দেশ

জাতীয় বিজ্ঞান মনস্কতা দিবস


অভিজিৎ চ্যাটার্জি, হুগলী: চিন্তন নিউজ:২০শে আগস্ট:- অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার, সামাজিক কু-আচারের বিরুদ্ধে  বিজ্ঞান চেতনার প্রকাশে সংগঠিত উদ্যোগ গ্রহণ করে ছিলেন মহারাষ্ট্রের একজন ডাক্তার। নাম তার নরেন্দ্র দাভোলকার। ধর্মব্যবসায়ীরা দাভোলকারের এই কাজকে মেনে নিতে পারেনি। ২০১৩ সালে ২০ শে আগস্ট সকালে উগ্রবাদীদের হাতে দাভোলকার খুন হলেন। ২০০৫ সালে উগ্রবাদীরা খুন করলেন গোবিন্দ পানসারে- কে। তিনি অসবর্ণ বিবাহের পক্ষে সওয়াল করতেন। ওনার অপরাধ শিবাজী সম্পর্কে বিকৃত প্রচারের বিরুদ্ধে সত্য-নির্ভর যুক্তিনিষ্ঠ ঐতিহাসিক প্রবন্ধ রচনা করেছেন। সেই বছরেই উগ্র সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদীদের হাতে খুন হলেন এম এম কালবুর্গি — যিনি কর্ণাটকের দ্বাদশ-ত্রয়দশ সামাজিক ধর্মীয় সংস্কার আন্দোলনের ইতিহাস চর্চা করতেন। ধর্মান্ধতা ও ধর্মীয় মৌলবাদী আগ্রাসনের বিরুদ্ধে অকুতোভয় স্বাধীনচেতা সাংবাদিক গৌরী লঙ্কেশকে ২০১৭ সালে নিজ বাসভবনে গুলি করে হত্যা করা হয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে হত্যাকারী হিসেবে অভিযুক্ত সনাতন হিন্দু সংস্থা নামক ধর্মীয় উগ্রবাদীদের দিকে।

শুধু হত্যাকাণ্ড নয়, আক্রমণ করা হচ্ছে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বকে, আক্রমণ যুক্তিবোধের উপর, সহিষ্ণুতা ও আমাদের দেশের বহুত্ববাদী সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের উপর। এই ধর্মীয় উগ্রবাদীদের পরিকল্পিত প্র‍য়াসের লক্ষ্য ইতিহাসের বিকৃতি, বিজ্ঞানের বিকৃতি, পাঠ্যপুস্তকে সিলেবাসের বিকৃতির মাধ্যমে ধর্মীয় বিভাজন, ধর্মান্ধ সাম্প্রদায়িক ঘৃণ্য প্রচার ও গুজব ছড়িয়ে গণহত্যা। যারাই ধর্মান্ধতা, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরোধিতা করছেন তাঁদের উপর আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে – জুটছে ‘দেশদ্রোহী’ র তকমা।

ভারতের সংবিধানের ৫১ এ (এইচ) ধারায় বিজ্ঞান মনস্কতা, মানবতা, অনুসদ্ধিৎসার কথা আছে। সংবিধানের প্রস্তাবনায় আছে ‘ সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র’র কথা। সংবিধানে দেওয়া অধিকারগুলো রক্ষা হচ্ছে না।

স্বাভাবিকভাবে, দেশকে রক্ষা, দেশের সংবিধানকে রক্ষা এবং দেশের মানুষের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা গড়ে তুলতে ডাঃ নরেন্দ্র দাভোলকরকে হত্যার দিনে জাতীয় বিজ্ঞান মনস্কতা দিবস পালন করবেন সারা দেশের মানুষ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।