সন্দীপ সিংহ: চিন্তন নিউজ:৭ই জুলাই:- গত ০৫/০৭/২০২০ পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ হুগলি জেলার অন্তর্গত ব্যান্ডেল মগরা বিজ্ঞান কেন্দ্রের পক্ষ থেকে উত্তর২৪ পরগনা জেলার সুন্দরবন এলাকার ধামাখালি থেকে জলপথে প্রায় একঘন্টা দূরত্বের পথ পেরিয়ে আমফান ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার মা ও শিশুদের ও সংলগ্ন এলাকার সাধারণ মানুষ জনকে নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির ও একই সঙ্গে তাদের মধ্যে ত্রাণ বিলি করা হয়। স্বাস্থ্য শিবিরটি পরিচালিত হয় পিআরসি (PRC) হুগলি শাখার সম্পাদক শ্রী শিবাজী মিত্র ও পিআরসি রাজ্য সংগঠনের সম্পাদক ডাক্তার ফুয়াদ হালিমের তত্বাবধানে স্বাস্থ্যকর্মী নিয়ে। এই স্বাস্থ্য শিবিরে বহু মা ও শিশুদের বিনামূল্যে ওষুধ বিতরণ করা হয়। বহু মানুষকে নিয়ে এই কর্মকান্ডে উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক ডঃ প্রদীপ মহাপাত্র, জনবিজ্ঞান পত্রিকার সম্পাদক ডঃ শ্যামল চক্রবর্তী, নদী গবেষক শ্রী তপন সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা বিজ্ঞান মঞ্চের নেতৃত্ব সৌরভ চক্রবর্তী, সফল সেন, বাসব বসাক, সমর চ্যাটার্জী ও তপন প্রামানিকসহ সন্দেশখালি ধীরেন্দ্রনাথ দত্ত বিজ্ঞান কেন্দ্রের বিজ্ঞান কর্মীরা।
এই মহতী অনুষ্ঠান সংগঠনের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয়। পতাকা উত্তোলন করেন পঃ বঃ বিজ্ঞান মঞ্চ, দ: ২৪ পরগনা জেলা সভাপতি শ্রী সৌরভ চক্রবর্তী। এই মহতী অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মা ও শিশুসহ বিজ্ঞানকর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী সমেত প্রায় ৭০০ জন দুপুরের খাবার গ্রহণ করেন। এদিনের অনুষ্ঠানে আরও কয়েকটি বিজ্ঞান কেন্দ্র ও সংগঠন ত্রাণ সামগ্রী দিয়ে সাহায্য করেন। এই অনুষ্ঠানটি শেষ হবার পর আমরা আরেকটি দ্বীপ, খুলনা আদিবাসী অঞ্চলের ১০০ জনকে খুলনা ঘাটেতেই ত্রাণ সামগ্রী তুলে দিই। আতাপুর হাইস্কুলে ১০০ জন মা, ১০০ জন শিশুকে যেসব জিনিস তুলে দেওয়া হয় তা হল দুধ, বিস্কুট, সোয়াবিন, চিনি, মুসুরির ডাল, সাবান, একটি নতুন শাড়ি ও একটি বড় মশারি। এছাড়াও বাচ্চাদের দেওয়া হয় একটি রং এর বই, একটি রং করার খাতা, প্যাস্টেল, পেন্সিল, ইরেজার, শার্পনার ও একটি বল। খুলনা আদিবাসী অঞ্চলে তুলে দেওয়া হয় বিস্কুট, সোয়াবিন, চিনি, চাল, আটা, চিড়ে, সাবান ও একটি নতুন শাড়ি। একইসঙ্গে দু’জায়গাতেই মানুষের হাতে পুরাতন কিন্তু পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্রচুর জামা কাপড় তুলে দেওয়া হয়।
ওখানকার মানুষজনের একটা বড় অংশ এই আমফান দুর্যোগে প্রায় সব হারিয়েছেন। দেশ-বিদেশের বহু মানুষ, পরিবার ও বিভিন্ন সংগঠন আমাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে তাদের সাধ্যমতো যে অর্থ ও ত্রাণ সামগ্রী আমাদের হাতে বিশ্বাস করে তুলে দিয়েছিলেন, হুগলি জেলার অন্তর্গত ব্যান্ডেল মগড়া বিজ্ঞান কেন্দ্রের কর্মীরা (অবশ্যই দুর্গত অঞ্চলের বিজ্ঞান কর্মীদের সহযোগিতায়) অক্লান্ত পরিশ্রম করে সেগুলো গত দেড় মাস ধরে তা একত্র করে ও সঠিকভাবে দুর্গত মানুষের হাতে পৌঁছে দেবার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন। এতে ওই অঞ্চলের মানুষেরা কতটা উপকার হয়েছে তা ওনারাই বলতে পারবেন। কিন্তু এটা বলা যায় যে, ওই মানুষেরা একা নন, ঘুরে দাঁড়াবার লড়াইয়ে আরো বহু সহমর্মী মানুষ তাদের পাশে আছেন এই বিশ্বাস ও ভরসা জোগাতে পশ্চিমবঙ্গ বিজ্ঞান মঞ্চ ব্যান্ডেল -মগড়া শাখা ও পিআরসি একযোগে নিরলসভাবে এগিয়ে এসেছে।