কলমের খোঁচা

‘কত অজানারে’ – ‘বাওবাব’ গাছ


রত্না সর, বিশেষ প্রতিবেদন: চিন্তন নিউজ: ০৫/১২/২০২৩:- পৃথিবীতে বাওবাব নামে এক ধরনের অদ্ভুত বিস্ময়কর গাছ আছে,যেটা প্রধানত আফ্রিকায় দেখা যায়। এটি এমন একটি গাছ যাকে পরিচর্যা করলে মানুষকে খাদ্য, পানীয়, বাসস্থান এবং অসুস্থতা থেকে মুক্তি দিতে পারে। গাছের প্রতিটি অংশই মানুষের সরাসরি কাজে আসে।
একটা পরিণত বাওবাব গাছের কান্ডের ব্যাস দশ(10) মিটারের বেশি। এর ফলগুলিও অত্যন্ত উপকারী। ফলের বাইরের দিকে শক্ত আবরণ থাকে। ফলটা ভাঙলে ভেতরে পাউরুটির মত নরম শাঁস পাওয়া যায় । স্বাদ টক-মিষ্টি । আফ্রিকার মানুষ এই ফল খেতে ভালবাসে । বাওবাব ফল উচ্চমাত্রায় কার্বোহাইডেরেট ,ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য ভিটামিনে ভরপুর। এই ফল দিনে তিনবার খেলে আর ক্ষুধাবোধ থাকে না। ফল খাওয়ার পর তার বীজ থেকে উন্নত মানের রান্নার তেল তৈরি হয়। এই ফলের রস জ্বর ও ব্যাথার ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়। এই গাছের পাতা সবজি হিসাবে খুব উপাদেয়। স্যুপে এই গাছের কাঁচা কচি পাতাও খাওয়া যায়। আবার কাঁচা পাতা বেটে চাটনিও খাওয়া যায়।

বাওবাব গাছের পুরোনো পাতার থেকে কাগজ, শক্ত কাপড় ও দড়ি তৈরি হয়। এই গাছ প্রাকৃতিক রিজার্ভার হিসাবে কাজ করে ।বৃষ্টির সময় গাছ শাখাগুলো র সাহায্যে জল শোষণ করে রাখে।প্রয়োজনে মানুষ গাছের কান্ড থেকে সেই জল বার করে ব্যবহার করে। খরা প্রবন আফ্রিকায় এই গাছ জীবনদাতার ভূমিকা পালন করে। বাওবাব গাছের ভিতরে দীর্ঘদিন খাবার সংরক্ষণ করে রাখা যায়। এই গাছ অগ্নি নির্বাপকে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

একটা পরিণত বাওবাব গাছে প্রায় চল্লিশ জন মানুষ অনায়াসে থাকতে পারে।আফ্রিকায় এই গাছের ভিতরে বার ও দোকানও চলে।
বর্তমানে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এই জীবনদায়ী গাছের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।এই জীবনদায়ী গাছের রক্ষণাবেক্ষণ মানুষের কল্যানেই প্রয়োজন। এই গাছ যাতে পৃথিবীর অন্যান্য খরা প্রবন অঞ্চলেও চাষ করা যায়, সেই ব্যাপারে গুরুত্ব সহকারে গবেষণা প্রয়োজন।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।