চৈতালি নন্দী, চিন্তন নিউজ, ১৪ জুলাই: গত লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্র ও রাজ্যের শাসকদল অনেক বড় বড় প্রতিশ্রুতির সঙ্গে গোন্দলপাড়া জুটমিল খোলার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সাধারণ মানুষ সহ জুটমিল শ্রমিকদের থেকে ভোট প্রার্থনা করেছিল। নাম কা ওয়াস্তে ক’দিনের জন্যে জুটমিল খোলাও হয়েছিল সাধারণ মানুষকে বোকা বানানোর জন্যে। এতে শ্রমিকরা না পেলেন কাজ, না হোলো কোনো উৎপাদন। উদ্দেশ্য পূরন হতেই কয়েকদিনের মাথায় বন্ধ করে দেওয়া হোলো গোন্দলপাড়া জুটমিল। এতে কর্মহীন হলেন প্রায় পাঁচ হাজার শ্রমিক এবং অবসর কালীন সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হলেন প্রায় তিন হাজার শ্রমিক। এইসব কর্মহীন শ্রমিকরা এখন অবর্ণনীয় দূর্দশার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। কেউ কেউ বাধ্য হয়ে পেটের দায়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হয়েছেন।
এইরকম চরম অসহনীয় দূর্দশার মধ্যে অবিলম্বে মিল খোলার দাবীতে সংযুক্ত নাগরিক কমিটির উদ্যোগে শ্রম দফতরে ডেপুটেশনে সামিল হন হাজার হাজার শ্রমিক ও তাদের পরিবার। এই ডেপুটেশনের সূত্রেই গত ২২শে জুন জুটমিলের গেটের সামনে নাগরিক কনভেনশন এর আয়োজন করা হয়। জুটমিল খোলা সহ আরও ছয় দফা দাবি পেশ করা হয়।
এই কনভেনশনে মিল মালিকের লাগামহীন দূর্নীতি, রাজ্যের শ্রম দফতরের অপদার্থতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের পাটশিল্পের প্রতি চূড়ান্ত অবহেলা ও একপেশে নীতি নিয়ে আলোচনা হয়। আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল ২০০৯এর পর বিভিন্ন অজুহাতে যেমন কখনও বাজার মন্দা, তো কখনও কাঁচা মালের অভাব, আবার কখনও শ্রমিক অসন্তোষ এর অজুহাতে বার বার লকআউট এর সম্মুখীন হয়েছে এই শতাব্দী প্রাচীন জুটমিলটি।
সংযুক্ত নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে সরকারের কাছে কয়েকটি দাবি পেশ করা হয়েছে। তার মধ্যে অবিলম্বে মিল খোলা, শ্রমিকদের চাকরির নিরাপত্তা, গ্রাচুয়িটি পেনশনের সুযোগ সুবিধা সহ মিল বন্ধ থাকার ভাতা, অন্তোদয় যোজনার কার্ড, শ্রমিকদের নাগরিক সুযোগ সুবিধা গুলিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। একথা একদম ঠিক যে, কেন্দ্রীয় সরকারের ত্রুটি পূর্ণ শিল্পনীতি এবং পাটশিল্পের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ পশ্চিমবঙ্গের পাটশিল্পকে এই সর্বনাশের দোরগোড়ায় পৌছে দিয়েছে।