জেলা

জলপাইগুড়ি জেলার আজকের খবর


মুখ্যমন্ত্রীর একতরফা ঘোষণা করা ৩০ টাকা মজুরি বৃদ্ধিকে মানছে না চা শ্রমিকরা ।

দীপশুভ্র সান্যাল: চিন্তন নিউজ:১৮ জুন :– শনিবার চা বাগান শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী দ্রুত চালু করা, কয়েক পুরুষ ধরে বসবাস করা জমিতে নিজস্ব পাট্টা দেওয়াসহ বিভিন্ন দাবিতে জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের জয়পুর চা বাগানের গেটে বিক্ষোভ সভা করেন চা- শ্রমিকরা। সিআইটিইউ অনুমোদিত চা বাগান মজদুর ইউনিয়নের ডাকে এই বিক্ষোভ সভা সংগঠিত হয় । সভায় বক্তব্য রাখেন কল্যানী এক্কা, অবিনাশ বাকলা, আনন্দ দাস, ঝন্টু ওঁরাও প্রমুখ চা শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
উত্তরবঙ্গ সফরে এসে সম্পূর্ণ স্বৈরতান্ত্রিক পথে চলতি ত্রিপাক্ষিক আলোচনাকে এবং সরকারের শ্রম দপ্তরের উদ্যোগকে বানচাল করে মুখ্যমন্ত্রী মাত্র ৩০ টাকা অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি বাড়ানোর কথা ঘোষনা করেছেন। এরই প্রতিবাদে উত্তরবঙ্গ জুড়ে সমস্ত চা বাগানে বিক্ষোভের ডাক দেয় চা শ্রমিকদের বিভিন্ন ইউনিয়নের যৌথমঞ্চ জয়েন্ট ফোরাম। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় চা শ্রমিকদের অপমান ও অবহেলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন চা শ্রমিকদের বিভিন্ন ইউনিয়নের যৌথমঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের আহ্বায়ক জিয়াউল আলম। মুখ্যমন্ত্রীর ১৫ শতাংশ অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি বৃদ্ধির ঘোষনার পরই শ্রমদপ্তর এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে। যার বিরুদ্ধে ক্ষোভ ছড়ায় বাগানে বাগানে। বিক্ষোভের ডাক দেয় জয়েন্ট ফোরাম। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা বাগানে এই কর্মসূচি হয়।
চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ ও দ্রুত তা চালুর দাবিতে দীর্ঘদিন ধরেই আন্দোলনে রয়েছে জয়েন্ট ফোরাম। শ্রমিকদের লাগাতার আন্দোলনের ফলেই ন্যূনতম মজুরী নির্ধারণ কমিটি তৈরি হয়। ইতিমধ্যেই ১৮ টি মিটিং এর মধ্যে দিয়ে ন্যূনতম মজুরী নির্ধারিত হয়েছে। ১ লা জানুয়ারি ২০২২ থেকে ন্যূনতম মজুরী কার্যকর হবার কথা সরকার ঘোষনা করলেও তা এখনো চালু হয়নি।
মালিকপক্ষ সরকারি মিটিং- এ ন্যূনতম মজুরী বিষয়ে সহমত হলেও পরবর্তীতে জানিয়েছিল ১৮ টাকার বেশি তাদের পক্ষে মজুরী বাড়ানো সম্ভব নয়। এদিকে আলোচনা চলাকালীন মাত্র ৩০ টাকা অন্তর্বর্তীকালীন মজুরি বৃদ্ধির মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষনা চা শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরী করে। তিনি কেন হটাৎ এই ঘোষনা করতে গেলেন, এদিন প্রশ্ন তুলেছেন জয়পুর চা বাগানের শ্রমিকরা।
মালিকদের চাপের কাছে নতিস্বীকার না করে উত্তরবঙ্গের সারে চার লক্ষ চা – শ্রমিকদের হিম্মতের উপর ভর করে ন্যূনতম মজুরীর অর্থ ঘোষনা করুন মুখ্যমন্ত্রী। কেরালা,তামিলনাড়ু,কর্নাটক ন্যূনতম মজুরি ঘোষনা করতে পারলে পশ্চিমবঙ্গ পারবে না কেন, প্রশ্ন ছুড়েছেন জিয়াউল আলম। মুখ্যমন্ত্রীর মুখেই ন্যূনতম মজুরির ঘোষনা শুনতে চায় চা শ্রমিকরা, জানিয়েছেন তিনি।
মালিকপক্ষ ও সরকারের মনোভাব শ্রমিকশ্রেণীর পক্ষে অপমানকর। ফলে দ্রুত ন্যূনতম মজুরী নিয়ে নির্দিষ্ট ফয়সলা না হলে চা-শ্রমিকরাও বড় লড়াই শুরু করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন ।

বর্ষার শুরুতেই জলপাইগুড়ি ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে ভেঙে পড়ল গার্ডওয়াল।।

উন্নয়ন আর রাস্তায় নেই ড্রেনে গড়াগড়ি খাচ্ছে। বর্ষার শুরুতেই গার্ড ওয়াল ভেঙ্গে সোজা ড্রেনে। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি পৌরসভার ১৩নং ওয়ার্ডের ১০নং গলির মোড়ে। মাত্র ৩ বছর আগে তৈরি হওয়া গার্ডওয়াল কিভাবে ভেঙ্গে পরে পরল তাই নিয়ে আলোচনা চলছে এলাকাবাসীর মুখে মুখে। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ কাজের মান খুব নিম্নমানের থাকায় এই ঘটনা ঘটেছে। মাত্র তিন বছরের মধ্যেই একটা গার্ড ওয়াল পরে গেল। যার বাড়ির সামনের ঘটনা সেই বাদল ঘোষ মহাশয় ভীষণ অসুস্থ। চোখে কম দেখেন ।তার বাড়ির থেকে বের হওয়ার কালভার্টও বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে যেকোন সময়ে অঘটন ঘটতে পারে। যার সময়ে এই গার্ড ওয়াল তৈরি হয়েছিল তিনি বর্তমান তৃণমূল কাউন্সিল লিপিকা সরকারের স্বামী বিশ্বজিৎ সরকার। ১০ নং গলি ১৩নং ওয়ার্ডের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা দিয়েই ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দারা মূলত বউবাজারের দিকে যাতায়াত করেন। ডাঙ্গাপাড়া এলাকা থেকে থেকে জলপাইগুড়ি শহরে আসার অন্যতম রাস্তা এটি। গার্ডওয়াল ভেঙে যাওয়ার ফলে রাস্তা বাঁশ দিয়ে আটকে রাখা হয়েছে ওই এলাকা যার ফলে গাড়ি চলাচল বিঘ্নিত হচ্ছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরার সামনে কেউ কিছু না বলতে চাইলেও এলাকাবাসীদের অভিযোগ গত পৌরসভা নির্বাচনে তৃণমূলের বিপুল প্রতিদিন বিপুল অর্থ ব্যায়ের দিকে ইঙ্গিত করে তাদের বক্তব্য যদি গার্ড ওয়াল রাস্তা ঠিকঠাক হবে তো নির্বাচনের আগে রোজ পিকনিক নগদ টাকা জোগাড় হবে কোথা থেকে। পৌরসভাকে দেউলিয়া করে দিয়েছে এরা । এত নিম্নমানের কাজ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দানা বাঁধছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় ঠিকাদার বললেন এখনও তো কাজের টাকাও পাওয়া গেল না। কোটি কোটি টাকা বাকি পরে আছে পৌরসভাতে । ফলে নতুন কাজের টেন্ডার ঝোলালেও সময় পার হয়ে গেলেও কোন ঠিকাদার পৌরসভার কাজ করতে চাইছেন না।ওই ঠিকাদার আরো বললেন কাজের মানের কথা বলছেন কাজ শুরুর আগেই যে পরিমাণ টাকা কাটমানি দিতে হয় ঐ গার্ড ওয়াল যে তিন বছর টিকেছে তাই ভাল। বাকি ওয়াল গুলো দেখবেন এভাবেই পরে যাবে। আমরা দুটো পয়সা লাভের জন্যই কষ্ট করে ঠিকাদারির কাজ করি কোন কাজ সব স্তরে কাটমানি দিয়ে গেলে কাজ ধরে সিডিউল অনুযায়ী করলে বাড়ি ঘর বিক্রি করে দেওয়া ছাড়া আমাদের আর কোন উপায় থাকবেনা কাট মানি দিলে কাজের মান খারাপ হবেই ।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।