কলমের খোঁচা

“উগ্ৰ হিন্দু মৌলবাদ এবং মনুষ্যত্ব”


সলিল ঘোষাল, নিজস্ব প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ:০৭/১২/২০২৩:- অধূনা ভারতবর্ষে উগ্ৰ হিন্দু মৌলবাদী কার্যকলাপ ক্রমশঃ বেড়ে চলার পিছনে সবচেয়ে বড় সহায়ক শক্তি হ’ল বাবরি মসজিদ ধ্বংসে তাদের সাফল্য !! অশিক্ষার অন্ধকারে ডুবে থাকা অধিকাংশ মানুষকে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কাজে ব্যবহার করাটা যে কত সহজ–তা আর এস এস খুব ভালোই বোঝে, তারই জ্বলন্ত উদাহরণ ১৯৯২ সালে বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা!! এটা সমগ্ৰ দেশবাসীর লজ্জা!!

কিন্ত প্রশ্ন হ’ল, ওরা এই পথটাকেই বেছে নিলো কেন ?? আমরা মনে করি এটা একটা সাম্রাজ্যবাদী চক্রান্ত, সারা পৃথিবী ব্যাপি ধর্মীয় উগ্ৰবাদককে যত বেশি বেশি করে সক্রিয় রাখা যাবে ততই মানুষের রুটি-রুজির লড়াই এবং সেই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দানকারী রাজনৈতিক শক্তি (পড়ুন কমিউনিস্ট শক্তি) কে দমিয়ে রাখা যাবে। আমাদের ভারতবর্ষের উগ্ৰ হিন্দু মৌলবাদী শক্তির আঁতুড়ঘর আর এস এস এবং তাদের দোসর বি জে পি হ’ল সেই সাম্রাজ্যবাদী শক্তির ই প্রতিনিধি, যাদের মূল লক্ষ্য খেটে খাওয়া মানুষের রুটি-রুজির আন্দোলন যাতে ভারতবর্ষে দানা বাঁধতে না পারে–পাশাপাশি কমিউনিস্ট শক্তির ও যাতে বৃদ্ধি না ঘটে। ঠিক সেই কারণেই যত বেশি সংখ্যক মানুষকে অশিক্ষার অন্ধকারে রাখা যায় এবং তাদের মধ্যে ধর্মীয় ভাবাবেগকে জাগিয়ে তোলা যায়–এটাই ওদের একমাত্র লক্ষ্য !! বলাই বাহুল্য যে আর এস এস ‘র সক্রিয় সমর্থনে নরেন্দ্র মোদীর সরকার ক্ষমতায় আসীন হবার পর থেকে আজ পর্যন্ত একদম ফ্যাসিবাদী কায়দায় সমস্ত গন আন্দোলনের উপর হিংস্র আক্রমন নামিয়ে এনেছে, শুধু তাই নয় সারা দেশ ব্যাপি একটা ভীতির বাতাবরণ তৈরি করে লাগামহীন ধর্মীয় উন্মাদনা/ ব্যক্তিগত এবং দলীয় প্রচার ধারাবাহিক ভাবে চালিয়ে যাচ্ছে !! এর সুত্রপাত কিন্তু সেই ১৯৯২ সালে লজ্জাজনক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের ঘটনা। এই লজ্জাজনক ঘটনা থেকে ওরা যে অক্সিজেন পেতে পারে এবং আগামী দিনে ওরা যে আরো অনেক বড় ঘটনা ঘটাতে পারে, তার অনুমান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী এবং আমাদের পার্টির পলিটব্যুরোর নেতা কমরেড জ্যোতি বসু তখনই করেছিলেন। সেই কারণেই বি জে পি সম্পর্কে ওনার মুখ থেকে “বর্বরদের দল” এই শব্দ টা বের হয়েছিল। আজকে আমরা অনুভব করতে পারছি কমরেড জ্যোতি বসু আজকের দিনে ও কতটা প্রাসঙ্গিক। যাই হোক, এই মুহূর্তে আমাদের দেশের সামনে সাম্প্রদায়িকতা এবং সাম্প্রদায়িকতার সাথে যুক্ত–অশিক্ষা, বেকারি, জাত-পাতের লড়াই সহ নানাবিধ সমস্যার ভ্রুকুটি !! এর থেকে নিস্তার পেতে হলে দেশের প্রত্যেকটি কোনে কোনে গনতান্ত্রিক-ধর্মনিরপেক্ষ শক্তির নেতৃত্বে ব্যাপক গন আন্দোলন গড়ে তোলার দরকার এবং সেই আন্দোলনে শ্রমিক-কৃষক সহ সমস্ত মেহনতি মানুষের অংশগ্রহণের দায়িত্ব আমি মনে করি বামপন্থী তথা কমিউনিস্টদের ই নিতে হবে এবং এটাই তার উপযুক্ত সময়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।