হয়েছে “গেন্দা ফুল”।১৯৭৬ সালে যে গান গেয়ে প্রখ্যাত হয়েছিলেন লোকশিল্পী স্বপ্না সেই “বড়ো লোকের বিটি লো, লম্বা লম্বা চুল….” গানটি ১৯৭২ সালে লিখেছিলেন লোক গানের ভান্ডারী রতন কাহার।

সম্প্রতি বাদশা ও পায়েল দেবের গলায় নয়া ঢঙে বাজারে আসা সেই ‘‘বড় লোকের বিটি লো, লম্বা লম্বা চুল’’ গানটি এখন সোস্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে সকলের মুঠভাষে। সোনী মিউজিক ইন্ডিয়া তাঁদের ইউটিউব চ্যানেলে এই গানটি প্রকাশ করেছে। মুক্তির প্রথম দিনেই এক কোটির বেশি মানুষ এই গান শুনে ফেলেছেন। ফলত, এখন গানটি টিকটক সহ ভারতে ইউটিউবে ১ নম্বর ট্রেন্ডিং—এ চলছে। তবে সৌজন্যের খাতিরে স্রষ্টার নামটুকুও একবারের জন্য আসে নি। এ প্রসঙ্গে অভিমানী শিল্পীর প্রতিক্রিয়া, ‘‘যাক গানটা তো জাগল”। করবেন না আত্মসম্মানের সাথে কোনো আপোস। ছাড়বেন না গানও। হতদরিদ্র শিল্পীর খেদ, ‘‘যত টুকু পেরেছি গান লিখে গেছি। মানুষকে আনন্দ দিতে। আজ আর কলম চলে না। ছেলে মেয়েদের মুখে দুবেলা অন্ন দিতে পারি না।’’ (তথ্য সংগ্রহে সাহায্য করেছেন-রণদীপ মিত্র, ভক্ত ব্যানার্জি)


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।