কলমের খোঁচা

কমিউনিস্ট নেত্রী  ইলা মিত্রের প্রয়াণ দিবসে বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি


তিলক ঘোষঃ-চিন্তন নিউজঃ-১৩/১০/২০২২:- ১৯৩৮ সালে ভারতের একটি জনপ্রিয় পত্রিকায় ৪৭ টি ট্রফি সহ ১৫ বছরের একজন কিশোরীর ছবি দিয়ে বোঝানো হয়েছিল ১৯৪০ সালে জাপানে অনুষ্ঠিত সামার অলিম্পিকে বাংলা থেকে এই কিশোরী এ্যাথলেটিকসে অংশগ্রহণ করতে চলেছে।

কিন্তু বাধ সাধলো বিশ্ব মানবতার শত্রু হিটলার ও তার নেতৃত্বে কায়েম হওয়া ফ্যাসিবাদের অক্ষশক্তির সমর্থক দেশগুলো। বাতিল হলো ১৯৪০ এর জাপানের সামার অলিম্পিক।

ঐ কিশোরীর আর অলিম্পিকে অংশগ্রহণ করা হলো। অধরা থেকে গেল ঐ কিশোরীর অলিম্পিকে পদক পাওয়ার স্বপ্ন। বাংলা তথা ভারতীয় এ্যাথলেটিকসের জগত বঞ্চিত হলো নতুন ইতিহাস রচনায়।

ভারতের স্বাধীনতার প্রাক মুহূর্তে কৃষকদের তে-ভাগা আন্দোলন এপার বাংলা ও ওপার বাংলায় ছড়িয়ে পড়েছিল। সেদিন ঐ কিশোরী নাচোলের তে-ভাগা আন্দোলনের নেত্রী হয়ে গ্রেফতার হওয়ার পর সদ্য ভারতকে দ্বিখণ্ডিত করে গড়ে ওঠা স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রের জেলে বন্দি হয়ে ধর্ষিতা হয়েছিলেন।

১৯৫১ সালে রাজশাহী কোর্টে বিচারপতির সামনে তিনি তাঁর উপর চলা পুলিশদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের যে বর্ণণা তিনি দিয়েছিলেন তা ভারতীয় উপমহাদেশে বিচারালয়ে দাঁড়িয়ে প্রথম ধর্ষিতা নারীর জবানবন্দি বলে স্বীকৃত।

তাঁর উপর হওয়া শারীরিক নির্যাতন ও ধর্ষণের  খবর ওপার বাংলা থেকে এপার বাংলার গ্রাম শহরে ছড়িয়ে পড়লো।

কবি গোলাম কুদ্দুস লিখলেন কালজয়ী কবিতার মাধ্যমে ১৯৩৮ সালের ৪৭ টি ট্রফি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা কিশোরীর নতুন নামকরণ করলেন ‘স্ট্যালিন নন্দিনী’ কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় ১৯৩৮ সালের ঐ  কিশোরী আর ১৯৫১ সালে নাচোলের রাণীমা, তে-ভাগা আন্দোলনের কিংবদন্তি নেত্রীর সাথে হাসপাতালে দেখা করে তাকে উদ্দেশ্য করে তাঁর বিখ্যাত কবিতায় তিনি তাঁকে পারুল বোন আখ্যায় ভূষিত করলেন।

আজ ঐ কিশোরী, ঐ তে-ভাগা আন্দোলনের নেত্রী, পরবর্তী জীবনে কমিউনিস্ট নেত্রী কমরেড ইলা মিত্রের প্রয়াণ দিবস।
বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।