কলমের খোঁচা

কনকলতা বড়ুয়া


বিশেষ প্রতিবেদন সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৫ই আগস্ট:– আজ ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস। ২০০ বছরের বর্বর ব্রিটিশ শাসনের হাত থেকে ভারতবর্ষ বহু স্বাধীনতা সংগ্রামীর রক্ত ঝরিয়ে ভারতের জনগনের জন্য এসেছিল স্বাধীনতা। ১৯৪৭ সালের ১৫ ই অগাষ্ট উঠেছিল লাল টুকটুকে স্বাধীনতার সূর্য। কিন্তু এই স্বাধীনতা আনতে নারীদের ভূমিকা ছিল অনস্বিকার্য। ইতিহাসের পাতায় লেখা আছে তাঁদের সাহসিকতার কথা। দেশের স্বাধীনতার জন্য তাঁরা একবার ও ভাবেন নি তাঁদের সংসার ,সন্তান বা বাবা-মা ও সহোদর সহোদারার কথা। সমাজ কে উপেক্ষা করে দেশমাতৃকার সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন।

মাতঙ্গিনী হাজরাই প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলনের মর্যাদা পান। মহাত্মা গান্ধীর অনুপ্রেরনাতে তিনি ভারতের অসহোযোগ আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একদম প্রথম সারিতে থেকে তিনি এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।ব্রিটিশ বিরোধী এই আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে বৃটিশ পুলিশের গুলিতে প্রান হারান।।মাতঙ্গিনী হাজরা অবশ্য ই ভারতবাসীর কাছে নমস্য । কিন্তু আর এক বীরাঙ্গনার নাম করতেই হয় আর তিনি হলেন কনকলতা বড়ুয়া।তিনি ততটা আলোচিত না হলেও তিনি মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে প্রথম শহীদ বলে সুত্রের খবর।

১৯৪২ সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর মাতঙ্গিনী হাজরা শহীদ হয়েছিলেন আর তার ঠিক নয় দিন আগে কনকলতা বড়ুয়া শহীদ হন। ” ভারত ছাড়” আন্দোলনের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে তিনি একটি ছোট দল গড়েছিলেন।ব্রিটিশ ভারতের বিভিন্ন অফিসে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলার জন্য তাঁর ঐ দুঃসাহসী মহিলা দল নিয়ে বেরিয়েছিলেন। কিন্তু বৃটিশ পুলিশের গুলিতে তাঁর জীবন শেষ হয়ে যায়।১৯৪২ সালে ২২ শে ডিসেম্বর অসমে এক কৃষক পরিবারে কনকলতার জন্ম। ছোটবয়সেই বাবাকে হারান।দেশ সেবার লক্ষে জ্যোতিপ্রসাদ আগরওয়াল এর নেতৃত্বে দেশসেবার লক্ষে ” মৃত্যুবাহিনী” তে যোগ দেন। ১৭ বছর বয়সে জাতীয় পতাকা হাতে নিয়ে বিশ্বনাথে থানা ঘেরাওএর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল বৃটিশ পতাকা নামিয়ে ভারতের জাতীয় পতাকা তোলা।পুলিশের রাইফেলের সামনেও অকুতোভয় ছিলেন কিশোরী কনকলতা।পুলিশ গুলি করে কনকলতাকে এবং তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়লেও হাত থেকে জাতীয় পতাকা ছাড়েন নি। ততক্ষনে তাঁর মহিলা বাহিনীর সঙ্গী মুকুন্দ কাইতি জাতীয় পতাকা তুলে নেন এবং তিনিও জাতীয় পতাকা তোলার চেষ্টা করেন । তাঁকেও বৃটিশ পুলিশ গুলি করে। কনকলতার এই আত্মবলিদান ঘরের মেয়েদের মনে আগুন জ্বেলে দিল। তাঁরা নিশ্চিত হলেন আর ঘর থেকে নয় বৃটিশদের চোখে চোখ রেখে যুদ্ধ করতে হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।