রাজ্য

বাঁশের সেতু ভেঙ্গে সদ্যজাত শিশু পড়ল কাঁসাই নদীতে


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ৮ সেপ্টেম্বর: মেদিনীপুর জেলার ডেবরায় বাঁশের সেতু থেকে কাঁসাই নদীতে ভেঙ্গে পড়ল প্রসুতি সহ তার সদ্যজাত কন্যা। জন্মের পরেই বাচ্চাটা দেখল পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের জোয়ার। ৯ বছর ধরে রাস্তা বানাতে ব্যর্থ সরকার। ডেবরায় লোয়াদাতে কাঁসাই এর উপর তৈরী থাকা কংক্রিটের সেতু আজও অকেজো। আর গাড়ি নিয়ে নদী পার হতে গিয়ে বাঁশের সেতু ভেঙ্গে প্রসুতি মাকে নিয়েই মারুতি পড়ল নদীতে।

সরকার যে কতটা অপদার্থ তার চরম সাক্ষী রইলেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরা থানার সদ্য মা হওয়া এক মহিলা। সন্তান হয়েছে পাঁচ দিন আগে তারপর ভাইয়ের সঙ্গে বাপের বাড়ী ফিরছিলেন দাসপুর থানার কুলদা গ্রামের বাসিন্দা দেবদাস অধিকারীর স্ত্রী মামনি অধিকারী। বাচ্চা হওয়ার পর বৃহস্পতিবার মামনির ভাই রাজু অধিকারী একটা মারুতি ভাড়া করে বোন আর তার বাচ্চাকে নিয়ে বাগুয়ানে মামনির বাপের বাড়ী যাচ্ছিল। পথে সেতু ভেঙ্গে এই বিপত্তি। ঘাট থেকে অল্প দূরত্বে হওয়ার জন্য আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করেন তারপর অন্য রাস্তা দিয়ে ঘুরে প্রায় পাঁচ ঘন্টা পর তারা বাড়ী ফেরেন।

এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার মানুষ। কংসাবতীর ঘেরাটোপে থাকা চারটি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৭০টি গ্রামের প্রায় আড়াই লক্ষ মানুষ এভাবে প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সেতু পারাপার করেন। একটা সেতু আছে প্রায় ১২ বছর ধরে। শুধুমাত্র একটা সংযোগকারী রাস্তা নেই, তাই মানুষের এই দূর্ভোগ। ২০১১সালের নির্বাচনী প্রচারে এসেছিলেন তখনকার বিরোধী নেত্রী। ক্ষমতায় আসার সাথেসাথেই এই রাস্তা তৈরী করে দেবেন বলে ভোট চেয়েছিলেন, আর সেই আশাতে বিশ্বাস করে মানুষ ডেবরায় জিতিয়েছিলেন।

তারপর কমবেশি ৫ টা ভোট হয়ে গেছে, কিন্তু রাস্তা হয়নি। ২০০৯ সালে সেতুর কাজ শেষ করেছিল বাম সরকার। তখন মানুষ স্বেচ্ছায় জমি দিয়েছিলেন। কিন্তু সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় এই এলাকার মানুষকে জমি না দেওয়ার জন্য ক্ষেপিয়ে তোলা হয় যাতে তারা জমি না দেয়। পেছনে ছিলেন তখনকার তৃনমূল নেতারা। আজ সেই ফাটা বাশে তারাও ক্ষতবিক্ষত। জমি এখন সরকার কিনে নিতে চাইছে, কিন্তু তাতে রাজি হচ্ছে না দুই অনিচ্ছুক ব্যাক্তি। আর তাতেই বিশ বাঁও জলে সেতুর কাজ। সেতুটি সেইসময় করতে দিলে আজ মানুষের ভোগান্তি কমতো, আর সদ্যজাত মেয়ে ও তার মা’কে এই বিপদে পড়তে হত না।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।