কলমের খোঁচা

রাজনীতি বদলে দিচ্ছে বাংলার সামাজিক প্রেক্ষিত।


গৌতম রায়: চিন্তন নিউজ: ২৫শে আগস্ট:–ভারতের রাজনীতির সাম্প্রতিক পরিবর্তনশীল পটভূমিকায় বাংলার রাজনীতির পটভূমিকা যেমন অদল বদলের মুখ দেখছে ,তেমনি এই রাজনৈতিক পটভূমিকার পরিবর্তনের পরিপূরক হিসেবে সামাজিক পটভূমিরও কিন্তু একটা অদল বদল গোটা দেশব্যাপী ঘটছে । সামাজিক পটভূমির অদলবদল টি কিন্তু বাংলার সামাজিক প্রেক্ষিতেও খুব বেশি প্রকট হয়ে উঠতে শুরু করেছে।
সদ্যসমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনের ফলাফলের নিরিখে দীর্ঘকাল এই বাংলার বুকে সমন্বয়ী চেতনার বিকাশের পাশাপাশি ধর্মের নামে অতিরিক্ত আবেগ ইত্যাদির পর্যাক্রম আমরা দেখেছি।
ধর্মের নামে সেই অতিরিক্ত আবেগকে ক্রমশ একটা ধর্মান্ধতায় পর্যবসিত হয়ে উঠতে আমরা গত কয়েক বছর ধরে দেখে আসছি। বিশেষ করে, গত বছর, আগে এ রাজ্যের রাজনৈতিক পালাবদলের পর ,ক্রমে ক্রমে ধর্ম একটা রাজনীতির উপক্রমে পর্যবসিত হতে শুরু করেছে। অতীতে আমাদের রাজ্যে ধর্মকে ঘিরে মানুষের নানা সংস্কার, ভাবাবেগ ইত্যাদি ছিল। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই ধর্মকে ঘিরে শাসকের তেমন কোনো মাথাব্যথা ছিল না।
ধর্মকে ঘিরে আইন-শৃঙ্খলার প্রশ্নটি ছিল শাসকের কাছে সব থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ।ধর্মীয় ভাবাবেগকে ঘিরে নানা উৎসব অনুষ্ঠান ইত্যাদি তে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার দিকটি ছিল শাসকের কাছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কে কোন্ ধর্ম পালন করছেন ,সেই ধর্মের কী আচার উপাচার ইত্যাদির নিরিখে কোনোরকম আবেগ, শাসকের বা শাসকদলের ছিল না। অর্থাৎ ;ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যে আদর্শ নির্দেশিত হয়েছিল, সেই আদর্শের একটি সার্থক রূপায়ণের প্রয়াস আমরা আমাদের এই রাজ্য পশ্চিমবঙ্গে এতকাল ধরে দেখে এসেছি।
অতীতে কংগ্রেসের শাসনকালে বিধান চন্দ্র রায় প্রফুল্ল চন্দ্র সেন প্রমুখ প্রত্যক্ষভাবে ধর্মপালনের সঙ্গে নিজেদের কখনো সম্পৃক্ত করেন নি। সিদ্ধার্থশংকর রায় নিজে রেড রোডে ঈদের সমাবেশে যোগ দিলেও ধর্মকে ঘিরে হিন্দু আবেগ বা মুসলমান আবেগকে উসকে দেওয়ার ক্ষেত্রে আজকের শাসকের মত প্রত্যক্ষ ভূমিকায় তাঁকে কখনো আমরা দেখতে পাইনি ।
বামফ্রন্টের দীর্ঘ ৩৪ বছরের শাসনকালে, শাসন ক্ষমতার শীর্ষে যাঁরা থেকেছেন, তাঁরা কখনও কোনো অবস্থাতেই ধর্মীয় আচার, আবেগ ইত্যাদির সঙ্গে নিজেদের এতোটুকু ও সম্পৃক্ত করেননি ।রাজ্য প্রশাসনের কর্মকর্তারা সেই সময় সাহস দেখাতে পারেননি কোনো বিশেষ ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে নিজেদের সরাসরি, প্রকাশ্যে সংযুক্ত করতে ।প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশে প্রশাসনের আধিকারিকেরা ব্যস্ত থেকেছেন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের শান্তি-শৃঙ্খলা, সম্প্রীতি বজায় রাখার দিকটিতেই।
ধর্মকে কখনোই সেইসময় রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করতে দেয়া হয়নি এক মুহূর্তের জন্যেও। এই পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হতে আমরা দেখতে শুরু করলাম ২০১১ সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে। যেভাবে তিনি বিশেষ ,বিশেষ ধর্ম সম্প্রদায়ের মানুষদের বিশেষ, বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানে, সেই, সেই ধর্মের পোশাক, আচার-আচরণ ইত্যাদি প্রকাশ্যে পালন করতে লাগলেন, তাতে ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা যে আদর্শ শাসকের প্রতি নির্দিষ্ট করা হয়েছিল, অর্থাৎ ; রাষ্ট্রের কোনো সুনির্দিষ্ট ধর্ম থাকবেনা ,রাষ্ট্র হবে ধর্মনিরপেক্ষ, সেই আদর্শ, সেই চিন্তা ধারা, সেই চেতনা মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে শুরু করল।
রাষ্ট্র সরাসরি ধর্মীয় রীতি-নীতি, আচার-অনুষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত হতে শুরু করল ।এর ফলে এক ধর্মের আচার-আচরণ যখন রাষ্ট্রের শাসক পালন করছেন, তখন অপর ধর্মের মানুষজনদের ভেতরে একটা হীনমন্যতাই শুধু নয়, এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতার মনোভাব, মানসিকতাও তৈরি হতে শুরু করল। শাসকের এই একটি বিশেষ ধর্ম পালনের ভেতর দিয়ে অপর ধর্মের সাম্প্রদায়িক ,মৌলবাদী শিবির খুব সহজেই সাধারণ মানুষ ,যাঁরা সে অর্থে সম্প্রদায়িক ছিলেন না, কিন্তু ধর্মীয় ভাবাবেগ, ধর্মীয় চেতনা তাঁদের মধ্যে ছিল, ধর্মের প্রতি এক ধরনের ভালবাসা তাঁদের মধ্যে ছিল ,সেই সব মানুষদের কে অপর ধর্ম সম্পর্কে খুব সহজেই প্ররোচিত করার সুযোগ পেয়ে গেল ।
শাসকের এই প্রত্যক্ষ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ সার্বিকভাবেই আমাদের দেশের ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধানের মৌলিক পরিকাঠামোটিকে মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হতে শুরু করল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই তাঁর স্বাভাবিক মিত্র আরএসএস এবং তাদের রাজনৈতিক সংগঠন বিজেপিকে সুবিধে করে দেওয়ার জন্য যে ‘প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার প্রয়োগ রাজ্যে ঘটাতে শুরু করলেন, তা পশ্চিমবঙ্গের সামাজিক আবর্তনকে একটা ভয়ঙ্কর নেতিবাচক দিকে ঠেলে দিল।
স্বাধীনতার পর থেকে দীর্ঘকাল ধরে যে পশ্চিমবঙ্গে কার্যত ধর্মের নামে কোনো সামাজিক বিভাজন ছিল না, সেই পশ্চিমবঙ্গের ইমাম-মুয়াজ্জিনদের ওয়াকফের টাকা থেকে সামান্য দু-চার পয়সা দয়া-দাক্ষিণ্য করে একটা মারাত্মক সামাজিক বিভাজনের দিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠেলে দিলেন। এরপর ধীরে ধীরে তাঁর হিজাব পরিহিত ,মোনাজাতের ভঙ্গিমায় ফটোশুট, এই হাজী বিবি চরিত্রে অভিনয়, একদিকে মুসলমান মৌলবাদীদের ভেতরে মৌলবাদী চিন্তা-চেতনার বিকাশে অনেকখানি সাহায্য করল ,অপরদিকে হিন্দু সাম্প্রদায়িক মৌলবাদীদের ভেতরেও সাধারণ মানুষকে মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষদের বিরুদ্ধে প্ররোচিত করতে তার থেকে অনেক বেশি সাহায্য করল ।
এই যে সামাজিক বিভাজনের পরিবেশ মমতা ২০১১ থেকে ২০১৪ এর মধ্যবর্তী সময়ে পশ্চিমবঙ্গে তৈরি করে দিলেন, তা কার্যত বিজেপির ভোট ব্যাংককে সংহত করতে মারাত্মক ভাবে সাহায্য করলো। পরবর্তীকালে নরেন্দ্র মোদির প্রথম দফার পাঁচ বছরের শাসনকালে এই প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতিকে মমতা একদম লাগামহীন মাত্রায় এনে উপনীত করলেন ।আরএসএস – বিজেপি রামনবমীর মিছিল করছে তো, মমতা হনুমান জয়ন্তী পালন করছেন। হিন্দু সাম্প্রদায়িক শিবির জন্মাষ্টমীকে ঘিরে নানা ধরনের প্ররোচনামূলক মিছিল বার করছে ,প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতার প্রতিভূ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই জন্মাষ্টমী ঘিরে নানা ধরনের সাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনা সম্পৃক্ত মিছিল ইত্যাদি করতে শুরু করে দিলেন।
রাম কাহিনীর নায়ককে ঘিরে বাঙালির মনে যে সাধারণ আবেগ ,আবেশ আছে, সেই আবেগকে সাম্প্রদায়িক হিন্দুরা যে কেবল সাম্প্রদায়িক অভিমুখে পরিচালিত করেছেন তা নয় ,তাকে পরিচালিত করেছেন মুসলিম বিদ্বেষের অভিমুখেও। সেই অভিমুখকে আরো বিস্তৃত করে দেওয়ার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৈরি করা প্রতিযোগিতামূলক সাম্প্রদায়িকতা একটা বড় রকমের অনুঘটকের ভূমিকা পালন করল ।
নরেন্দ্র মোদীর প্রথম দফার প্রধানমন্ত্রীত্ব কালে যে সামাজিক বিভাজন তৈরী করে যে ধর্মীয় বিভাজন সংহত হয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বদান্যতায় , তাই ই কার্যত বিজেপিকে এরাজ্যে ১৮ টি আসন পাইয়ে দিতে সাহায্য করেছে।এ রাজ্যে বিজেপির ভোটকে বল্গাহীনভাবে বাড়িয়ে দিতে সাহায্য করেছেন এভাবেই মমতা।
সেই প্রবণতাকে মমতা ভোটের পরেও অত্যন্ত জোরের সঙ্গেই বজায় রেখেছেন। পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শহর গুলি যদি আমরা পরিদর্শন করি, তাহলে খুব সহজেই রাজ্যের শাসক তৃণমূল কংগ্রেসের সহযোগিতায় ধর্মীয় ভাবাবেগে বাড়বাড়ন্তের দৌলতে এমন একটা সামাজিক পরিবেশ আমরা দেখতে পাব ।
এই পরিবেশ প্রকারান্তরে উগ্র রাজনৈতিক হিন্দু সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী শিবির, আরএসএস বিজেপির রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার বিকাশ কেই সাহায্য করছে। বোলপুর শহর গত কয়েক বছরে এই উগ্র ধর্মান্ধ ভাবাবেগ প্রসারের যে যৌথ প্রচেষ্টা বিজেপি এবং তৃণমূলের পক্ষ থেকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে, তাতে এই ধারণাই তীব্র হয়ে উঠছে যে রবীন্দ্রনাথের ঐতিহ্যমণ্ডিত এই শহরটি হয়তো ক্রমে রবীন্দ্রনাথকে মুছে দিয়ে নানা ধরনের হিন্দু দেবদেবীর মূর্তি মন্দির ইত্যাদিতে ভরে যাবে।
বোলপুর স্টেশন থেকে বেরোতেই এখন সকলের নজর কাড়ছে স্টেশনের গা লাগানো একটি বজরংবলীর মূর্তি। মূর্তিটির উপরে সুন্দর ছাউনি ও তৈরি হয়ে গেছে। মন্দিরটিকে আরো সুডৌল করবার জন্য স্থানীয় প্রচেষ্টার অভাব নেই দেখতে পাওয়া গেল ।সাধারণ মানুষদের কাছ থেকে দেদার চাঁদা তোলা হচ্ছে ।এই চাঁদা তোলাকে ঘিরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ অথচ ভয়ে কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চাইছেন না। বীরভূমের মানুষদের ভিতর শাক্ত,বৈষ্ণব , শৈব ধর্মের প্রবাহমান ধারা আছে।
ঐতিহ্যের শহর বোলপুর ,ঐতিহ্যের জেলা বীরভূমে খানিকটা হিন্দিভাষী অঞ্চলের জনপ্রিয় দেবতা বজরংবলী কে ঘিরে এই আদিখ্যেতা নিয়ে ক্ষোভ এবং হতাশা রয়েছে ,অথচ কেন্দ্র এবং রাজ্যের শাসকদের স্থানীয় চামচাদের ভয় কেউ ই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না ।স্টেশন চত্বর থেকে আরো দু পা এগিয়ে আবারো একটি এইরকম বজরংবলীর মূর্তি ও ছোট একটি মন্দির।শান্তিনিকেতনে প্রবেশের মুখে ও অমন একটি মূর্তি ও মন্দির হয়েছে।
এই ধরনের প্রবণতা কিন্তু গত আট, নয় বছরে রাজ্যের জেলার শহর গুলির যে জায়গাতেই থাকুক না কেন, রবীন্দ্রনাথের স্মৃতিধন্য বোলপুর সংলগ্ন এলাকায় ছিল না। বোলপুর- শান্তিনিকেতন এলাকার মানুষদের ভেতরে রবীন্দ্রনাথের মৃত্যুর এতকাল পরেও রবীন্দ্রনাথের মানুষের ধর্ম কিন্তু ছিল অনেক বেশি প্রাসঙ্গিক ।অনেক বেশি সত্য। সেই মানুষের ধর্মে কিন্তু হিন্দু-মুসলমানের কোন ভেদাভেদ ছিল না। রবীন্দ্রনাথের সময়কাল থেকে শুরু করে পরবর্তী সুদীর্ঘ সময় শান্তিনিকেতনের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে হিন্দু-মুসলমান পরস্পর পাশাপাশি থেকেছে ।ব্রাহ্মধর্মের ধারক-বাহক বিশ্বভারতীর এককালের কর্মকর্তাদের রীতিনীতির পাশাপাশি প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ধর্ম বিশ্বাসী মানুষ জনেরাও এখানে থেকেছেন ।তাঁরা তাঁদের বাড়ির অভ্যন্তরে নিজের নিজের বিশ্বাস অনুযায়ী ধর্ম পালন করেছেন। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনো সময় কোনো রকম ভাবেই তাঁদের ধর্মীয় রীতিনীতি ,আচার-আচরণ, আচার-আচরণ সম্পর্কে কোনোরকম বিধিনিষেধ তো দূরের কথা, এতোটুকু লক্ষ্য নজর পর্যন্ত দেয়নি।
সেই পরিবেশ আগামী দিনে কতখানি অক্ষুণ্ন থাকবে তা নিয়ে সাধারণ মানুষের ভিতরে রীতিমতো প্রশ্ন উঠতে শুরু করে দিয়েছে। শুধু বোলপুর স্টেশন ঘিরেই নয় , শান্তিনিকেতন থেকে খানিকটা দূরে গড়ে ওঠা নতুন উপনগরী প্রান্তিক স্টেশনের গায়ে ধরনের বজরংবলীর মন্দির লক্ষ্য করে গেল। গত তিন ,চার বছর আগেও কিন্তু এই ধরনের মন্দির এখানে দেখতে পাওয়া যায়নি।
বিজেপি যত কেন্দ্রে সংখ্যাধিক্য লাভ করেছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যত এখানে হাজী বিবি সেজে ফটোশুট দিয়েছেন ,আর কথায় কথায়, ‘ইনশাআল্লাহ্ ‘ , ‘ মাশাল্লাহ্ ‘ বলে ধর্মীয় ভাবাবেগকে উসকে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, ততোই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে এই ধরনের ধর্মীয় আবেগকে ঘিরে, উদ্যোগ গুলো কে ঘিরে প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হয়েছে ।বিনষ্ট হয়েছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যবাহী বাতাবরণ। ধুয়ে মুছে যেতে বসেছে ধর্মনিরপেক্ষতার সুমহান আদর্শ।
আধুনিক ভারতবর্ষে ধর্মনিরপেক্ষতাকে সংবিধানের মূল স্তম্ভ করার ক্ষেত্রে যাঁদের প্রেরণা ও প্রত্যক্ষ ভূমিকা সবথেকে বেশি ,সেই তিনজন মানুষ ,রবীন্দ্রনাথ ,গান্ধীজি ও নেহরুর স্মৃতিধন্য এই বোলপুর – শান্তিনিকেতনের উগ্র হিন্দু রাজনৈতিক আগ্রাসন কিসের ইঙ্গিত দিচ্ছে তা সচেতন পাঠক কে নিশ্চয়ই আলাদা করে বোঝানোর প্রয়োজন থাকে না।
বোলপুরের রাস্তা গুলিতে এখন রবীন্দ্রনাথের ছবি প্রায় খুঁজেই পাওয়া যায় না ।সর্বত্রই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের নানা ধরনের, নানা ঢঙের কাটআউট ।ঐতিহ্যশালী কঙ্কালীতলা মন্দিরে ঢোকার মুখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অনুব্রত মণ্ডলের কাট আউট আমাদের মনে করিয়ে দেয় শঙ্খ ঘোষের সেই বিখ্যাত কবিতা ‘মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে।’


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।