দেশ

প্রদীপের নীচেই অন্ধকার


সুপর্ণা রায়: চিন্তন নিউজ:১৩নভেম্বর,২০২৩:– মাত্র দু- মাস পরেই জমকালো উদ্বোধন অযোধ্যার বহু বর্নিত রামমন্দির এর । সরজু নদীর দুই তীর ঘিরে জ্বলে মাটির প্রদীপ । এবারের দীপোৎসবে প্রায় বাইশ লক্ষ মাটির প্রদীপ জ্বলছে তেলের সাহায্যে । গত সাত বছর ধরেই চলছে এই দীপোৎসব । গত বছর যত প্রদীপ জ্বলেছিল এ বছর এ তার থেকে প্রায় তেইশ হাজার প্রদীপ বেশী জ্বলেছে আর রবিবার ই এই দীপোৎসব ” গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে” নাম তুলেছে ।

কিন্তু কথায় আছে ” প্রদীপের নিচেই অন্ধকার “— এখানেও সেই এক ই ঘটনা । অযোধ্যার যেখানে বহুলচর্চিত রাম মন্দির হচ্ছে সেখানকার অধিকাংশ মানুষ প্রায় না খেয়ে আধপেটা হয়ে থাকে । আর এই অঞ্চল টি যোগী আদিত্যনাথের খাসতালুক । এখানকার না খেতে পাওয়া বাচ্চা গুলো সরজু নদীর তীরে রাখা প্রদীপ গুলো থেকে তেল ঢেলে নিচ্ছে নিজেদের বাড়ীর রান্না করা ও প্রদীপ জ্বালানো র জন্য । ওরা বাড়ী থেকে পাত্র নিয়ে আসে আর তারপর একের পর এক প্রদীপ থেকে তেল ঐ পাত্রে ভরতে থাকে । শুধু যে নিভে যাওয়া প্রদীপ থেকে তেল ঢেলে নেয় এমনটা নয় জ্বলন্ত প্রদীপ কাৎ করে তেল ঢেলে ঢেলে ভর্তি করে নিজেদের নিয়ে আসা পাত্র । প্রায় ত্রিশ পঁয়ত্রিশ জন ছেলেমেয়ে এইভাবে বাড়ীর জন্য তেল সংগ্রহ করে । যখন পাত্র ভরে যায় তখন তারা দৌড় দেয় বাড়ীর দিকে । ঠিক যে সময় ” গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে” নাম উঠছে এই দীপোৎসবের– চতুর্দিকে ” জয় শ্রী রাম” ধ্বনিতে কেঁপে উঠছে অঞ্চল ঠিক সেই সময় এই চরম দারিদ্র্যের ছবি সামনে এসেছে বলে খবরে প্রকাশ ।

কোন শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ চান না যে একদল মানুষ নিজেদের নাম কেনার জন্য জনগণের করের টাকা খরচ করে গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠাবে আর দেশের অধিকাংশ মানুষ প্রায় না খেতে পেয়ে অপুষ্টি তে ভুগে ভুগে মরবে । দীপাবলি সেদিন ই হবে যেদিন প্রতিটা বাড়ীতে আলো জ্বলবে — প্রতিটা বাড়ীর মানুষ পেট পুরে খেতে পারবে । সেদিন ই হবে আসল উৎসব।

     

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।