চৈতালী নন্দী, চিন্তন নিউজ, ২৮ ডিসেম্বর: স্বতঃস্ফূর্ত রাজনৈতিক আন্দোলনের যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে বিতর্কের মুখে ভারতের সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত। গত একমাস ধরে ( সিএএ) নয়া নাগরিকত্ব আইন নিয়ে গণ আন্দোলনের পথে গোটা দেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পথে নেমেছে মানুষ। তাদের পথ দেখাচ্ছে দেশের স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় গুলি এবং বাম নেতৃবৃন্দ। অপরদিকে এই আন্দোলনকে বিভ্রান্ত করে চলেছে তৃনমূল কংগ্রেসের মতো কয়েকটি দল।
এই পরিস্থিতিতে দিল্লিতে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত ‘লিডারশিপ সামিট’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে সেনাপ্রধান বিপিন রাওয়াত মন্তব্য করেন কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সাধারণ মানুষের আন্দোলনকে হিংসার পথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। তিনি আরও বলেন যারা ভূল পথে মানুষকে চালিত করে তারা নেতা হতে পারেন না। বেনজির ভাবে তিনি তাদের সমালোচনা করেন। তাঁর গলায় ছিল ক্ষমতাসীন দলের সুর। তাঁর কথায় মনে হচ্ছিল যে মোদির শেখানো বুলিই তিনি বলছেন।
প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশ বা পাকিস্তানে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের ঘটনার বহু নজির থাকলেও, ভারতের মতো দেশে এধরনের ঘটনা স্বাধীনতার পরে কখনও ঘটেনি। সেনাপ্রধানের রাজনৈতিক মন্তব্য বা সমালোচনা এক বিপজ্জনক প্রবনতা বলে মনে করছেন সিপিআই, সিপিআইএম থেকে কংগ্রেস, যোগীন্দর যাদব থেকে জহর সরকার। এমনকি প্রাক্তন নৌবাহিনীর প্রধান এ্যাডমিরাল এল রামদাসও বলেন, সরকারের পরিস্থিতির কতোটা অবনতি হলে উর্দিধারী সেনাপ্রধান এইভাবে প্রাতিষ্ঠানিক সীমা লঙ্ঘন করতে পারে। এখন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে,ভারত কি তবে পাকিস্তানের পথে চলেছে?
যেসব সাধারণ মানুষ এবং ছাত্ররা দেশের সংবিধান রক্ষার তাগিদে জীবন বাজি রেখে লড়ে যাচ্ছে, তাদেরকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশকে ভেঙে টুকরো করার তকমা দিচ্ছেন। বিরোধীদের কথায় শান্তিপূর্ণ আন্দোলন সংবিধান স্বীকৃত। সেনাপ্রধান যেভাবে তার দিকে আঙ্গুল তুলেছেন তা দেশের পক্ষে অশনিসংকেত। ভবিষ্যতে তার সেনার দখল নেবার অধিকার জন্মাবে, ঠিক পাকিস্তানের মতোই।
সিপিআইএম এর সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির মতে, প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকার ক্ষেত্রে সীমার বেপরোয়া লঙ্ঘন করেছেন উর্দিধারী সেনাবাহিনী শীর্ষ ব্যাক্তিত্ব। এজন্য তাঁর দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চাওয়া উচিত।