সুপর্ণা রায়, চিন্তন নিউজ, ২ আগস্ট: সামনে বাঙালির সব থেকে বড় উৎসব দূর্গাপূজো। কিন্তু সত্যি সত্যি কি বাঙালির মনে আনন্দের ফোয়ারা ছুটছে? লক্ষ লক্ষ ছেলে-মেয়ে বেকার, কিন্তু তারা শিক্ষিত, তবু তাদের হাতে কাজ নেই। সরকারী চাকরি! সে তো দূর অস্ত। এই কয়েক বছরে কোন কলকারখানাই হল না তো চাকরি আসবে কোথা থেকে? কিন্তু এই দুই স্বৈরাচারী সরকার কি বুঝবে এদের দুঃখ কষ্টের কথা? কে বড় বড় লাভজনক পুজোকমিটিগুলি দখল করবে, কে কতো টাকার বখরা পাবে তাই নিয়ে দিনরাত চলছে তৃনমূল-বিজেপির ঝগড়া। মমতা – মোদী দুটি সরকাররেরই বেকারদের নিয়ে ভাবার সময় নেই।
তাই এবার যুবরা এক নতুন পন্থা নিয়েছে প্রতিবাদ করার। যেমন চাকরি পরীক্ষার আগে ফর্ম পূরণ করা হয় তেমন করে নকল ফর্ম পূরণ করছে তারপর সেটা নিয়ে তারা নবান্ন অভিযান করবে। তাদের এই পদযাত্র শুরু হবে আগামী ১৩ ই সেপ্টেম্বর থেকে।
ডি.ওয়াই.এফ.আই. এই ফর্ম পূরণের আয়োজন করেছে হরিষ চ্যাটার্জী স্ট্রীটে, মমতা ব্যানার্জীর বাড়ীর অদূরে। সেখানে সকাল থেকেই ফর্ম পূরণ করা চলছিল, যদিও নকল। ঘটনাটা মানুষের মনে গভীর ছাপ ফেলেছে। যখন এই ফর্ম পূরণ করা চলছিল তখন সেখান দিয়ে এক বৃদ্ধ যাচ্ছিলেন। তিনি হুগলীর বাসিন্দা। তিনি এসে দাঁড়ান এবং একটা নকল ফর্ম চান। সবাই অবাক, কেন চাইছেন? চাকরি কি তিনি চান? প্রশ্ন করতে ভদ্রলোক বলে উঠলেন, “না আমার জন্য না আমার ছেলের জন্য।। সেও এই প্রতিবাদে সামিল হবে। তোমরা ফর্ম দাও, সে ঠিক পূরণ করে দিয়ে যাবে।” তখন হতবাক ডি.ওয়াই.এফ.আই. কর্মীরা খানিকটা হতবাক হয়ে বলল, “আপনার এখান থেকে নেওয়ার প্রয়োজন নেই। আমরা হুগলীতেও এই কর্মসূচি করব। তখন আপনার ছেলেকে পাঠিয়ে দেবেন।”
এই যদি কলকাতার অভিজ্ঞতা হয়, তো মেদিনীপুরের অবস্থা অন্য রকম। শিবির শুরু হওয়ার আগে দিদিমনির বখাটে ভাইয়ের দল বাধা দেওয়ার চেষ্টা করে। অশান্তি শুরু করার তাল করতেই শিবিরে আসা যুবক -যুবতীরা একটু কড়া চোখে তাকাতে ভাইয়ের দল ভয় পেয়ে পালিয়ে যায়। তার পাশের গড়বেতা, সেখানে হকি স্টিক, ডান্ডা নিয়ে হাজির এবিভিপি। ওখানকার এক কলেজের পাশে ক্যাম্প করা হয়েছিল। সেখানে সব বাধা উড়িয়ে দিয়ে নকল ফর্ম পূরণ করা হয়।
রাজ্যের প্রতিটি জেলায় প্রতিটি কলেজের পাশে চাকরী প্রার্থীদের নকল ফর্ম পূরণ করা চলছে। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র ও মীনাক্ষী মুখার্জী দুজনেই বলেন, “আমরা যা আশা করেছিলাম তার থেকে অনেক বেশী সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। যুবক-যুবতীরা তাদের আর্তি নথিভুক্ত করতে চাইছেন। এমনকি তাদের অভিভাবকরা পর্যন্ত এগিয়ে এসে পরামর্শ দিচ্ছেন। এখনও পর্যন্ত ৫০ হাজার ফর্ম পূরণ হয়ে গেছে।”
তারা আরও বলেন, “আগামী ১২/১৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে এই সংখ্যা কয়েক লক্ষে পৌছাবে। তারপর হবে নবান্ন অভিযান। শারদীয়ার আগে মমতা ব্যানার্জীকে রাজ্যের যুবকদের লিখিত যন্ত্রনা পৌছে দেওয়া হবে। ‘দিদি কে বলো’ এবার আর ফোনে নয়, দিদি দেখবেন রাজ্যের যুবক যুবতীরা পায়ে হেঁটেই দিদির বিলাসবহুল নবান্ন, যা নাকি বাম আমলে তৈরী; আর দিদি গলা ফাটান ৩৪ বছরে কিচ্ছু হয়নি, সেই নবান্নর চৌদ্দতলা কেঁপে উঠবে।”