রাজ্য

উপেক্ষিত সমাজবন্ধু


শ্রীমন্ত মুখার্জ্জী:চিন্তন নিউজ:৪ঠা এপ্রিল:–করোনা’ করাল গ্রাসে সারা পৃথিবী বিধ্বস্ত। এই করোনা’র বিরুদ্ধে লড়াইয়ে যে সব সৈনিক লড়াই করছেন তাদের প্রথমে কুর্নিশ জানাই, ডাক্তারবাবু, সিস্টার, সাফাইকর্মী, ল্যাবরেটরি কর্মী, শুধু এঁরাই নন, এ়ঁদের সাথে এই লড়াইয়ে অবর্তীর্ণ পুলিশ, সাংবাদিক ও প্রশাসনিক ব্যাক্তি সহ সাধারণ মানুষ সকলকেই।

এছাড়াও আর এক দল সৈনিক যারা নিঃশব্দে কাজ করে চলেছে তারা “গ্রামীণ স্বাস্থ্য পরিসেবক” বা “কোয়াক ডাক্তার”। এরা কোন ভিন গ্রহের বাসিন্দা এলিয়েন নন, বা শরীরের অপ্রয়োজনীয় অঙ্গ অ্যাপেনডিক্স নন। বরং বলতে পারেন সমাজে উপস্থিত উপকারী ব্যাকটেরিয়া। এই করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এঁদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সে সচেতনতা বাড়াতে হোক বা সরকারী নির্দেশাবলি গ্রামের সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রচারের কাজে। এই সময় “কমন কোল্ড এন্ড ফ্লু” বা “সাধারণ সর্দি জ্বর ” খুব স্বাভাবিক। যা নিয়ে ডাক্তারবাবু একটা প্রচলিত বক্তব্য আছে, এই রোগে ঔষধ খেলে সম্পূর্ণ সুস্থ হতে সাত দিন লাগে আর ঔষধ না খেলে এক সপ্তাহ লাগবে। কিন্তু মানুষ এই করোনা আতঙ্কে সাধারণ সর্দি জ্বর নিয়ে ডাক্তারবাবুদের কাছে হাজির। করোনা লড়াইয়ে ডাক্তারবাবুরা দিন রাত এক করে লড়াই করছেন হাসপাতালে, তাদের পক্ষে এই লাইন দিয়ে সাধারণ সর্দি জ্বরের রোগী দেখা সম্ভব? তাহলে মানুষ যাবে কোথায়? কোথায় গেল এই রোগীরা ?

এখানেই শুরু এই ব্রাত্য সৈনিকদের ভূমিকা, যারা চিরদিন উপেক্ষিত থেকে গেলেন । একমাত্র এঁদের নিয়ে গবেষণা করা ডাক্তার অভিজিৎ চৌধুরি ছাড়া কেউ এঁদের নাম মুখেও আনেন নি বা আনেন না। এই মূহুর্তে যা়ঁরা সচেতনতা ও সরকারি নির্দেশাবলি সাধারণ মানুষকে বোঝাতে বিরাট ভূমিকা পালন করছে, যা তারা টিভি, খবরের কাগজ ও সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জেনে। সাধারণ সর্দি জ্বর নিয়ে মানুষ তাদের চেম্বারে গেলে তারা কি করবে সেটা টিভি, খবরের কাগজ ও সোশ্যাল মিডিয়া থেকে শিখে তাদের পুরাতন অভিজ্ঞতা দিয়ে মানুষের চিকিৎসা করে চলেছে। তারা যদি এই পরিষেবা না দিতেন, তাহলে প্রতিদিন অতিরিক্ত কম বেশি আরো এক কোটি মানুষের পরিষেবা হাসপাতালগুলিকে দিতে হ’ত ।যার ফলস্বরূপ হাসপাতালের বাইরে দু কিমি দীর্ঘ রোগীদের লাইন পড়তো। কেউ এঁদের ভূমিকা স্বীকার না করলেও গ্রামের সাধারণ মানুষের কাছে এঁরাই ডাক্তারবাবু।

যাঁদের কাছে কোন পিপিই কিট নেই, যাঁদের জীবনের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। এইসব জেনেও টিভি দেখে নিজের মতো সুরক্ষিত করে লড়াই করছেন এই কোয়াক ডাক্তাররা। কেউ স্বীকার করুক বা না করুক গ্রামের মানুষের ডাক্তার বা বিপদের বন্ধু এরাই। তাই এই লড়াকু সৈনিকদের সেলাম রইল।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।