চৈতালি নন্দী:চিন্তন নিউজ:৭ই জুলাই:- দেশজুড়ে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নজির সৃষ্টিকারী কেরল কোভিড রুখতে নিয়েছে নতুন পদক্ষেপ, যা এদেশের প্রেক্ষিতে বলা চলে নজিরবিহীন। একসময় ভারতের মিডিয়া স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছিল বামরাজ্য কেরল এদেশের ‘রোলমডেল’। এদেশে করোনা সংক্রমণ-এর প্রতিরোধে কেরল সরকার আগামী এক বছরের জন্যে জারি করেছে সতর্কতা মূলক একটি গাইডলাইন। যা আরও একবার কেরলকে করে তুলেছে ভারতের রোলমডেল।
কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পি বিজয়নের জারি করা এই নির্দেশিকায় বেঁধে দেওয়া হয়েছে সারা রাজ্যের জন্যে অভিন্ন ন’টি গাইডলাইন। যা আগামী একবছর, সামনের জুলাই মাস পর্যন্ত, মেনে চলতে হবে রাজ্যের প্রতিটি মানুষকে ।
রাজ্যজুড়ে অভিন্ন এই গাইডলাইনে বলা হয়েছে ;
১) আগামী একবছর সব রাজ্যবাসীকে প্রকাশ্যে মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অফিস বা কাজের জায়গাতেও তা বলবৎ থাকবে।
২) সংক্রমণ কমানোর জন্যে বাড়ির বাইরে বাধ্যতামূলক ভাবে বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব।
৩) প্রকাশ্যে মাস্ক না পড়লে পড়তে হবে ১০০০০ টাকা জরিমানার মুখে।
৪) বিয়ে বা যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে ৫০-এর বেশী অতিথি সমাগম করা যাবেনা।
৫) স্বাভাবিক মৃত্যুর (করোনা নয়) ক্ষেত্রে ২০জনের বেশী সঙ্গে যাবার অনুমতি দেওয়া হবেনা।
৬) যে কোনো সামাজিক জমায়েতের জন্যে নিতে হবে স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি।
৭) আগামী একবছর প্রকাশ্যে থুথু ফেলায় জারি থাকবে কড়া নিষেধাজ্ঞা।
৮) ভিনরাজ্য থেকে যারা কেরলে যাবেন তাদের জাগ্রত-ই প্ল্যাটফর্মে নাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে, না হলে সেই ব্যাক্তি রাজ্যের অন্যত্র যেতে পারবেন না।
৯) যে কোনো দোকানে একসঙ্গে ২০ জনের বেশী ঢুকতে পারবেনা, এছাড়াও বজায় রাখতে হবে শারীরিক দূরত্ব।
দেশের প্রথম করোনা রোগীর দেখা মিলেছিল কেরলে। এরপর এই রোগের সংক্রমণের গ্রাফ বাড়তে থাকে অতি দ্রুত। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী পি বিজয়নের কঠোর নিয়মবিধি পালন এবং সুপরিকল্পিত ব্লুপ্রিন্ট সংক্রমণের সংখ্যা কমিয়ে আনে, যে সাফল্য একসময় কেরলকে সারা দেশের সামনে রোলমডেল হিসেবে চিহ্নিত করে। বর্তমানে দেশজুড়ে রোগটির অতি দ্রুত বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতেই দেওয়া হয়েছে এই গাইডলাইন। এই নিয়মগুলো যাতে রাজ্যবাসী কঠোর ভাবে পালন করে তার জন্যে রয়েছে সরকারি নজরদারি।
এছাড়াও গোটা কেরল জুড়ে শুরু হয়েছে কোয়ারান্টিন সেন্টারে কড়া পাহাড়া। এই নজরদারির জন্যে তৈরী হয়েছে মহিলা পুলিশ অফিসারদের বাইক স্কোয়াড। এগুলোই কেরলকে দেশের বাকি রাজ্যগুলোর থেকে আলাদা করে দিয়েছে। বিরোধিতার কারণেই বামরাজ্য কেরলের এই সাফল্য বিক্রি হয়ে যাওয়া প্রচার মাধ্যম জনসাধারণের কাছে গোপন করে যাচ্ছে।