জেলা

জলপাইগুড়ি জেলার বিশেষ বিশেষ খবর


চিন্তন নিউজ:২২শে ডিসেম্বর:– দীপশুভ্র সান্যাল:– সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে অক্সিজেনের অভাবে প্রাণ গেল পরিবেশ প্রেমীর।

গত কয়েকদিন ধরে কোভিড আক্রান্ত ছিলেন ছিল কিডনির সমস্যাও। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতাল থেকে রেফার করা হয় শিলিগুড়ি মেডিকেল কলেজে আর সেখানে নিয়ে যাবার পথেই সরকারি অ্যাম্বুলেন্স অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হ’ল জলপাইগুড়ি শহরের তরুণ পরিবেশ প্রেমী অনির্বাণ ব্যানার্জীর। পরিবার সূত্রের খবর জলপাইগুড়ি কোভিড হাসপাতাল থেকে ১০২ আম্বুলেন্স এর ওঠার সময় বারবার চালককে অনির্বাণ নিজে জিজ্ঞাসা করেছিলেন অক্সিজেন সিলিন্ডারে অক্সিজেন ঠিকঠাক আছে তো, কোন অসুবিধা হবে নাতো? প্রয়োজনে চালককে একটি ব্যাকআপ সিলিন্ডার নিয়ে নেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন তিনি। কিন্তু অ্যাম্বুলেন্স চালক জানান সিলিন্ডারে যে পরিমাণ অক্সিজেন রয়েছে তাতে শিলিগুড়ি সহজেই পৌঁছে দেওয়া যাবে কোন অসুবিধা ছাড়াই। অথচ জলপাইগুড়ি থেকে রওনা হওয়ার পর ফাটাপুকুর পের হয়ে ভুটকি পৌঁছেই অক্সিজেনের অভাব বোধ করে অনির্বাণ। তার কিছুক্ষন আগে অক্সিজেন কম আসছে দেখে চালক একটি গ্যারেজে রেঞ্জ এর সাহায্যে অক্সিজেন সিলিন্ডারের নব কিছুটা হালকা করেন বলে জানা যায়। অক্সিজেনের অভাবে রোগীর মৃত্যুর ঘটনার পরে অ্যাম্বুলেন্স চালক অ্যাম্বুলেন্স ছেড়ে চম্পট দেয় বলে অভিযোগ। পরে পরিবারের লোকজনের তৎপরতায় জলপাইগুড়ি শহরের একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার অ্যাম্বুলেন্সে অনির্বাণের দেহ নিয়ে আসা হয় কোভিড হসপিটালে। পান্ডাপাড়া সার্ফের মোড় এলাকার ছেলে অনির্বাণ এর আকস্মিক মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে আসে এলাকায়। পরিবারের লোকেরা অক্সিজেনের অভাবে অনির্বাণ এর মৃত্যু হয়েছে এই অভিযোগ জানালেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। পেশায় ফটোগ্রাফার অনির্বাণ ব্যানার্জি বিভিন্ন পরিবেশ প্রেমী সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন। মৃতের স্ত্রী অভিযোগ করেন রবিবার কোভিড আক্রান্ত হয়ে জলপাইগুড়ি কোভিড হাপাতালে ভর্তি হওয়ার পর কিডনি সংক্রান্ত অন্যান্য অসুবিধা থাকায় সোমবার তার স্বামীর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন হয়। যেগুলি ব্যবস্থা জলপাইগুড়ি কভিড হাসপাতালে ছিল না, তাই চিকিৎসকরা তাকে রেফার করেন উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজে। সেখানে যাওয়ার পথে জলপাইগুড়ি ছাড়ার ২৫ মিনিটের মাথায় অক্সিজেনের অভাব বোধ করেন তার স্বামী অনির্বাণ ব্যানার্জী। আর সেখানেই অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যু হয় তার ।
অক্সিজেনের অভাবে কোভিড আক্রান্ত রোগীর মৃত্যুর ঘটনা ঘিরে জলপাইগুড়ি হাসপাতালে পরিকাঠামো ও সরকারি পরিষেবা মান নিয়ে আরও একবার বড় প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ল জলপাইগুড়ি স্বাস্থ্য বিভাগ। কভিড আক্রান্ত রোগীদের মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে যাবার জন্য ব্যবহৃত সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে কেন পরিমাণমতো অক্সিজেন থাকবে না? তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন স্বাস্থ্যকর্মীরাও। এ প্রসঙ্গে সুপার গায়ারাম নস্করের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাননি। সিএমওএইচ ডক্টর অসীম হালদার এ প্রসঙ্গে জানান এখনো কোনো অভিযোগ জমা পড়েনি অভিযোগ জমা পড়লে সে বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে।

শুভাশীষ সরকার জানিয়েছেন:– —- সিপিআই(এম) জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির ২৫ তম সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানিয়ে, অস্বাভাবিক দ্রব্যমূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে, কৃষকের ফসলের ন্যায্য দামের দাবিতে বুধবার জলপাইগুড়ি শহরের ২০, ২১, ২২, ২৩ নং ওয়ার্ডের মাসকলাইবাড়ি, পশ্চিম অরবিন্দনগর, বামন পাড়া, বিলপাড়া এলাকায় প্রচার সভা করে সিপিআই(এম) কর্মীরা। সভা থেকে কলকাতা কর্পোরেশন নির্বাচনে শাসকদলের ভোট লুটের বিরুদ্ধে তীব্র ধিক্কার জানানো হয়। এদিন বিভিন্ন সভায় বক্তব্য রাখেন পার্টিনেতা তপন গাঙ্গুলী, শুভাশিস সরকার, শমিক ভৌমিক, শুভম ঠাকুর, সুজিত চৌধুরী প্রমূখ।


আগামী ২৫- ২৬ শে ডিসেম্বর জেলার ধূপগুড়ির শহরে তেভাগা ঐতিহ্য নগর এবং বাবুলাল গোপ মঞ্চে পার্টির ২৫ তম জলপাইগুড়ি জেলা সম্মেলন হবে । সম্মেলন উপলক্ষে ইতিমধ্যেই সেজে উঠেছে ধুপগুড়ি শহর। এদিনের সভা থেকে সম্মেলন সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন পার্টির জলপাইগুড়ি সদর পশ্চিম এরিয়া কমিটির সম্পাদক তপন গাঙ্গুলী ।

ভুয়ো জব কার্ড হোল্ডারের নামে কাজ না করেই টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগে সরব গ্রামবাসীরা।।
দীপ শুভ্র সান্যাল জলপাইগুড়ি :: কলেজ পড়ুয়ার নামে ১০০ দিনের যবকার্ড নম্বর, আবার অবিবাহিতা নামেও ১০০ দিনের যবকার্ড নম্বর। এখানেই শেষ নয় স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা, তার স্বামীর নামেও যবকার্ড নম্বর ইশু করা হয়েছে। এই রকম একটি দুটি নয় একাধিক যবকার্ড নম্বরের হদিশ মিলেছে। শুনতে অবাক লাগলেও এই ঘটনা জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের গড়ালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার ১৭/১৮২, এবং ১৭/১৮৩ নম্বর বুথে।ঘটনা সুত্রের খবর ২০১৩ সালের পরে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে গড়ালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েতে নতুন করে মোট ৫০০ টি যবকার্ড দেওয়া কথা ঘোষনা করা হয়। সেই অনুসারে বিভিন্ন বুথের পঞ্চায়েত সদস্যরা নাম জমা করতে থাকেন যবকার্ড নম্বরের জন্য। এপরে গ্রামপঞ্চায়েত এলাকার মোটি ১৫ টি বুথে ২৫ থেকে ৫০ টি যবকার্ড নম্বর সহ ভাগ করে ভাগ করে দেওয়া হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে এলাকার ফোদর পাড়া এলাকায় ১৭/১৮২, এবং ১৭/১৮৩ নম্বর বুথে নিদৃষ্ট সংখ্যক যবকার্ডের বাইরেও আর অতিরিক্ত প্রায় ৫০ টি বেশী যবকার্ড নম্বরের হদিস পাওয়া গিয়েছে। আর সরকারি প্রকল্পের অনিয়মের পেছনে শাসক দলের স্থানীয় পঞ্চায়েত অথবা গ্রামপঞ্চায়েত অফিসের কর্মীদের হাত থাকতে পারে বলে অভিযোগ তুলেছেন খোদ শাসক দলের স্থানীয় বুথ সভাপতি নবি উলহক। তিনি অভিযোগ করে বলেন সম্প্রতি এলাকার বেশ কয়েকজন এসে ১০০ দিনের কাজের দাবি করে। কিন্তু তাদের হাতে কোন যবকার্ড ছিল না। তারা জানায় তাদের নামেও যবকার্ড নম্বর ইশু হয়েছে এবং তারা দ্রুত যবকার্ড পাবেন বলে দাবি করেন। এই বিষয়টি নজরে আসার পরেও এমজিএনআরই জিএ র ওয়াবসাইডে গিয়ে সার্চ করতে তাঁদের বুথের একধিক ব্যাক্তির নামে যবকার্ড নম্বর আছে বলে দেখতে পায় । যাদের নামে যবকার্ড নম্বর ইশু হয়েছে তাদের অনেকেই অবিবাহিত, কলেজ পড়ুয়া। আবার চাকরিজীবী পরিবারের নামেও নম্বর ইশু হয়েছে। পুর বিষয়টি বেআইনি।

এদিকে এই ঘটনা সামনে আসার পরেই নড়েচড়ে বসেছে গ্রামপঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ। গড়ালবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত উপপ্রধান শাহাজাহান আলম জানিয়েছেন কোথাও একটা অনিয়মের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে। অনিয়ম ঠিক কোন জায়গায় সেই বিষয়টি খুঁজে বেড়করার জন্য তদন্ত করা হবে।

যদিও স্থানীয় বুথের পঞ্চায়েত সদস্য মদন রায় জানিয়েছেন,তাঁদের বুথে ২৭ টি নতুন যবকার্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকি এই ধরনের যবকার্ড নম্বর কিভাবে ইশু হলো সেই বিষয়টি টার অজানা। কারণ নতুন যবকার্ডের জন্য পঞ্চায়েত অফিসে ৫ সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছিল। তাদের স্বাক্ষর ছাড়া কারো নামে যবকার্ড বা যবকার্ডের নম্বর ইশু হবে না। কোথায় গলতি সেটা তদন্ত সাপেক্ষ বিষয়।

এ বিষয়ে ওই এলাকায় প্রবীণ পার্টি নেতৃত্ব সারা ভারত ক্ষেতমজুর ইউনিয়নের নেতা সমিজ উদ্দিন আহমেদ জানান দীর্ঘদিন ধরে সদর ব্লকের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে তারা সরব হয়েছেন তারা। বারংবার বিডিও অফিসে ডেপুটেশনও দেওয়া হয়েছে বহু মানুষ কাজ পাওয়ার যোগ্য মানুষ কাজ পাচ্ছেন না। তাদের লিস্ট করে বিডিও অফিসে জমা দেওয়া হলেও দূর-দূরান্তের বুথে তাদের নামে কাজের অ্যালটমেন্ট দেখানো হয়েছে কিন্তু তাদের কাছে কাজ করতে যাওয়ার খবর পৌঁছনো হয়নি। ১০০ দিনের কাজের দুর্নীতি নিয়ে আমরা রাস্তায় আছি ভুয়ো জব কার্ডের নামে যারা টাকা তুলে নিচ্ছেন তাদের বিরুদ্ধে আরও বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।