কাকলি চ্যাটার্জী :-চিন্তন নিউজ:-১৩ই আগস্ট:- কাশ্মীরি ছাত্রদের জন্য পাকিস্তানের স্কলারশিপ বাতিল করে দিল ভারত সরকার। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান প্রতি বছর ১৬০০ কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের জন্য যে স্কলারশিপ ঘোষণা করেছিলেন তা বাতিল করল নয়াদিল্লি। পাকিস্তান অধিকৃত মেডিকেল কলেজগুলো থেকে প্রদত্ত ডিগ্ৰীগুলোকেও ভারত স্বীকৃতি দিতে নারাজ। মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া এক নোটিশে একথা জানিয়েছে। এমসিআইএর ঘোষণাটি জম্মু ও কাশ্মীরের হাইকোর্ট এমসিআই ও পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে এই অঞ্চলগুলোতে পাঠরত শিক্ষার্থীদের অনুশীলন চালানোর অনুমতি দিতে পারে কিনা তা দেখার জন্য বলে।
গত ডিসেম্বরে এক কাশ্মীরি তরুণী কোর্টে অ্যাপিল করেন যে পিওকে তে মেডিসিন নিয়ে পড়াশোনা করেন বলে বিদেশে পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষায় বসার অনুমতি পান নি। ফেব্রুয়ারিতে পাক সরকার যখন কাশ্মীরি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি বাড়ানোর ঘোষণা করেন তখনই দিল্লি তার আপত্তি জানায়। পাকিস্তান বছরের পর বছর ধরে কাশ্মীরিদের যে সস্তায় শিক্ষাদান করে আসছিল তার বেশিরভাগই নাকি বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাদের পরামর্শে বলে দিল্লির ধারণা। এমন অনেক উদাহরণ আছে যেখানে দেখা গেছে কাশ্মীরিরা পড়াশোনার জন্য পাক অধিকৃত অঞ্চলগুলোতে গিয়ে সন্ত্রাসশিবিরে প্রশিক্ষণ নিয়ে ফিরেছে বলে কেন্দ্রের অভিমত।
পড়াশোনায় অবিচল থেকে পাঠ শেষ করে ফেরার পর অনেকের মধ্যে মৌলবাদী ধ্যান ধারণা বৃদ্ধি পায় বলে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী এক কর্মী জানান। জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে লাদাখ ভারতের অবিচ্ছেদ্য অংশ। পাকিস্তান এই অঞ্চলের কিছু অংশ বলপূর্বক দখল করে আছে। সেইজন্য পাকিস্তানের কোনো চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান জম্মু ও কাশ্মীর দখল করেছে এবং লাদাখের ইন্ডিয়ান মেডিকেল কাউন্সিল আইন ১৯৫৬ এর অধীনে স্বীকৃতি প্রয়োজন।পিওজেকেএল-এর কোনো মেডিকেল কলেজকে এ জাতীয় অনুমতি দেয়া হয় নি।সুতরাং অবৈধভাবে দখল করে থাকা অঞ্চলগুলোর মধ্যে মেডিকেল কলেজগুলো থেকে প্রাপ্ত যোগ্যতা কোনো ব্যক্তিকে ভারতে আধুনিক চিকিৎসা প্র্যাকটিস এর জন্য ভারতীয় মেডিকেল কাউন্সিল আইন ১৯৫৬ এর অধীনে রেজিস্ট্রেশন পাবে না বলে এমসিআই জানিয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীরকে পৃথক রাজ্যের মর্যাদা থেকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করার পর এক বছর অতিক্রান্ত ।উন্নয়নের গালভরা প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তব জীবনে দারিদ্র্য আরও বেড়েছে, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করতে ব্যর্থ হয়েছে দিল্লি। দীর্ঘদিন নেট পরিষেবা, যোগাযোগ ব্যবস্থা অবরুদ্ধ থাকার ফলে পর্যটনশিল্প, ব্যবসা বাণিজ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত। লকডাউনের জন্য অবস্থা আরও করুণ হয়েছে। তার ওপর দিল্লির সরকারের একের পর এক কাশ্মীরিদের শিকল পরিয়ে দেওয়ার ফলে আগামীদিনে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ বৃদ্ধি করবে ধারণা রাজনীতিবিদদের একাংশের।