বিদেশ

প্যালেস্টাইন ও ইজরায়েল যুদ্ধের উৎস সন্ধানে…


চিন্তন প্রতিবেদক চৈতালি নন্দী ১২/১০/২০২৩:- মার্কিন ও ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদকে হতচকিত করে শুরু হোলো প্যালেস্টাইনের হামাস যোদ্ধাদের দুঃসাহসিক ও স্পর্ধিত ইজরায়েল আক্রমণ।মাত্র ছয়দিন আগে গাজার উত্তর সীমান্ত দিয়ে অতর্কিতে ইজরায়েল ভূখণ্ডে আক্রমণ চালায় হামাস বাহিনী। ৭৫ বছরের লাগাতার আক্রমণ ও দখলদারির বিরুদ্ধে প্রতিশোধেই এই হঠকারী হামলা। পরমাণু শক্তিধর ইজরায়েলের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে সামরিক শক্তিতে দূর্বল হওয়া সত্ত্বেও কোন্ পরিস্থিতিতে হামাস বাহিনীর এই হঠকারী আক্রমণ তার প্রেক্ষাপটে একটু নজর দিতে হবে।
১৯৪৮ সালের পর এই প্রথমবার ইজরায়েলের লাগাতার আক্রমণ ও দখলদারির জবাব দিতে প্যালেস্টাইনের যোদ্ধারা ঢুকে পড়ে ইজরায়েলী ভূখণ্ডে। রীতিমতো পরিকল্পনা করে প্যালেস্টাইনের ভূখন্ডকে বিভাজন করে তৈরি হয়েছিল ইজরায়েলের ক্ষত যা থেকে প্যালেস্টাইনের রক্ত ঝরেছে প্রতিনিয়ত। আরব ভাষাভাষীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লঙ্ঘন করে তারা স্বাধীনতা নয়, পেয়েছিল শুধু ই স্বায়ত্বশাসনের অধিকার। শুরু থেকেই ব্রিটিশ মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের হয়ে ব্যাট ধরেছিল ইজরায়েল।১৯৬৭ সাল থেকে ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক,পূর্ব জেরুজালেম গাজা স্ট্রীপ বলপূর্বক দখল করে রেখেছে ইজরায়েল। একথা আন্তর্জাতিক বিচারালয়ও স্বীকার করে নিয়েছে। ২০০৭ থেকে ১৫ বছরে পাঁচ বার ভয়ঙ্কর ইজরায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র, বোমাবর্ষণ,রকেটহানা, সামরিক দখলদারিতে প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিনত হয় গাজা।
প্রচুর সেনা ও নৌবাহিনী সহযোগে আক্রমণ শানিয়েছে ইজরায়েল। আমেরিকা তার সামরিক সম্ভার নিয়ে ইজরায়েলের সমর্থনে দাঁড়িয়েছে। প্রকৃতপক্ষে এই মার্কিনি অস্ত্রভান্ডারই ইজরায়েলের মূল চালিকাশক্তি। সঙ্গে রয়েছে ব্রিটেন, ইউক্রেন, জার্মানি, ইটালি সহ ন্যাটোভুক্ত বিভিন্ন পশ্চিমী দেশ। অপরদিকে প্রথম থেকেই প্যালেস্টাইনের পক্ষে রয়েছে ইরান। ইজরায়েলের দখলদারি অবৈধ স্বীকার করে নিলেও মার্কিনি ভেটোর জোরে অবিরত আইন লঙ্ঘন করে চলেছে ইজরায়েল।
দেশের স্বাধীন বিদেশনীতি কে অগ্রাহ্য করে সরাসরি ইজরায়েলের পক্ষে সমর্থন জানিয়েছে ভারত, যা স্বাধীনতা পরবর্তী বিদেশনীতির ধারাকে লঙ্ঘন করেছে। প্রকৃতপক্ষে মার্কিন তোষণই এর মূল কারণ। ভোট রাজনীতির স্বার্থে কৌশলগত ভাবে খাড়া করা হয়েছে মেরুকরণের তত্ব। বর্বরোচিত ইজরায়েলি হানার বিরুদ্ধে সম্পূর্ণ নীরব ভারত।
বিশ্বজুড়ে পরিবর্তন হচ্ছে শক্তির ভারসাম্য। ডি- ডলারাইজেসনের চাপ, ব্রিকসের আবির্ভাব, নতুন শক্তিসাম্য….ডলারের নির্ভরতা কাটিয়ে বিকল্প মূদ্রার সন্ধান ক্রমেই পাল্টে দিচ্ছে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি। ‘ঠান্ডাযুদ্ধ’ উত্তরকালে আপাতভাবে সামরিক উত্তেজনা প্রশমনের ফলে অস্ত্র ব্যবসায় মন্দা দেখা দেয়।এই খরা থেকে উত্তরণের লক্ষ্যেই সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি, যার পরিনতি ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ। এর জন্যে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু কে দায়ী করেছে সে দেশের কমিউনিস্ট পার্টি ও বামপন্থী রাজনৈতিক দল। যদিও একমুখী মার্কিনি প্রচার তার অভিমুখ ঘুরিয়ে দেবার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।