শিক্ষা ও স্বাস্থ্য

নিখোঁজ প্রায় ছ’শো প্রজাতির গাছ


সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ১৪ জুলাই: বিভিন্ন প্রজাতির প্রানী বিলুপ্ত হওয়ার খবর প্রায়ই শোনা যায়। আর এই তালিকা বেশ দীর্ঘ। সাধারণত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই প্রজাতি বিলুপ্তি হওয়ার বিষয়টি সবসময় আলোচিত। ঠিক কত প্রজাতি বিলুপ্ত হয়েছে এখনো পর্যন্ত তার সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায় নি। এবার সেই বিলুপ্তির তথ্য দিচ্ছেন গবেষকরা। সম্প্রতি এক গবেষনায় জানা গেছে গত আড়াইশো বছরে প্রায় ছশো প্রজাতির গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে পৃথিবী থেকে।

বিবিসি জানাচ্ছে বৃক্ষ প্রজাতির এই বিলুপ্তির তথ্য ভবিষ্যৎ বিলুপ্তি ঠেকাতে বড় ধরনের সহযোগীতা করতে পারে।। এই বিষয়ে স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয় এর ডঃএলিস হামফ্রিস বলেন, “কোন কোন উদ্ভিত পৃথিবী থেকে বিলুপ্ত হয়েছে তার তালিকা তৈরী করতে এটাই প্রথম গবেষনা। শুধু তাই নয়, এই গবেষনায় প্রজাতিগুলোকে নির্দিষ্ট করার পাশাপাশি বিলুপ্তির স্থান এবং কতো তাড়াতাড়ি তারা বিলুপ্ত হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট তথ্য উঠে এসেছে।” গবেষণা বলছে, তথ্য অনুযায়ী এই বিলুপ্তির বেশীর ভাগটাই ঘটেছে দ্বীপাঞ্চল ও গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে। এখানেই বড় বড় গাছের অবস্থান। বিশেষত কাঠ হয় এমন গাছের সংখ্যা এসব অঞ্চলে বেশী।

ব্রিটেন এর রয়াল বোটানিক গার্ডেনস কিউ স্টকহোম বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এই গবেষণা করেন। গত আড়াইশো বছরে পৃথিবী থেকে পাঁচশো একাত্তর প্রজাতির উদ্ভিদ হারিয়ে গেছে। এই একই সময় পশুপাখি ও সরীসৃপ মিলে বিলুপ্ত প্রজাতির সংখ্যা দুশো সতেরো। এই বিষয়ে একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে “নেচার ইকোলজি এন্ড ইভোলিউশন” জার্নালে।

গবেষকরা মনে করছেন এই বিলুপ্তির পেছনে বেশীরবভাগ ক্ষেত্রে দায়ী মানুষ। বিভিন্ন প্রজাতির বিলুপ্তির গতি শুধু মানুষের উপস্থিতির কারণেই বেড়ে গেছে পাঁচশো গুন। এর উদাহরণ দক্ষিন আমেরিকার চিলি থেকে চন্দন গাছ হারিয়ে গেছে শুধুমাত্র প্রসাধন কাজে অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে।

বর্তমানে প্রকৃতি ধংসের কাজ আগের তুলনায় বেড়ে গেছে। আবার একটা আশার কথা এমন অনেক প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গেছে যা বিলুপ্ত হয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল। উদ্ভিদ প্রজাতির বিলুপ্তি ঠেকাতে বেশ কিছু প্রস্তাব রেখেছেন গবেষকরা। তার মধ্যে রয়েছে পৃথিবীর সব উদ্ভিদের রেজিস্ট্রেশন করানো, উদ্ভিদ এর নমুনা সংরক্ষণের ব্যাবস্থা করা ও অবশ্যই শিশুদের সাথে উদ্ভিদের পরিচয় করানো।

আর একটি আশংকার কথা পৃথিবীরর ৪০% উভচর প্রানী বিলুপ্তির পথে। এক তৃতীয়াংশ সামুদ্রিক স্তন্যপায়ী প্রানী, হাঙর, কোরাল হারিয়ে যাওয়ার পথে। ১০% কীটপতঙ্গ বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে। এর ফলে বোঝা যাচ্ছে এই দুনিয়া কি ভয়ংকর পরিনতির দিকে এগিয়ে চলেছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।