কাকলি চ্যাটার্জি:চিন্তন নিউজ:১৩ই এপ্রিল:- একদিকে কোভিড১৯ এর আক্রমণ, লকডাউনের কারণে বিধ্বস্ত অর্থনীতি, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার জন্য একদল পেইড লুম্পেনবাহিনী, তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে নতুন (?) এক ব্যাধি করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যুর তথ্যলোপাট, তথ্য বিকৃত করা অথবা চেপে যাওয়া।
যে ভাইরাসের ওষুধ বা প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি—-হাইড্রোক্সিক্লোরোকুইনের মাধ্যমে এই ভাইরাসের সঙ্গে যুদ্ধে সামিল অসংখ্য ডাক্তার বন্ধু, নার্স ও স্থাস্থ্যব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একাধিক মানুষ। অসংখ্য ধন্যবাদ যাঁরা নিজের জীবন ও পরিবারকে অগ্ৰাহ্য করে এই কঠিন পরিস্থিতিতে যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ করে চলেছেন। প্রয়োজনমত পিপিই, মাস্ক, স্যানিটাইজারের অপ্রতুলতাসত্ত্বেও যেভাবে সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি নিয়েও ওঁরা কাজ করে যাচ্ছেন তা সত্যিই প্রশংসনীয়।
কিন্তু সমস্যা অন্য জায়গায়। কোভিড১৯ জব্দ প্রায় হয়েই গেছে! গোটা বিশ্ব না পারুক পশ্চিমবঙ্গ তা করে দেখিয়ে দিয়েছে করোনা জনিত মৃত্যু তাই ৫ এই থমকে আছে (যদিও তা আসলে ১৫ অতিক্রম করে গেছে)। যে মিথ্যার আশ্রয় নিতে বাধ্য করা হচ্ছে চিকিৎসকদের, এই প্রবণতা মারাত্মক। রাজ্যেরই বিভিন্ন দপ্তরের তথ্যে অমিল, কেন্দ্রের বক্তব্যের সঙ্গে ও ফারাক বর্তমান। এই অসুখে মৃত্যুর হার অত্যন্ত কম কিন্তু মারাত্মক ছোঁয়াচে এবং যেটা প্রয়োজন প্রচুর পরিমাণে সাধারণ মানুষের টেস্ট করা। রাজ্য সরকারের দুর্বলতা তারা গুরুত্ব না বুঝে র্যাপিড কিটের বরাত দেয়নি সময়মতো। পর্যাপ্ত কিটের অভাবে র্যাপিড টেস্ট করা সম্ভব হচ্ছে না। নিজেদের অপদার্থতা ঢাকতে আশ্রয় নিতে হচ্ছে মিথ্যাচারের। এর ফলে সংক্রমণ আরও বাড়বে। রোগের গুরুত্ব যদি সঠিকভাবে বোঝানো না যায় তাহলে মানুষ সচেতন হবেন কেন? বড়গাছিয়ার (হাওড়া জেলার) কোভিড১৯ এ আক্রান্ত হয়ে এক বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন, মৃত্যুর পর নবান্নের নির্দেশে ডেথ সার্টিফিকেটে তা লেখা হলো না। আমতার এক ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী এনআরসি র কারণে মৃত্যুবরণ করেন করোনা আক্রান্ত হয়ে। করোনা রোগীদের পাশাপাশিই ছিলেন তিনি। তবুও স্বীকার করা হয়নি। রাতারাতি মৃতদেহ গ্ৰামে নিয়ে গিয়ে দাহ করা হয়। ভয়ে সিঁটিয়ে আছেন এলাকার মানুষ কিন্তু প্রশাসনের ভয়ে মুখ খুলছেন না কেউ।
একই প্রবণতা হাওড়া জেলা হাসপাতাল, আর জি কর এর ক্ষেত্রেও। এজন্যই সেখানকার ডাক্তার, নার্সরা কোয়ারেন্টাইনে। এই লুকিয়ে যাওয়ার ভয়ংকর অভিমুখ যদি বদলানো না হয় তাহলে এমন এক সময় আসবে যখন করোনা আক্রান্ত রোগী অথবা অন্যান্য জরুরী পরিষেবা দেওয়ার জন্য ডাক্তার অমিল হয়ে যাবে। অবিলম্বে সরকারের উচিৎ প্রকৃত তথ্য সাধারণের কাছে তুলে ধরা যাতে সকলেই সজাগ হয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াইয়ে সৈনিক হয়ে পরাজিত করতে পারা যাবে এই মারণব্যাধিকে।