সঞ্জিত দে: চিন্তন নিউজ: ৩১ আগষ্ট ঃ- ভ্যাকসিন নিয়ে ধুন্ধুমার তিন শিবিরে আহত ২৯ জন। দুয়ারে সরকারের দুয়ারে ভ্যাকসিন প্রকল্পের সুবিধা নিতে এসে রক্তাক্ত হয়ে গেলেন মানুষ। করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে সরকারি পরিকল্পনার অদূরদর্শিতার কারনে শাষক দলের দলবাজির কারনে তিন শিবিরে তুলকালাম কান্ড ঘটে গেল মঙ্গলবার সকাল থেকে।একজন পুলিশ কর্মী সহ ২৯ জন আহত।আট জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক তাদের দুটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।এর মাঝেই সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সাংবাদিকের সাথে চরম দুর্ব্যবহার করেন এক আই সি। জলপাইগুড়ি জেলার নতুন ব্লক বানারহাটের শালবাড়ি ১ শালবাড়ি ২ এবং সাকোয়াঝোরা ১ গ্রামপঞ্চায়েতের জন্য এই শিবির গুলি করা হয়।সব চাইতে বড় ঘটনা ঘটে শালবাড়ি ১ গ্রামপঞ্চায়েতের দুরামারিতে। এখানে বাজারের মধ্যে অবস্থিত চন্দ্রকান্ত হাইস্কুলে।আগের দিন থেকেই প্রচার হয় সকাল থেকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে প্রথম এবং দ্বিতীয় ডোজের।ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে গ্রামের কৃষিজীবি মহিলা পুরুষ পাশের বনবস্তি চা বাগান এলাকা থেকেও দলে দলে মানুষ এসে ভীড় করতে শুরু করেন।বেলা দশটার মধ্যে হাজার দুয়েক মানুষ স্কুলের গেটের বাইরে পাকা রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে থাকেন।স্কুলের গেটের ভেতরে কয়েকজন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।এর মধ্যেই দেখা যায় শাষক দলের নেতা কর্মী পঞ্চায়েত সদস্য নিজেদের পছন্দের মানুষ দের ডেকে নিয়ে স্কুলের পেছনের গেট দিয়ে মাঠের ভেতর ঢুকিয়ে দেয়। এর জেরে উত্তেজনা ছড়াতে থাকে।ভোর থেকে চরা রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থেকে স্কুলের গেট খোলা না পেয়ে মানুষ উত্তেজিত হয়ে পড়ে।
বেলা দশটার সময় বানার হাট থানার এ এস আই অঞ্জন দে সহ কয়েকজন এসে স্কুলের গেট খুলতেই হুড়মুড় করে মানুষ ঢুকতে গেলে পুলিশ কর্মীরা বাঁধা দিতে গেলে উত্তেজনা তীব্র আকার ধারণ করে।শুরু হয়ে যায় ধ্বস্তাধস্তি। মহিলারা অনেকেই শিশু সহ এবং কিছু বয়স্ক মানুষ মাটিতে পড়ে যান।পরিস্থিতি নাগালের বাইরে চলে যায়।খবর পেয়ে বানারহাট থানার আরও পুলিশ বাহিনী চলে আসে।দুরামারি বাজারের ব্যবসায়ী দের অনেকে ছুটে এসে উদ্ধার কাজ করেন।এই ঘটনা ছড়িয়ে পরতেই অনেকের বাড়ির লোকজন বিভিন্ন গ্রাম থেকে ছুটে আসে। দুরামারি স্কুল এলাকা রক্তাক্ত হয়ে যায়। এখানে পুলিশ কর্মি অঞ্জন দে সহ ২৬ জন আহত হন।এদের মধ্যে চার জন কে বীরপাড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে চার জন কে জলপাইগুড়ি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।খবর পেয়ে জলপাইগুড়ি জেলা পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত সহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ডি এস পি ক্রাইম অতিরিক্ত জেলা শাষক বিবেক ভাসমি জলপাইগুড়ি সদরের এস ডি ও সুদিপ পাল বানার হাটের বিডিও সকলে দুরামারিতে ছুটে আসেন। পাশের গ্রামপঞ্চায়েত শালবাড়ি ২ সেখানকার নাথুয়াতেও আরেক শিবিরে ধ্বস্তাধস্তি তে তিনজন আহত হয়েছেন।সাকোয়াঝোরা ১ গ্রামপপঞ্চায়েতের সজনাপাড়া উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিবিরেও এক হাজারের বেশি মানুষ ভীড় জমান।এখানে উত্তেজনা থামাতে ধূপগুড়ি থানার আই সি সুজয় তুঙ্গা পুলিশ বাহিনী নিয়ে হাজির হন।
এখানে সংবাদ সংগ্রহ করার সময় এক সাংবাদিকের সাথে আই সি দুর্ব্যবহার করেন এবং ছবি তুলতে বাধা দেন । চন্দ্রকান্ত হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক সজল কান্তি সরকার বলেন আমার স্কুলে শিবির করা হবে অথচ আমি জানিনা।জানলে কিছু উদ্যোগ নিয়ে সহযোগিতা করা যেত।পুলিশ সুপার বলেন কেন এই অবস্থা সৃষ্টি হলো তা খতিয়ে দেখা হবে আহতদের খোঁজ নেওয়া হবে।অতিরিক্ত জেলা শাষক জানিয়েছেন আহতদের চিকিৎসা সরকারি ভাবেই করা হবে।আগামী দিনে শিবির করা নিয়ে অন্য পরিকল্পনা করা হবে যাতে এত মানুষ এক সাথে না আসেন।ভ্যাকসিন নিতে আসা কানু কুমার রায় বলেন স্ত্রী কে নিয়ে এসেছিলাম।হুড়োহুড়ির সময় স্ত্রী মাঠের ভেতর পড়ে যায় আমি রাস্তায় থাকি।পরে গিয়ে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।তিনি বলেন স্কুলের গেট খোলা থাকলে সবাই মাঠে লাইন দিয়ে দাঁড়াতে পারতেন এছাড়া শাষক দলের অনেকেই তাদের লোকজন কে স্কুলের পেছনের গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়াতেই উত্তেজনা বাড়ে। নাহলে এসব ঘটনা ঘটত না।এদিন অনেক মানুষ বলেন করোনা নিয়ে সরকার বছর ধরে অনেক বিধিনিষেধ জারি করেছে অথচ সরকারি পরিকল্পনা তেই বিধিনিষেধ উধাও।দুয়ারে সরকারের শিবির করোনা ভ্যাকসিন দেবার শিবির কোথাও বিধিনিষেধ মানার বালাই নেই।সে কারনেই এই ধরনের ঘটনা ঘটে যাচ্ছে।