দেশ বিদেশ

লক ডাউন এর জেরে সংকটের মুখে শিল্পক্ষেত্র


গোপা মুখার্জী :চিন্তন নিউজ:৪ঠা এপ্রিল:–অতিমারী কোবিদ-19 এর জেরে সারা বিশ্ব জুড়ে চলছে ভয়ংকর যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি । লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা । বাড়ছে মৃত্যুর সংখ্যাও । ভারতেও আক্রান্তের সংখ্যা আড়াই হাজারের উপর ছাড়িয়ে গেছে । মৃত্যু হয়েছে প্রায় সত্তর জনের । এমতাবস্থায় করোনা ভাইরাস রুখতে সারা দেশ জুড়ে চলছে লক ডাউন । আর এই লক ডাউন এর জেরেই ভয়ংকর সংকটের মুখে পড়েছে শিল্প ক্ষেত্রে । বিশেষ করে অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে সমস্ত শ্রমিক রা কাজ করতেন তাদের জীবন আজ এক বিপজ্জনক অনিশ্চয়তার মুখে । করোনা কাঁটায় রক্তাক্ত, বিধ্বস্ত দিনমজুর । দেশের প্রায় ১৩ কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক কাজ হারানোর আশঙ্কায় ।

সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়েছে নির্মাণ শিল্পের ওপর । বহু মানুষ রুটি রোজগারের ধান্দায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে কাজ করতে গিয়েছিলেন, লক ডাউনের জেরে তারা আজ কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরছেন। জানেন না পরে আবার কাজ ফিরে পাবেন কিনা ! যারা দিনমজুর দৈনিক কাজের বিনিময়ে বেতন পান তারাও কাজ হারানোর আশঙ্কায় দিন গুনছেন ।দেশের প্রায় ৪.৯কোটি চুক্তি ভিত্তিক শ্রমিক ভুগছেন কাজ হারানোর ভয়ে ।

পর্যটন শিল্পের উপরেও দারুণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলেছে লক ডাউন । এমত পরিস্থিতিতে যখন এই সমস্ত অসহায় শ্রমিকের পাশে দেশের রাষ্ট্রনায়কের দাঁড়ানোর কথা ….কিভাবে এদের আশ্বস্ত করা যায় সেদিকে আলোকপাত না করে তিনি দেশকে তথা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত জনগনকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন ঘন্টা বাজানো, মোমবাতি জ্বালানো ইত্যাদি নানা রকম অদ্ভুত কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে । যা কখনই কাম্য নয়। সাধারণ মানুষ আসল উদ্দেশ্য বুঝতে না পেরে কুসংস্কারের বশবর্তী হয়ে ভাবছেন কাঁসর ঘন্টা বাজিয়ে, মোমবাতি জ্বালিয়ে হয়তো করোনা ভাইরাসকে তাড়ানো যাবে ।

কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন বাম সংগঠন গুলি সংকটকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য লড়াই করে যাচ্ছেন । স্যানিটাইজার, মাস্ক বিলি করা থেকে শুরু করে যারা বয়স্ক নাগরিক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা যাদের সবথেকে বেশি, এই লক ডাউনের কারণে বাইরে বেরোতে পারছেন না তাদের বাড়ি গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র সরবরাহ করছেন । তাদের মানবিক মুখ দেখা যাচ্ছে এই নিদারুণ সময়ে ।

ভারতবর্ষ ঐক্যবদ্ধ দেশ , বিপদে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করতে পারে তা প্রমাণ করার জন্য ঘর অন্ধকার করে মোমবাতি জ্বালানোর দরকার নেই । তার চেয়ে অনেক বেশি দরকার কাজ খোয়ানো অসহায় মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।