রাজনৈতিক রাজ্য

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার একান্ত সাক্ষাত কি শুধুমাত্র সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন!!


চৈতালী নন্দী: চিন্তন নিউজ:১৩ই জানুয়ারি:–প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মমতার একান্ত সাক্ষাত কি শুধুমাত্র সাংবিধানিক দায়িত্ব পালন….উঠে এসেছে অনেক প্রশ্নচিহ্ন।।
সাতসকাল থেকে  ‘গো ব‍্যাক মোদী’ প্রতিবাদে উত্তাল কলকাতা। বামপন্থী ছাত্র আন্দোলনের এই রূপ এর আগে দেখেনি এই শহর। এনআরসি এবং সিএএ র বিরুদ্ধে এ এক নজিরবিহীন ছাত্র আন্দোলন। পরিস্থিতি এমনই ছিল যে, স্থলপথ বর্জন করে জলপথ ধরতে হয় মোদীকে। সারা শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল ছাত্র বিক্ষোভ। এ অবস্থায় রাজভবনে মোদির সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার ছিল মুখ‍্যমন্ত্রীর।কিন্তু শুধুমাত্র সাংবিধানিক বাধ‍্যবাধকতাই কি এই বৈঠকের কারণ?

এদিন মুখ‍্যমন্ত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন ,রাজ‍্যের আর্থিক দাবীদাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়েছে।বলেন রাজ‍্যের পাওনা ৩১ হাজার কোটি টাকার দাবী তিনি প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছেন।যদিও ২০১৯সালে সেপ্টেম্বরে সেই হিসেব ছিল ১৩০০০হাজার কোটি টাকা। যদিও সিপিআইএম পলিটব্যুরো সদস্য প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম বলেন, উচ্চপদস্থ আধিকারিক ,রাজ‍্যের অর্থমন্ত্রী কে সঙ্গে না নিয়ে এই ধরনের আলোচনা হয়না।

সিপিআইএম তথা বাম ট্রেড‌ইউনিয়ন ও ফেডারেশনের সফল বন্ধের পর হঠাৎ করে হিংসার অজুহাতে তিনি দিল্লির এনআরসি বিরোধী বৈঠকে না গিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় সন্দেহ দানা বাঁধে। প্রথমদিকে তিনি ই এই বিরোধী ঐক‍্যের ডাক দিয়েছিলেন। সিদ্ধান্ত হঠাৎ ১৮০ডিগ্রী ঘুরে গেলো কেন?

প্রকৃতপক্ষে মুসলিম ভোটব‍্যাঙ্কের বাধ‍্যবাধকতার কারণে তিনি এনআরসি বিরোধী আন্দোলন থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সরে যেতে পারছেন না। কারণ নাগরিকত্বের নয়া বিধিতে মুসলিমদের উদ্বেগই বেড়েছে সবচেয়ে বেশী। ঐ ৩০% ভোটব‍্যাঙ্কই তার বড় ভরসা। তবে রাতারাতি জাতীয় আন্দোলনের মঞ্চ ছেড়ে মোদির সঙ্গে বৈঠক তাকে বেকায়দায় ফেলে দিয়েছে। সাধারণ মানুষ সব বুঝতে পারছে।’শ‍্যামও রাখি কুল ও রাখি’ দশা তার। সিবিআই, ইডির নজরে থাকা নেতাদের বাঁচানোই এখানে তার অগ্রাধিকার। নিজেকে বাঁচাতে এখানে তাকে মোদির সঙ্গে সমঝোতায় যেতেই হচ্ছে।পরিস্থিতি এমন যে, যারা তাঁর সঙ্গে এনআরসি বিরোধী মিছিলে হাঁটলেন ,তিনি তাদের সঙ্গেই তঞ্চকতা করছেন।বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। মহম্মদ সেলিমের কটাক্ষ,দিদি মোদী দুজনেই যাত্রাপালার ভালো অভিনেতা।

এসবের পরেও একটা পরিবর্তন কারোর দৃষ্টি এড়ায়নি যে ,বৈঠক থেকে বেড়োনোর পর থেকেই দিদির মেজাজের পরিবর্তন। তারপর থেকেই দিদির থমথমে মুখই বলে দিচ্ছে, বৈঠকের বিষয়বস্তু দিদির পছন্দ হয়নি । মানুষ সবই বুঝছে..চিরকাল কাউকে প্রতারণা করা যায়না। একদিকে সিএএ অপরদিকে সংখ্যালঘু ভোট, এই দু’নৌকায় পা দিয়ে চলার মরীয়া প্রচেষ্টা তাঁর সঙ্গে থাকা জনতাও আস্তে আস্তে বুঝতে পারছে।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।