জেলা

হুগলি জেলার সংবাদঃ-


চিন্তন নিউজঃ দেবারতি বাসুলীঃ- ২৬ বছরের বাংলার মেয়ে মৌমিতা বসু বৈদ্যবাটি থেকে ছুটে গিয়েছিল দিল্লির ঐতিহাসিক কৃষক আন্দোলনে, ছিলেন “গঙ্গা বাঁচাও” আন্দোলনের শরিক হিসেবে হৃষিকেশেও। মৃত্যুর কাছে হার মেনেছিলেন বটে,তবে মৃত্যুর প্রায় সাত মাস পরে ‘জয়ী’ হয়েছে প্রতিবাদী কণ্ঠ !! ভিন্ রাজ্যে গিয়ে কৃষক আন্দোলনে শামিল হওয়া বছর ছাব্বিশের মৌমিতা বসুর লড়াই বৃথা যায়নি ….. ১১ এপ্রিল কৃষক আন্দোলনের শামিল হতে টিকরি সীমানার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতি (এপিডিআর)-র এই কর্মী। তবে বেশি দিন সহযোদ্ধাদের পাশে দাঁড়াতে পারেননি। ১৯ এপ্রিল আন্দোলনের মাঝপথেই কোভিডে আক্রান্ত হয়ে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন মৌমিতা। তার কিছু দিনের মধ্যেই অকালেই ঝরে যায় তরতাজা প্রাণ। তবে উৎপলের মতে, মেয়ের মৃত্যু বৃথা যায়নি। তাঁর কথায়,’‘আমার মেয়ে কৃষক আন্দোলনের শহিদ। এটা আমার গর্ব। মেয়ের মৃত্যু আমাদের উদ্বেলিত করেছিল।’মৌমিতার জন্ম ১৯৯৫ সালে আসানসোলে। সেখানেই দ্বিতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা। বাবার কাজের সুবাদে সেখানেই থাকতেন তাঁরা। পরে বৈদ্যবাটিতেও পড়াশোনা করেছেন। কম বয়স থেকেই বার বার প্রতিবাদীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছে বৈদ্যবাটির এনসি ব্যানার্জি রোডের বাসিন্দা মৌমিতাকে। বাবা উৎপল বসুও মানবাধিকার সংগঠনের কর্মী। মাধ্যমিক পরীক্ষায় পর থেকেই বাবার সঙ্গেই নানা আন্দোলনের কর্মসূচিতে থাকতেন মেয়ে। এপিডিআর শ্রীরামপুর শাখার সক্রিয় কর্মী হিসাবে নাগরিক অধিকারের দাবিতে বিভিন্ন মঞ্চে আওয়াজ তুলেছেন ….

আন্দোলনে শামিল হতে গিয়ে ভিন রাজ্যেও পা বাড়িয়েছিলেন মৌমিতা। এপিডিআর সূত্রে খবর,‘গঙ্গা বাঁচাও’ আন্দোলনের সময়ে মৌমিতা চলে গিয়েছিলেন হৃষিকেশে। চলতি বছরেও দিল্লি থেকে টিকরি সীমানার দিকে রওনা হয়েছিলেন আন্দোলনকারী কৃষকদের সঙ্গে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আওয়াজ তুলতে। তবে সে আন্দোলনের ‘জয়’ দেখে যেতে পারলেন না মৌমিতা। সন্তান হারানোর কষ্ট থাকলেও তা মেনে নিয়েছেন উৎপল। কারণ,তাঁর মেয়ে ‘যুদ্ধের ময়দানে’ জীবন দিয়েছেন। উৎপল বলেন,‘‘সন্তান হারানোর কষ্ট রয়েছে। কিন্তু মেয়ের জন্য আমি গর্বিত। কারণ আমার মেয়ে মানুষের জন্য লড়াই করতে গিয়ে জীবন দিয়েছে।’’জনবিরোধী কৃষিবিল বা কালা কৃষি আইন বাতিল,মোদি সরকার পিছু হেঁটেছে। তাই গতকাল বৈঁচীতে মিছিল। কৃষক জনদরদী সকলকে জানায় সংগ্রামী অভিনন্দন। দেশের সংগ্রামী কৃষকদের কুর্নিশ জানিয়ে সিপিআই(এম) ডানলপ বাঁশবাড়িয়া চন্দ্রাহাটি এরিয়ার কমিটি।

সুদীপ্ত সরকারঃ-সংযুক্ত কিষাণ মোর্চার লড়াইকে অভিনন্দন জানিয়ে জাঙ্গীপাড়া থানা কৃষক সমিতি ও খেতমজুর ইউনিয়ন মিছিল করে।বোড়হল মোড় থেকে শুরু করে বাহিরগড় বাস স্ট্যান্ড পর্যন্ত বিশাল মিছিল শেষে সংক্ষিপ্ত পথসভা হয়।পথসভায় বক্তব্য রাখেন কমরেড পবিত্র সিংহরায়,কমরেড তপন রায়।সভাপতিত্ব করেন কমরেড সুদীপ্ত সরকার। উপস্থিত ছিলেন কমরেড হরপ্রসাদ সিংহরায়, কমরেড কাশীনাথ হাজরা,কমরেড বিরাজ সিংহরায় ও দুটি সংগঠনের নেতৃত্ববৃন্দ।

জয়দেব ঘোষঃ- ৩টি কৃষি বিল প্রত্যাহার উপলক্ষে দেশের আপামর কৃষক সমাজকে অভিনন্দন জানিয়ে এবং স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ের সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য আন্দোলনের জয় কে স্মরণ করে, সিপিআইএম, হুগলী এরিয়া কমিটির উদ্যোগে বিজয় মিছিল। সিপিআই(এম) চন্ডীতলা ২ এরিয়া কমিটি এলাকায় অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে এবং দানবীয় কৃষি আইন বাতিলের ঘোষণা দেশের স্বৈরাচারী সরকার অবশেষে করল —- সেই আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে গতকাল চণ্ডীতলার পায়রাগাছায় পথ সভা অনুষ্ঠিত হলো, এবং গরলগাছা অঞ্চলে আন্দোলনকে সংহতি জানিয়ে মশাল মিছিল সংগঠিত হয়। মিছিলের শেষে বক্তব্য রাখা হয় এবং দীর্ঘ প্রায় এক বছর ধরে আন্দোলন চলাকালীন যে সকল কৃষক প্রাণ হারিয়েছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নীরবতা পালন করা হয়।


মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।