দেশ

অমৃতকালের ৭৭তম স্বাধীনতা দিবস উদযাপন।মোদী সরকারের নুতন সংযোজন ১৪ আগষ্ট ‘Partition Horror Remembrance Day’উদযাপন।


সীমা বিশ্বাস, আসাম,১৯ আগষ্ট,চিন্তন নিউজ:- গুয়াহাটীর মাছখোয়া প্রাগজ্যোতিষ প্রকল্পে গান্ধী হত্যা কে ন্যায্যতা দেওয়া, এবং নাথুরাম গডসে কে প্রকৃত দেশপ্রেমিক সাজানোর কৌশলী বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। দেশ বিভাজনের বিভীষিকার জন্য দায়ী করলেন গান্ধীজি কে। গান্ধীজি কে দেশদ্রোহী এবং নাথুরাম গডসকে প্রকৃত দেশপ্রেমিক সাজানোর কৌশলী প্রচার প্রর্যায়ক্রমে বাড়িয়ে তোলা হচ্ছে।প্রথম পর্যায়ে সিনেমা,নাটক, পরবর্তী তে পাঠ্যপুথি থেকে নাথুরাম গডসের কলঙ্কিত অধ্যায় মুছে ফেলা,তাকে বীরযোদ্ধা হিসেবে উপস্থাপন করা হয় । হিন্দুত্ববাদী দের প্রচার গান্ধী জি হিন্দুরাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করেছিলেন।তাই গান্ধীজি দেশদ্রোহী আর নাথুরামগডসে হিন্দু রাষ্ট্র গঠনের বিরোধিতা করার জন্য গান্ধীজি কে হত্যা করেছিলেন। হিন্দুত্ববাদী দের মতে নাথুরাম গডসে প্রকৃত দেশপ্রেমিক। তাদের সাজানোএই কৌশলী প্রচারের প্রত্ততর দিয়েছেন বামপন্থী চিন্তাবিদ ডঃ হীরেণ গোঁহাই। দেশ বিভাজনের মধ্য দিয়ে ১৯৪৭সনের ১৫ইআগষ্ট ভারতবর্ষ স্বাধীন হয়।প্রায় ১.৭৫ কোটি মানুষ (উভয় দেশের) গৃহহারা এবং উদ্বাস্তু হয়েছিল।অগণন মানুষ সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষে প্রাণ হারিয়েছিলেন।এই বিভাজনের জন্য সাধারণ মানুষ দায়ী ছিলনা। স্বাধীনতা আন্দোলনে হিন্দু,মুসলিম সহ বিভিন্ন স্তরের সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনের তিনটি ধারা মুলত বৃটিশ সাম্রাজ্য বাদকে উৎখাত করতে সক্ষম হয়েছিল।গান্ধীজির নেতৃত্বে অহিংস আন্দোলন,সশস্ত্র বিপ্লবীদের আন্দোলন এবং সুভাষ বসুর নেতৃত্বে আজাদ হিন্দ ফৌজের সংগ্ৰাম বৃটিশ সাম্রাজ্যের ভিতকে দুর্বল করেছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো দেশ বিভাজনের মধ্য দিয়ে দেশ স্বাধীন হলো কেন?

দেশ বিভাজনের জন্য দায়ী ছিল দ্বিজাতিতত্ত্বের রাজনীতি।কি সেই দ্বিজাতিতত্ত্ব?এই তত্ত্ব হচ্ছে ধর্মের ভিত্তিতে জাতি এবং রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা।

কে এই ইতিহাস বিরোধী, অবৈজ্ঞানিক তত্ত্বের জন্মদাতা? হিন্দু মহাসভা-আরএসএস এবং মুসলিম লীগ। মুসলিম লীগ ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান রাষ্ট্রের দাবি করছিল। অন্যদিকে ১৯৪০ সনে লাহোর অধিবেশনে মহম্মদ আলি জিন্না দ্বিজাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে এই দাবি উত্থাপন করেছিল।তার তিন বছর আগে আহমেদাবাদ অধিবেশনে সভাপতির অভিভাষণে বিনায়ক দামোদর সাভারকার দ্বিজাতিতত্ত্বের পক্ষে দৃঢ় মত পোষণ করেছিলেন।এই তত্ত্ব এবং রাজনীতি দেশবিভাজনের পথ প্রশস্ত করেছিল। স্বাধীনতা আন্দোলনে এই দুই সংগঠনের তত্ত্বকে কাজে লাগিয়ে বৃটিশ সরকার সাম্প্রদায়িক অনৈক্য,ঘৃণা হিংসার বিষবাষ্প ছড়িয়ে দিয়েছিল,তারা পরিণতি দেশভাগ।গান্ধীজি দেশ ভাগ চান নি।হিন্দু মুসলমান উভয়ের দেশ ভারতবর্ষ। ধর্মের ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠনের তিনি তীব্র বিরোধীতা করেছিলেন। সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষকে বন্ধ করার জন্য তিনি অনশনে বসেছিলেন। অবশেষে হিন্দুত্ববাদী নাথুরাম গডসের হাতে গুলিবিদ্ধ হন।গান্ধীজির আত্ম বলিদানের মধ্য দিয়ে ভারতবর্ষ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে গঠিত হয়।গান্ধীজির বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ওদেশের জন্য আত্ম বলিদান ভারতবাসী চিরদিন মনে রাখবে।হিন্দু ত্ববাদীদের মিথ্যা প্রচার ইতিহাস বিকৃতি করে জাতির পিতা মহাত্মা গান্ধী কে দেশদ্রোহী সাজানোর অপচেষ্টা ব্যর্থ করার আহ্বান চিন্তাবিদ ডঃ হীরেণ গোঁহাইর।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।