রাজ্য

বামফ্রন্ট সরকারের অপারেশন বর্গা, —তুলে দেওয়ার আইনী স্বীকৃতি দিতে চলেছে তৃনমূল সরকার ।।


চৈতালী নন্দী:চিন্তন নিউজ:১১ই মার্চ:–বামফ্রন্ট সরকারের সময়ে সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছিল ভূমি সংস্কার । ব‍্যাপক বর্গা নথিভূক্তির ফলে পাল্টে গিয়েছিল গ্রামীণ চিত্র। কৃষকদের জমিকেন্দ্রীক অধিকারবোধ গ্রামীণ জীবনে সামাজিক সাম‍্য আনতে সক্ষম হয়েছিল।এই ভূমিসংস্কারই বামফ্রন্টকে ২০০৬ সালে বিশ্বব‍্যাঙ্ক’ ওয়ার্ল্ড ডেভেলপমেন্ট রিপোর্টে প্রশংসিত করে । কিন্তু এখন বর্গা উচ্ছেদকে আইনি স্বীকৃতি দেবার পথে রাজ‍্যের তৃণমূল সরকার।

ক্ষমতায় আসার পর থেকে ওয়ার্কশপের নাম করে বর্গা ও পাট্টার জমি থেকে কৃষকদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে ও তাকে আইনি বৈধতাদানের চেষ্টা চালাচ্ছে। গত ২৯শে ফেব্রুয়ারি হাওড়া জেলা প্রশাসনের ভূমি সংস্কার দপ্তরের একটি ওয়ার্কশপে আলোচনার বিষয়বস্তু ছিল, ‘ওয়ার্কশপ অন মিউটেশন,কনভারসান এন্ড বর্গা ডিলিশন। বামফ্রন্টের আমলে অনেক আন্দোলন ও পরিশ্রমের মধ‍্যে দিয়ে কৃষকদের হাতে জমির পাট্টা ও বর্গাদার শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়ছিল।

ঘটনা প্রকাশ‍্যে আসতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। ভূমিসংস্কার দপ্তরের কাছে লিখিত অভিযোগের সিদ্ধান্ত নেয় ‘পশ্চিমবঙ্গ সেটেলমেন্ট কর্মচারী সমিতি’। ঘটনা হোল ২০১২ সালের পর থেকেই ব‍্যাপক হারে বর্গাদার ও পাট্টাদারদের উচ্ছেদ করে সেই জমি রিয়েল এস্টেট, বিভিন্ন বেসরকারি কলেজের হাতে তুলে দেওয়া হয়।প্রশাসনের একটি সূত্রের খবর গত আট বছরে মেদিনীপুর ,মূর্শিদাবাদ, হুগলি, বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম সহ বহু জেলার পাট্টার জমি থেকে পাট্টা কে আইনগত ভাবে রদ করা হয়েছে । যার নাম ‘পাট্টা এ্যানালমেন্ট’। আর বর্গার জমিকে আইনী প্রক্রিয়া মারফত স্বীকৃতি কে বলা হচ্ছে ‘বর্গা ডিলিশন’।

বাম আমলে বর্গাদার দের রক্ষাকবচ হিসেবে ক্ষতিপূরণের ব‍্যাবস্থা রাখা হয়েছিল। কিন্তু এক্ষেত্রে আগে জমি দখল করে সেই রক্ষাকবচ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে কৃষকদের।কেড়ে নেওয়া হচ্ছে জমির অধিকার। বিভিন্ন মেলা ও ওয়ার্কশপের নাম দিয়ে চলছে এই জমি হাতানোর প্রক্রিয়া। বাম আমলে কৃষকদের স্বীকৃতি দেওয়ার, বিশেষ করে তফশিলি, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু কৃষকরা যেভাবে তাদের জমির অধিকার পেয়েছিলেন তা এক কথায় নজিরবিহীন। এখন সেই অধিকার হারানোর পথে এরাজ‍্যের কৃষকরা।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।